শাসক আশ্রিত দুষ্কৃতীর হাতে রক্তাক্ত দৈনিকের সাংবাদিক!!
অনলাইন প্রতিনিধি :-বাম আমলের ২৫ বছরের ইতিহাসকেও পেছনে ফেলে দিল বর্তমান বিজেপি জোট সরকার।প্রতিদিন রাজ্যের কোনও না কোনও স্থানে কর্মরত সাংবাদিকদের রক্ত ঝরানো চলছেই শাসক দল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের দ্বারা। যদিও এই আমলে নেতাদের আশ্রয়ে থাকা দুষ্কৃতীরা দল থেকে বহিষ্কার হয় না বা তাদেরকে পুলিশে ধরারও বিধান নেই।গোটা রাজ্যে শাসক আশ্রিত দুষ্কৃতী ও মাফিয়াদের তাণ্ডব চলছে প্রকাশ্যে।দুষ্কৃতী ও মাফিয়াদের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না সংবাদমাধ্যমও। সোমবার রাতে নিজের পাড়ায় একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে নৈশভোজে যোগদান করতে গিয়ে রক্তাক্ত হলেন দৈনিক সংবাদের খোয়াই প্রতিনিধি। দুষ্কৃতীরা শাসকদল আশ্রিত বলেই অভিযোগ।রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে পুলিশকে ফ্রি হ্যান্ড দিয়েছেন বলে দাবি করেন, অথচ দুই দু’জন পুলিশ ইনস্পেক্টরের সামনে এক দুষ্কৃতী পুলিশকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ, রক্তাক্ত সাংবাদিককে পুনরায় প্রাণনাশের হুমকি প্রকাশ্যে দিতে থাকলেও, দুই পুলিশ অফিসার দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে শুধু রং তামাশা দেখলেন।
সোমবার রাতে বিপিসি পাড়ায় একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে নৈশভোজে যোগ দিতে গিয়েছিলেন দৈনিক সংবাদের সাংবাদিক আশীষ চক্রবর্তী।সামাজিক অনুষ্ঠানে যখন খাওয়াদাওয়া চলছিল ঠিক সেই সময় এক দুষ্কৃতী অহেতুক দৈনিক সংবাদকে গালিগালাজ করতে শুরু করে।তার ভাষায় মণ্ডল সভাপতি দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা কামাচ্ছেন।এই খবর দৈনিক সংবাদ করছে না।এ ধরনের কথোপকথন বৃদ্ধি পেতে পেতে একসময় এই দুমতী চিৎকার করতে করতে
দৈনিক সংবাদকে গালিগালাজ শুরু করলে সাংবাদিক আশীষ চক্রবর্তী এর তীব্র প্রতিবাদ করেন। আর এই প্রতিবাদ করতে গেলেই ওই দুষ্কৃতী সাংবাদিকের গলা টিপে ধরে এবং তাকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়। পরবর্তীতে সে একটি ইট নিয়ে সাংবাদিককে মারতে ঝাঁপিয়ে পড়ে।এই ঘটনার সময় বেশ কয়েকজন এগিয়ে এলে ওই দুষ্কৃতী ইট ফেলে সাংবাদিকের নাকে মুখে কিল ঘুষি মারতে থাকে।ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই রক্তাক্ত সাংবাদিক মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।ঘটনার খবর পেয়ে ছুটে আসেন সুভাষপার্ক ফাঁড়ি থানার ওসি রঞ্জিত দাস এবং খোয়াই থানার সাব- ইনস্পেক্টর অজিত দেববর্মা।দুই পুলিশ অফিসার এবং একডজন নিরাপত্তা রক্ষীদের সামনে ওই দুষ্কৃতী পুলিশকে গালিগালাজ এবং সাংবাদিককে প্রাণনাশের হুমকি দিতে দিতে সামাজিক মাধ্যমে (মোবাইলে) লাইভ করতে শুরু করে।পুলিশ একসময় তার মোবাইলটি ছিনিয়ে নিলে সে আরও উত্তেজিত হয়ে ওঠে। এত নিরাপত্তারক্ষীর মাঝখানে ওই দুষ্কৃতী পুলিশের হাত থেকে তার মোবাইলটি পুনরায় ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। রাতে খোয়াই থানার ওসি সুবীর মালাকার ঘটনার খবর পেয়ে অফিসটিলা ঘোষপাড়া এলাকায় গিয়ে ওই দুষ্কৃতীর বাড়ি খুঁজলেও, এলাকার মানুষজন পুলিশকে সহায়তা করেনি।
দৈনিক সংবাদের সাংবাদিককে রক্তাক্ত করা এবং পুলিশের সামনে প্রাণনাশের হুমকিজনিত ঘটনা নিয়ে মঙ্গলবার রাতে ওই দুষ্কৃতীর নামধাম সহ থানায় মামলা করেছেন সাংবাদিক।উল্লেখ্য, ওই দুষ্কৃতী আগে খোয়াই বিধানসভা কেন্দ্রের ২২নং বুথের বিজেপি দলের বুথ সভাপতি ছিলেন। বিভিন্ন ধরনের অপরাধজনিত ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে দল তাকে বুথ সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেয়। দল তাকে বুথ সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দিলেও, তার অবৈধ কার্যকলাপ থেমে নেই। গোটা এলাকায় মাফিয়ারাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এতে জনমনেও ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হচ্ছে শাসক দলের প্রতি। শুধু তাই নয়, দৈনিক সংবাদের সাংবাদিক আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় বিভিন্ন মহল থেকে তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ ব্যক্ত করা হয়েছে।