শান্তিনিকেতন দুর্নীতি ইস্যুতে, চার দিন পর মুখ খুলে আরও বিতর্কের জন্মদিল প্রেসক্লাব!

 শান্তিনিকেতন দুর্নীতি ইস্যুতে, চার দিন পর মুখ খুলে আরও বিতর্কের জন্মদিল প্রেসক্লাব!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

কোলকাতা অফিস, ১২ জুলাই: শুক্রবার অর্থাৎ ১২ জুলাই দৈনিক সংবাদে প্রকাশিত প্রতিবেদনেই উল্লেখ করা হয়েছিল যে, ‘শান্তিনিকেতন দূর্নীতি কান্ডের মৌচাকে ঢিল পড়তেই প্বার্শপ্রতিক্রিয়া শুরু, নাম জড়ালো প্রেসক্লাবের’। এই প্রতিবেদন প্রকাশের কয়েকঘন্টার মধ্যেই ঝোলা থেকে বেড়াল বেড়িয়ে পড়লো। আগরতলা প্রেসক্লাবের সভাপতি জয়ন্ত ভট্টাচার্য এবং প্রেসক্লাব পরিচালন কমিটির সদস্যরা সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন। ওই সাংবাদিক সম্মেলনে জয়ন্ত বাবুরা নানা সাফাই দিয়েছেন। তিনি বার বার একটা কথাই বলার চেষ্টা করেছেন যে, শান্তিনিকেতনের কর্ণধার মলয় পিটের কাছ থেকে অর্থ (ঘুষ) নিয়েছি বা প্রেসক্লাব পরিচালন কমিটির কোনও সদস্য অর্থ নিয়েছে, সেটা প্রমান করতে পারলে তিনি সহ গোটা প্রেসক্লাব পরিচালন কমিটি পদত্যাগ করবে। এমনটাই দাবি করেছেন জয়ন্ত বাবু। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, জয়ন্ত বাবু নিজেও একজন বরিষ্ঠ এবং অভিজ্ঞ সাংবাদিক। দীর্ঘ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সাথে যুক্ত আছেন। সমাজে নানা বিষয়ে তাঁর অভিজ্ঞতা সম্পর্কে কোনও প্রশ্ন নেই। এমন একজন অভিজ্ঞ মানুষ যখন বলেন, অর্থ ( ঘুষ) নিয়েছি প্রমান করতে পারলে পদত্যাগ করবো। তখন তো দু’চার কথা বলতেই হয় রাজ্যবাসীর স্বার্থে। এ সমাজে যে কোনো বে আইনি আর্থিক লেনদেন কি রসিদ দিয়ে হয়? এই সহজ কথাটি কি জয়ন্ত বাবুরা জানেন না?

আগরতলা প্রেসক্লাবের নামে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খুলে বহিঃরাজ্যের এক ব্যাক্তি ( মলয় পিট) আপনি সহ আরও কয়েকজনকে অ্যাডমিন বানিয়ে ত্রিপুরার সাংবাদিক ও সংবাদ মাধ্যমকে গালিগালাজ করার মতো দুঃসাহস করেছে। আগরতলা প্রেসক্লাবের ঐতিহ্য ও গড়িমা কালিমালিপ্ত করেছে, তার চাইতেও বড় কথা সাংঘাতিক জালিয়াতি এবং অপরাধ সংগঠিত করেছে। এটা জানার পরও আপনাদের চারদিন লাগলো মুখ খুলতে? চারদিন পর সাংবাদিক সম্মেলন করেও জোর দিয়ে একবারও বলতে পারলেন না, এটা ভয়ঙ্কর ধরনের জালিয়াতি! এটা ভয়ঙ্কর অপরাধ! চারদিন পরও আপনারা থানায় নূন্যতম একটা জিডি এন্ট্রি পর্যন্ত করতে পারলেন না? মামলা তো দূরের কথা। সাংবাদিক সম্মেলনে আপনারা বললেন, আইনি পরামর্শ নিচ্ছেন। থানায় একটা জিডি এন্ট্রি করতে আগরতলা প্রেসক্লাব পরিচালন কমিটির আইনি পরামর্শ নিতে হয়! এটা ভাবতেই অবাক লাগছে। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন, মলয় পিটের প্রতি আপনাদের এই দুর্বলতা কেন? এরপর তো আগরতলা প্রেসক্লাবের নামে, এবং প্রেসক্লাবের নামকে জড়িয়ে যে কেউ যা খুশি করতে পারবে। আপনাদের কিছুই করার থাকবে না! আগরতলা প্রেসক্লাবের মান,মর্যাদা ও ঐতিহ্য রক্ষার দায়িত্ব কিন্তু আমাদের সকলের।

বর্তমান ডিজিটাল যুগে অনেক কিছু গোপন করার চেষ্টা করলেও, গোপন করা যায়না। কোনও হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে কাউকে যুক্ত করা হলে, সাথে সাথে যুক্ত হওয়া ব্যাক্তির মোবাইলে নোটিফিকেশন চলে যায়। কোন একজন ব্যাক্তি,যার সাথে আগরতলা প্রেসক্লাবের অনেক দূর পর্যন্ত কোনও সম্পর্ক নেই বা থাকার কথা নয়, তেমন একজন ব্যক্তি আগরতলা প্রেসক্লাবের নামে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খুলে আপনাদের এডমিন হিসাবে যুক্ত করে রাজ্যের সাংবাদিক ও সংবাদ মাধ্যমকে ব্যক্তি স্বার্থে গালিগালাজ করছে! যা খুশি তা বলছে! অথচ আপনারা কিছুই জানেন না? এটা রাজ্যবাসীকে বিশ্বাস করতে হবে? শুধু তাই নয়, এত বড় জালিয়াতি ও অপরাধের পরও আপনি এবং আপনারা ওই জালিয়াতি ও অপরাধের বিরুদ্ধে একটা টু শব্ধও না করে, উল্টো খবরের প্রতিবাদ করেছেন। তাহলে তো ধরে নিতে হয়, আগরতলা প্রেসক্লাবের নাম ব্যবহার করে যে বা যারা এই জালিয়াতি ও অপরাধ করেছে, তারা ঠিকই করেছে। আপনারাই সেই অধিকার এবং সাহস দিয়েছেন। এত কিছুর পরও জয়ন্তবাবু আপনি এবং আরও দুই একজন তিনদিন পর বৃহস্পতিবার রাতে ওই বিতর্কিত গ্রুপ থেকে বেড়িয়ে এসেছেন। রন্টি নামে একজন আপনাকে এবং অভিষেক নামে একজনকে ওই গ্রুপ থেকে রিমুভ করেছে। এর থেকে কি প্রমান হয়? আসলে এই গ্রুপের প্রকৃত জনক কে বা কারা?? মলয় পিট না অন্য কেউ? জনক যে বা যারাই হোক না কেন, একাধিক প্রশ্ন কিন্তু থেকেই যায়। আমরাও সেই সব প্রশ্নের জবাব খোঁজার চেষ্টা করছি।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.