শিশুকন্যাকে ধর্ষণ শেষে হত্যা অপরাধী কে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ!!
পাঁচ বছরের শিশুকন্যাকে ধর্ষণ ও শেষে হত্যা করার অভিযোগে অপরাধীকে মৃত্যুদন্ডের আদেশ শোনালো খোয়াই জেলার জেলা ও দায়রা বিচারক শংকরী দাস। বুধবার বিচারক এই জঘন্যতম অপরাধ মামলার রায় ঘোষণা করেন। খোয়াই জেলায় এই প্রথম কোন অপরাধীকে মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি দিল আদালত। চাঞ্চল্যকর এই মামলার রায় জানতে আদালত চত্বরে সাধারণ মানুষের উপচেপড়া ভিড় ছিল বুধবার রাত আটটা পর্যন্ত।
খোয়াই জেলা ও দায়রা আদালতের বিচারক শংকরী দাস এই নিশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় অপরাধী কালী কুমার ত্রিপুরা ওরফে (অভিজিৎ) কে মৃত্যুদন্ডের শাস্তি দিয়েছেন। কালী কুমার ত্রিপুরার বাড়ি তেলিয়ামুরা থানাধীন নিশান চন্দ্রপাড়ায়।
ঘটনার বিবরণ দিয়ে সরকারি আইনজীবী অজিত সরকার এবং বিকাশ দেব জানিয়েছেন, গত ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ইং তারিখে তেলিয়ামুড়া থানাধীন দুশকি গ্রামের নিশান চন্দ্র পাড়ার বাসিন্দা বৈশাখ নন্দ দেববর্মার পাঁচ বছরের শিশুকন্যাটি হঠাৎ বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে যায়।
বহু খোঁজাখুঁজি করেও শিশুটির আর খোঁজ পাওয়া যায়নি। শেষে তিনি ২৬ ফেব্রুয়ারি তেলিয়ামুড়া থানায় একটি মিসিং ডায়েরি করেন। পুলিশ মিসিং ডায়েরির অভিযোগ মূলে শিশুটির খোঁজ করতে গিয়ে প্রথমে সন্দেহমূলক ভাবে এই এলাকারই বাসিন্দা কালী কুমার ত্রিপুরা কে আটক করে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর আসল রহস্য বেড়িয়ে আসে। কালী কুমার শিশুটিকে বাড়ি থেকে তুলে জঙ্গলে নিয়ে ধর্ষণ করে শেষে প্রমান লোপাট করতে শিশুটিকে হত্যা করেছে বলে স্বীকার করে।
পরের দিন ২৭ ফেব্রুয়ারি দুপুরে পুলিশ কালী কুমার কে নিয়ে জঙ্গলে গিয়ে শিশু কন্যার মৃতদেহটি উদ্ধার করে।
এই ঘটনার পর পুলিশ ফরেনসিক ল্যাবে মৃত দেহের সমস্ত নমুনা পাঠায়। ফরেনসিক পরীক্ষায় প্রমাণিত হয় কালী কুমার ত্রিপুরা শিশুটিকে জঙ্গলে নিয়ে ধর্ষণ করে হত্যা করে। তারপরেই তেলিয়ামুড়া থানার পুলিশ কালী কুমার ত্রিপুরার বিরুদ্ধে ৩৭৬ এডি/৩০২/২০১ আইপিসি এবং সিক্স অফ পোকসো অ্যাক্টে মামলা নেয়।
এই মামলাটির ক্ষেত্রে তৎকালীন তদন্তকারী অফিসার বিদেশ্বর সিনহা মাত্র ২৮ দিনের মধ্যে আদালতে চার্জশিট জমা দেন। এই মামলার মোট সাক্ষী ছিলেন ৩৫ জন। আদালতে সাক্ষীদের সাক্ষ্য প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর কালী কুমার ত্রিপুরাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। বুধবার আদালতের বিচারক শংকরী দাস অভিযুক্ত যুবক কালী কুমার ত্রিপুরা ওরফে অভিজিৎকে মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি ঘোষণা করেন। শাস্তি ঘোষণার পর কালী কুমারকে নিয়ে যাওয়া হয় খোয়াই সাবজেলে। বৃহস্পতিবার তাকে সেন্ট্রাল জেলে নিয়ে যাওয়া হবে।