শিল্পের নামে রাজ্য শিল্প নিগমে নজিরবিহীন কেলেঙ্কারি ফাঁস!!

 শিল্পের নামে রাজ্য শিল্প নিগমে নজিরবিহীন কেলেঙ্কারি ফাঁস!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

রাজ্যে শিল্প স্থাপনের নামে বাম জমানার যাবতীয় দুর্নীতিকে ছাপিয়ে গেছে বর্তমান রাম জমানা। বলতে গেলে গত সাড়ে বছরে রাজ্যে নজিরবিহীন দুর্নীতি সংঘটিত হয়েছে শিল্প স্থাপন ও শিল্পোন্নয়নের নামে। গত সাড়ে বছরে রাজ্যে কতটা শিল্পোন্নয়ন হয়েছে তা রাজ্যবাসীর চোখে না পড়লেও, পড়লেও, কতিপয় শাসকদলীয় দুর্নীতিবাজ নেতা এবং কিছু সরকারী কর্মচারীর অবিশ্বাস্য উন্নয়ন কিন্তু চোখে পড়ার মতো। শিল্পোন্নয়নের নামে শাসকদলের এক পাতি নেতা, যিনি নিজেকে প্রভাবশালী বলে দাবি করেন। ওই ফ্লেক্স ব্যবসায়ী ও তার শাকরেদদের কল্যাণে ত্রিপুরা শিল্প উন্নয়ন নিগম আগেই পথে বসে গেছে। নিগমের সীমাহীন দুর্নীতি ও অনিয়ম নিয়ে দৈনিক সংবাদে মাস চারেক আগে ধারাবাহিক তথ্যমূলক সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল। সেই ধারাবাহিক সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা ভিজিলেন্স তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু চার মাস অতিক্রান্ত হয়ে যাওয়ার পরও রাজ্যবাসী সেই তদন্তের ফলাফল কী তা জানতে পারেনি। তবে কি মুখ্যমন্ত্রী ডা. সাহা নিজেই চাপের মধ্যে আছেন ? ২০১৮ সালে সরকার পরিবর্তনের পর টিংকু রায়কে ত্রিপুরা শিল্প উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান নিযুক্ত করে তার হাতেই দেওয়া হয় রাজ্যে শিল্পোন্নয়নের দায়িত্ব। গত সাড়ে চার বছরে শিল্প উন্নয়ন নিগমে যত দুর্নীতি এবং অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে, সবই শ্রীরায় চেয়ারম্যান থাকাকালীন । তিনি এখনও নিগমের চেয়ারম্যান পদে বহাল তবিয়তে আছেন। নিগমের দুর্নীতিকাণ্ডে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ভিজিলেন্স তদন্তের রিপোর্ট এখনও প্রকাশ হয়নি। এরই মধ্যে সামনে আসে তুলাকোণার মেসার্স সিকারিয়া মেগা ফুড পার্ক প্রাইভেট লিমিটেডের দুর্নীতিকাও। এই দুর্নীতি নিয়েও গত ক’দিন আগে দৈনিক সংবাদে ধারাবাহিক তথ্যমূলক সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। প্রকাশিত সংবাদে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছিল যে, রাজ্যে শিল্প স্থাপনের নামে সিকারিয়া সংস্থা কেন্দ্রীয় প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ করে এখন অন্য ধান্ধা করছে। সেই ধান্ধা কী এবং এই ধান্ধার সাথে কারা যুক্ত তার যাবতীয় তথ্য আমাদের হাতে এসেছে। সিকারিয়া সংস্থাটির একটি ঘনিষ্ঠ এবং বিশ্বস্ত সূত্র থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। যা দেখেশুনে রাজ্যের ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘোটালা বলে দাবি করলেও, একে কম বলা হবে। গত বারো বছরে যে সংস্থা (সিকারিয়া) রাজ্যে একটিও শিল্প স্থাপন করতে পারেনি, একটি শিল্প সংস্থাকে রাজ্যে আনতে পারেনি, সেই সিকারিয়া সংস্থাকে তুলাকোণায় শিল্প নিগমের লিজ দেওয়া জমিতে বাঁকা পথে বহুতল আবাসন সহ নানা বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ডে ব্যবহার ও ব্যবসা করার জন্য অনুমোদন দিয়েছে ত্রিপুরা শিল্পোন্নয়ন নিগম। মোদ্দা কথা, এ সব কর্মকাণ্ড করার জন্য ২০১৮ থেকে সিকারিয়াকে বেশ কয়েকবার নিগম থেকে ‘এন ও সি’ প্রদান করা হয়েছে। সব থেকে বড় প্রশ্ন হচ্ছে, টিআইডিসির এই সিদ্ধান্তের পেছনে কি রাজ্য সরকারের অনুমোদন আছে? নিগমের বোর্ডের কোনও অনুমোদন আছে? যতটুকু খবর, রাজ্য সরকার এবং বোর্ডের এমন কোনও সিদ্ধান্ত বা অনুমোদন নেই। অভিযোগ, সিকারিয়াকে বাঁকাপথে এই সুবিধা দেওয়ার পেছনে বিরাট মাপের আর্থিক লেনদেন হয়েছে। অথচ ২০১১ সালে টিআইডিসি যখন সিকারিয়াকে জমি অ্যালটমেন্ট দেয় এবং চুক্তি সম্পাদন করে, সেই লিজ ডিডে স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে ওই জমিতে শুধুমাত্র ফুড প্রসেসিং ইন্ডাস্ট্রি এবং এর সাথে যুক্ত প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো গড়ে তুলতে পারবে। বারো বছরে একটিও ফুড প্রসেসিং ইন্ডাস্ট্রি গড়ে উঠা তো দূরের কথা, এখন সেই জমিতে বহুতল আবাসন নির্মাণের জন্য, বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড এবং ব্যবসা করার জন্য এনওসি দিয়েছে শিল্প নিগম! রয়েছে আরও একাধিক কেলেঙ্কারি। (চলবে)

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.