শিক্ষক-কর্মচারী ইস্যুতে ব্যাকফুটে সরকার!!

এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যের শিক্ষক-কর্মচারী ইস্যুতে দিন দিন ব্যাকফুটে চলে যাচ্ছে বিজেপি সরকার।টানা সাত বছরের বিজেপি সরকারের শাসনকালে একের পর এক শিক্ষক-কর্মচারী স্বার্থবিরোধী সিদ্ধান্ত গ্রহণের কারণে সরকার থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। যার প্রভাব পড়েছে রাজ্য প্রশাসনের গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে মহাকরণ পর্যন্ত। সর্বত্রই চলছে এক অদ্ভূত অচলাবস্থা।মুখ থুবড়ে পড়েছে যাবতীয় প্রশাসনিক কাজ।সেটা পঞ্চায়েতে নবজাতকের নাম তোলা হোক বা মৃত ব্যক্তির নাম ফ্যামিলি রেজিস্ট্রার থেকে বাদ দেওয়া হোক-সব ক্ষেত্রে প্রশাসনিক অচলাবস্থায় নাজেহাল হতে হচ্ছে মানুষকে।মহকুমাশাসকের অফিসে পিআরটিসি সার্টিফিকেট, এসটি, এসসি, ওবিসি সার্টিফিকেট, সার্ভাইবেল সার্টিফিকেট হোক বা ভোটার তালিকায় নাম তোলা সর্বত্রই প্রশাসনিক অচলাবস্থায় নাজেহাল হতে হচ্ছে মানুষকে।জমির নামজারি করতে জুতায় সুখতলি ক্ষয় হয়ে গেলেও মিলছে না নামজারির তারিখ।খোদ মহাকরণেও চলছে একই অবস্থা।যে ফাইল একদিনে অনুমোদিত হয়ে যাবার কথা- তা মাসের পর মাস পড়ে থাকছে।রাজ্যব্যাপী গুঞ্জন চলছে রাজ্য সরকারের অস্তিত্ব আদৌ রয়েছে কি না- তা নিয়ে।কেন না,সাম্প্রতিক রাজ্যের বন্যায় রাজ্যবাসী সরকার ও প্রশাসনের তেমন অস্তিত্ব দেখতে পাননি। বন্যার সময় একের পর এক ব্যর্থতা ফুটে উঠেছে রাজ্য সরকার ও রাজ্য প্রশাসনের বেহাল, নগ্ন বেআব্রু অবস্থা। গুঞ্জন চলছে রাজ্য সরকারের প্রশাসন চালাতে ব্যর্থতার পাশাপাশি শিক্ষক-কর্মচারীদের লাগামহীন আর্থিক বঞ্চনার প্রভাব স্পষ্টভাবে ফুটে উঠে। বন্যার সময় প্রশাসনের খামখেয়ালিপনা ও দায়সারা ভূমিকার মধ্য দিয়ে।
এদিকে, প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, রাজ্যের নিয়মিত শিক্ষক-কর্মচারীরা চলতি বছরের জানুয়ারী মাস’ থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের শিক্ষক-কর্মচারী থেকে ২৫ শতাংশ ডিএ কম পাচ্ছেন। বস্তুত ডিএ-র ব্যবধান ২৫ শতাংশ মনে হলেও কেন্দ্রীয় সপ্তম বেতন কমিশন চালু না থাকায় ডিএ-র প্রকৃত ব্যবধান হবে ৩৫-৫০ শতাংশ। ২০১৮ সালের বিজেপির দেওয়া ভিশন ডকুমেন্টের প্রতিশ্রুতি ও ঘোষণা অনুযায়ী সাত বছরেও রাজ্যের শিক্ষক কর্মচারীদের জন্য সরাসরি সপ্তম বেতন কমিশন কার্যকরী না করায় সার্বিকভাবে রাজ্যের শিক্ষক-কর্মচারীরা প্রতি মাসে গড়ে ২৫ হাজার টাকা থেকে এক লক্ষ টাকা বেতন কম পাচ্ছেন।তাছাড়া কেন্দ্রীয় সরকারের শিক্ষক কর্মচারীদের গ্র্যাচুইটি পাচ্ছেন ২০ লক্ষ টাকা। রাজ্যের শিক্ষক-কর্মচারীরা পাচ্ছেন ১০ হাজার টাকা। হাউজরেন্ট অ্যালাউন্স, যেখানে কেন্দ্রীয় শিক্ষক-কর্মচারীরা পাচ্ছেন মাসে গড়ে দশ হাজার টাকা থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকা। রাজ্যের শিক্ষক-কর্মচারীরা পাচ্ছেন সর্বোচ্চ তিন হাজার টাকা।এলটিসি সহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা কেন্দ্রীয় সরকারের শিক্ষক-কর্মচারী থেকে রাজ্যের শিক্ষক-কর্মচারীরা অর্ধেকেরও কম পাচ্ছেন।
তাছাড়াও রাজ্যে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর বামফ্রন্ট শাসনকালে চালু থাকা ১০ বছর চাকরির পর অনিয়মিত কর্মচারীদের নিয়মিতকরণ প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেওয়ায় হাজার হাজার বিভিন্ন স্তরের অনিয়মিত কর্মচারীদের জীবন ও ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায় ডুবে যায়।সারা জীবন চাকরি করেও অবসরে গিয়ে অনিয়মিত কর্মচারীরা ন্যূনতম এক টাকা পাচ্ছেন না। বিজেপি সরকারের এ ধরনের কর্মচারী স্বার্থবিরোধী সিদ্ধান্তে কর্মচারী মহলে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে।
পাশাপাশি বামফ্রন্ট শাসনকালে বিভিন্ন স্তরের অনিয়মিত শিক্ষক-কর্মচারীদের পাশাপাশি সর্বশিক্ষার শিক্ষক-কর্মচারী, এনএইচএমে কর্মরত কর্মচারী, রেগায় কর্মরত সহ বিভিন্ন প্রকল্পের কর্মচারীরা বছরে দুবার নিয়মিত কর্মচারীদের মতো ডিএর সমতুল টাকা ও জুলাই মাসে ইনক্রিমেন্টের সমতুল টাকা সহ হাউজরেন্ট, মেডিকেল অ্যালাউন্স, সিএর টাকা পেলেও বিজেপি সরকারের সময়ে সংশ্লিষ্ট কর্মচারীরা সেসব সুযোগ সুবিধা থেকে কার্যত বঞ্চিত হচ্ছেন। শিক্ষক-কর্মচারীদের চাপের মুখে সাত বছরে হাতেগোনা দু-একবার নামকাওয়াস্তে বেতন বাড়িয়েই দায়িত্ব শেষ করছে বিজেপি সরকার। এদিকে, বিজেপি ক্ষমতায় এসে পুরানো পেনশন প্রকল্প এবং ডাই-ইন-হারনেস প্রকল্প পরিবর্তন করে নতুন প্রকল্প চালু করায় এক্ষেত্রেও শিক্ষক-কর্মচারীদের কার্যত আর্থিক, সামাজিক ও পারিবারিক সুবিধা পাওয়ার যে সুযোগ ছিল তা থেকে শিক্ষক-কর্মচারীদের বঞ্চিত করেছে।একের পর এক শিক্ষক-কর্মচারী মহলে সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে।নামকাওয়াস্তে স্থির বেতনে কিছু সরাসরি সরকারী চাকরি হলেও সরকারী দপ্তরগুলিতে লাগামহীনভাবে আউটসোর্সিং (বেসরকারী সংস্থার মাধ্যমে) প্রথায় চাকরি দেওয়ায় বেকার মহলেও তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। কেন না,আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে চাকরি পাওয়া বেকারদের ভবিষ্যৎ বলে কিছুই থাকছে না।

Dainik Digital

Recent Posts

হার্ভের বিরুদ্ধে ৮ জনে খেলে, এক ম্যাচ আগেই নকআউটে ব্লাডমাউথ।।

অনলাইন প্রতিনিধি :-হার্ভেকে গত ম্যাচে হারানোর পরই এ গ্রুপ থেকে সমীরণ চক্রবর্তী স্মৃতি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের…

4 hours ago

জলের দরে বিকোচ্ছে সবজি, মাথায় হাত কৃষকের!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-শীতকালীন সবজির মতো দ্রুত দাম পড়ছে গ্রীষ্মকালীন সবজিরও।জলের দরে বিকোচ্ছে নতুন উঠে আসা…

4 hours ago

কৃত্রিম ধাতব হৃদপিণ্ড নিয়ে একশো দিন বেঁচে রেকর্ড সৃষ্টি!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-বিশ্বের প্রথম মানুষ হিসেবে টাইটানিয়াম ধাতুর তৈরি কৃত্রিম হৃদ্যন্ত্র নিয়ে ১০৫ দিন বেঁচে…

4 hours ago

শুদ্ধিকরণ ও রাজনীতি!!

এই উপমহাদেশের বিভিন্ন দেশে নির্বাচনি ব্যবস্থায় অনিয়ম ও এ গড়মিল নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই।স্বৈরাচারী কিংবা…

5 hours ago

মধ্যপ্রদেশের সরকারি হাসপাতালে আগুন!

অনলাইন প্রতিনিধি :-মধ্যপ্রদেশের গ্বালিয়রের একটি হাসপাতালে রবিবার সকালে অগিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ঘটনায় হতাহতের খবর নেই…

1 day ago

ভয়ঙ্কর আত্মঘাতী হামলায় ছিন্ন ভিন্ন ৯০ সেনার দেহ!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-রবিবার বেলুচিস্তানে একটি সেনা কনভয়ে হামলা চালানো হয়। বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি এই হামলার…

1 day ago