শিল্প সম্ভাবনা

এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

শিল্প কি? শিল্পের প্রয়োজনীয়তা কি? এইসব নিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেওয়ার প্রয়োজন আছে বলে মনে করিনা। একেবারে সহজভাবে এইটুকু বলা যায়, একটি জাতি, একটি দেশ, একটি রাজ্যের উন্নতির মূল উপাদানই হচ্ছে শিল্প। এই শিল্পের নানা প্রকারভেদ আছে। সেটা অন্য বিষয়। কিন্তু শিল্পের উন্নয়ন, শিল্পের বিকাশ না ঘটলে দেশ ও জাতির বিকাশ ঘটবে না। এটাই মূল ত্বত্ত্ব।
এবার মূল প্রসঙ্গে আসা যাক। মঙ্গলবার স্থানীয় প্রজ্ঞাভবনে দেশ- বিদেশের শতাধিক শিল্পপতি এবং বিনিয়োগকারীদের উপস্থিতিতে ‘ত্রিপুরায় শিল্পে বিনিয়োগ সম্ভাবনা’ শীর্ষক গোল টেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।


সেই বৈঠকে বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেছেন, ‘ত্রিপুরায় বিনিয়োগের এটাই মহেন্দ্রক্ষণ’। তিনি আরও বলেছেন, রাজ্যের ভৌগোলিক অবস্থানই শিল্প ও বাণিজ্যের বিরাট সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে। বিনিয়োগের জনপ্রিয় গন্তব্যস্থল হয়ে উঠছে ত্রিপুরা। রাজ্যের কৃষি, উদ্যানজাত বাঁশ, রাবার, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, স্বাস্থ্য ও পর্যটন ইত্যাদি ক্ষেত্রে বিনিয়োগের ব্যাপক সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। পিএম গতিশক্তি, জি-২০ ইনভেস্টমেন্ট সামিট সেই সম্ভাবনাকে আরও উজ্জ্বল করে তুলেছে। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেছেন, কোনও দেশ বা রাজ্যের সার্বিক বিকাশ নির্ভর করে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার উপর। ত্রিপুরার যোগাযোগ ব্যবস্থা সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন ঘটেছে। মুখ্যমন্ত্রী গোল টেবিলের বৈঠকে ত্রিপুরায় বিনিয়োগের আহ্বান জানান। এদিনের গোল টেবিল বৈঠকে ত্রিপুরার ঝুলিতে কিছু সাফল্যও এসেছে। বলা যায়, একেবারে নিষ্ফলা যায়নি বৈঠক। এদিন আটটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের সাথে রাজ্যের মৌ সাক্ষর হয়েছে। মোট ৩১২ কোটি ৩৮ লক্ষ টাকার সমঝোতাপত্র হয়েছে। তার মধ্যে ধলাই জেলাতে পিপিপি মডেলে একটি মেডিকেল কলেজ গড়ার জন্য ডেটন ন্যাচারাল রিসোর্স প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি সংস্থার সাথে ২৪৭ কোটি টাকার মৌ সাক্ষর হয়েছে। এই খবর ত্রিপুরার জন্য অবশ্যই সুখের এবং আনন্দের। এই নিয়ে কোনও সন্দেহের অবকাশ নেই। কিন্তু আশঙ্কাটা অন্য জায়গায়। ত্রিপুরা পূর্ণরাজ্য প্রাপ্তির পর থেকে, বা তার কিছু সময় আগে থেকে রাজ্যে যে কয়টি মাঝারি শিল্প গড়ে উঠেছিল, তা একটিও আমরা বাঁচিয়ে রাখতে পারিনি। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় শান্তিরবাজারে চিনি কল। হাপানিয়াতে জুট মিল। জুট মিল শুধু অস্তিত্ব ধরে রেখেছে। দীর্ঘসময় ধরে বঞ্চিত, অবহেলিত ত্রিপুরা রাজ্যে গত এক দশক ধরে উন্নয়নে গতি এসেছে। এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। কিন্তু শিল্প সেই অর্থে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি আজও। এর পিছনে কারণ কি? তা কম বেশি সকলেই জানে। যে বাঁশভিত্তিক শিল্প গঠন করা নিয়ে এত হৈইচৈই, ত্রিপুরার প্রাচীন হস্ততাঁত ও বাঁশ বেত শিল্পের অবস্থান আজ কোন্ জায়গায় ? তার পর্যালোচনা হওয়া জরুরি বলে মনে হয়। অর্থনৈতিক বিকাশে ত্রিপুরার চা শিল্প বড় ভূমিকা নিতে পারে। কিন্তু জোর দিয়ে আন্তরিকভাবে সেই উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে কই? তুল্যমূল্য বিচার করলে গত সাত-আট বছরে রাজ্যে শিল্প সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। কিন্তু সম্ভাবনা ও বাস্তবায়নের মধ্যে বিস্তর ফারাক রয়েছে। সেই ফারাকটা যত দ্রুত কমিয়ে আনা যাবে ততই শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা গড়ার কাজ ত্বরান্বিত হবে।

Dainik Digital

Recent Posts

এ কে-৪৭ ও প্রচুর কার্তুজ সহ ৬ বৈরী ধৃত মিজোরামে, চাঞ্চল্য!!

অনলাইন প্রতিনিধি:- বাংলাদেশ থেকে কাঞ্চনপুর মহকুমার ভারত- বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে মিজোরামে যাওয়ার পথে মামিত জেলার…

10 hours ago

ফাইফরমাশ খাটছেন টিএসআর জওয়ানরা !!

অনলাইন প্রতিনিধি :- নিরাপত্তার কাজে নয়, টিএসআর জওয়ানদের খাটানো হচ্ছে আর্দালি হিসাবে। পুলিশ আধিকারিকদের ও…

10 hours ago

ইন্ডিগো আরও একটি দিল্লীর বিমান চালু করছে!!

অনলাইন প্রতিনিধি :- ইন্ডিগো আগরতলা- দিল্লী রুটের উভয় দিকে যাতায়াতে আরও একটি বিমান চালু করছে।…

10 hours ago

ইন্দ্রপ্রস্থে ভোট!!

দিল্লীর বিধানসভা ভোট নিয়ে সরগরম দিল্লী। দিল্লীতে এবার এক আঙ্গিকে বিধানসভা ভোট হচ্ছে। গত পরিস্থিতির…

10 hours ago

বহিঃরাজ্যে গেল “ধানি লঙ্কা”ওরফে ধান্না মরিচ!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-ত্রিপুরায় উৎপাদিত" অর্গানিক বার্ড আই চিলি " স্হানীয় ভাষায় যাকে বলা হয় ধানি…

1 day ago

কুম্ভ ইকনমি

২২জানুয়ারী,২০২৪।এক বছরের ব্যবুধানে ২০২৫ সালের ১৩ জানুয়ারি।গত বছরের মেগা ইভেন্টের আসর বসেছিল অযোধ্যায়। এবার মেগা…

1 day ago