বয়স বাড়তে থাকলে স্বাস্থ্যসচেতন মানুষ নিজের ওজন নিয়ে ভাবেন।উঠতি বয়সিদের কারও কারও মধ্যেও ওজনের ভাবনা কাজ করে।তবে শিশুদের বিষয়টা আলাদা।কতটা ওজন আসলে ‘বেশি ওজন’,কিংবা ওজন বেশি হলে সমস্যা কী— এসব ভাবনা শিশুমনে না আসাটাই স্বাভাবিক।আবার এক শিশু অন্য শিশুর গড়ন নিয়ে হাসাহাসি করছে, এমনটাও দেখা যায়।শিশুর অতিরিক্ত ওজন থাকলে শরীরে অনেক সমস্যার সৃষ্টি হয়।এই ক্ষেত্রে ধাপে ধাপে শিশুর ওজন কমিয়ে আনার প্রচেষ্টা চালাতে হবে।শিশুর সঙ্গে অভিভাবকদেরও স্বাস্থ্যকর জীবনচর্চার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।কারণ মা-বাবার অতিরিক্ত মেদবহুলতা গর্ভকালীন শিশুর অতিরিক্ত ওজন প্রাপ্তি বেশি ওজন নিয়ে জন্মানো ধূমপায়ী মা অতিরিক্ত ওজনের ঝুঁকি গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে,যে শিশু অস্বাভাবিক ওজনের তার হৃৎপিণ্ড, হরমোন, পৌষ্টিকনালি, স্নায়ুতন্ত্র, অস্থি, ফুসফুস—এসব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নানা জটিলতায় পড়ে।তারা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত থাকে এবং এসব ক্ষেত্রে ‘অতিরিক্ত ওজনের শিশুর’ তুলনায় ‘স্থূলকায় শিশু’বেশি ঝুঁকিতে থাকে।উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস এবং স্ট্রোকেরও ঝুঁকি বাড়ে।কিছু ভ্রান্ত ধারণা:-শিশুর গর্ভসঞ্চার কাল থেকে দুই বছর বয়স অবধি প্রথম এক হাজার দিন শিশুর এই সমস্যা সৃষ্টির ভিত হিসেবে কাজ করে যা প্রমাণিত সত্য।অনেকে মোটা হওয়াকে ‘স্বাস্থ্যবান শিশু’ বলে একপ্রকার আনন্দ পান।এই ধারণা ভুল। শিশুর অতিরিক্ত ওজন একপ্রকারের অপুষ্টি এবং এর আড়ালে অনেক শিশু রোগ যুক্ত থাকতে পারে।
অতিরিক্ত ওজন পরীক্ষা:- শিশুর রুটিন স্বাস্থ্য পরীক্ষায় ওজন, উচ্চতা ও বিএমআই নির্ণয় করে দেখা উচিত।ফলে তা শিশুর বয়স অনুযায়ী বিকাশ-বৃদ্ধি (গ্রোথ) চার্টে অবস্থান চিহ্নিত করে শিশুর ওজন বেশি কি না বোঝা যায়।শিশুর এই মেদবহুলতা দুই স্তরের।খাবারের দিকে বিশেষ নজর দিন:-বাড়ির খাবার হতে হবে সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর।পরিবেশনে কৌশলী হতে হবে, যাতে শিশু আগ্রহ পায়।এই যেমন মজার মজার আকৃতিতে সবজি কাটতে পারেন।তবে মনে রাখবেন, দীর্ঘদিনের খাদ্যাভ্যাস বদলে ফেলাটা সোজা কথা নয়। ধীরেসুস্থে শুরু হোক পরিবর্তন।বাইরে খাওয়ার অভ্যাসও কমিয়ে আনতে হবে ধীরে ধীরে।ওর বয়সের উপযোগী করে বুঝিয়ে বলুন, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং শরীরচর্চা কেন জরুরি। পরিবারের সবাই মিলে খেতে বসুন।একই ধরনের খাবার খেতে চেষ্টা করুন।খাওয়ার পরিবেশটা রাখুন আনন্দময়। টেলিভিশন বা ভিডিও দেখতে দেখতে খাবেন না।যতটুকু না দিলেই নয়, রান্নায় ঠিক ততটুকু তেলই দিন।ভাতের পরিমাণ কমিয়ে দিন।শিশু যতটা খেয়ে অভ্যস্ত, তার থেকে এক টেবিল চামচ করে কমিয়ে আনুন রোজ।সবজির পরিমাণ বাড়িয়ে দিন।ফল খাওয়ার প্রতি উৎসাহ দিন। ভাতের বদলে রুটি দিতে পারেন দুই বেলা।তবে দু-তিনটির বেশি নয়।কোমল পানীয় বা জুস ধীরে ধীরে একেবারে বাদ দিয়ে দিতে হবে। বাড়িতে দুধ, মিল্কশেক, ফলের রস দিন; অবশ্যই চিনি ছাড়া, দিলেও খুব সামান্য। চকলেট, মিষ্টান্ন, চিপস,ফাস্ট ফুড কমিয়ে আনুন।করতে হবে শরীরচর্চা:-শহুরে পরিবেশে দৌড়ঝাঁপ কিংবা ছোটাছুটির সুযোগ কম বলে শহরের শিশুদের মধ্যে মুটিয়ে যাওয়ার প্রবণতা বেশি।সারা দিনে ভাগে ভাগে এক-দুই ঘণ্টা আনন্দময় শরীরচর্চার ব্যবস্থা করুন।নিজেরাও সঙ্গে থাকুন।স্কুলে যাওয়ার সময় যানবাহন থেকে এমন জায়গায় নামুন,যেখান থেকে স্কুলে পৌঁছাতে অন্তত ১৫ মিনিট হাঁটতে হয়।১৫ মিনিট বা তার কম সময় হেঁটে পৌঁছানোর দূরত্বে স্কুল হলে যানবাহন নেবেন না।সুযোগ পেলে রোজ অন্তত এক ঘণ্টা খেলার সুযোগ দিন মাঠে। পার্ক থাকলে সঙ্গে নিয়ে হাঁটুন বা দৌড়ান।বাড়ির আশপাশে, গ্যারেজে বা ছাদে দড়িলাফ ও সাইকেল চালানোর ব্যবস্থা করুন।ঘরেও ব্যায়াম হোক। ইউটিউব থেকে ঘরের ব্যায়াম শিখে নিতে পারেন।শিশুকে সঙ্গে নিয়ে সকাল-সন্ধ্যায় ব্যায়াম হতে পারে ঘরেই। সকালে ১৫-২০ মিনিট আগে ঘুম থেকে উঠলে ব্যায়ামের সময় পাবেন।ছুটির দিনগুলোকে কাজে লাগান ৷ খোলামেলা জায়গায় ঘুরতে নিয়ে যান।শিশুর সঙ্গে ছোটাছুটি করুন।ক্রিকেট, ফুটবল, ব্যাডমিন্টন বা কারাতের প্রশিক্ষণে ভর্তি করাতে পারেন।নজর রাখুন:- ডিজিটাল ডিভাইসের ওপর নির্ভরশীলতাও কিন্তু অতিরিক্ত ওজনের জন্য দায়ী।এখন তো বড়রাও আসক্ত।এই নেশা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে পরিবারের সবাইকে। অফিসের কাজও বাড়িতে না করাই ভাল।তবে শিশুর ওজন হঠাৎ করেই দ্রুত বেড়ে যাওয়া,কম খেয়েও ওজন বাড়া কিংবা শিশুর অতিরিক্ত ওজনের সঙ্গে মনে রাখার ক্ষমতা কমে যাওয়া, বুদ্ধি কম থাকা,লম্বা না হওয়া,দৃষ্টি বা শ্রবণশক্তি কমে আসার মতো সমস্যা দেখা গেলে শিশুবিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়:- গর্ভকালে মায়ের স্বাভাবিক বিএমআই বজায় রাখার চেষ্টা করা।মায়ের ধূমপান পরিহার করা।গর্ভবতী মায়ের মাঝারি ধরনের ব্যায়াম করা।গর্ভকালীন ডায়াবেটিস ও গর্ভস্থ শিশুর ওজন লাভের গতি-প্রকৃতি নির্ণয় করা।প্রথম ছয় মাস শিশুকে শুধু বুকের দুধ পান করানো।ছয় মাস পর থেকে মায়ের দুধের পাশাপাশি ঘরে তৈরি পরিপূরক খাবার, যেমন- খিচুড়ি খাওয়ানো শুরু করা।১২ মাস বয়স পর্যন্ত শিশুকে কোনও ধরনের জুস খেতে না,দেওয়া।পরিবারের সবাই মিলে শিশুকে নিয়ে একটা নির্দিষ্ট সময় ও জায়গা নিরুপণ করে একসঙ্গে প্রতিদিনের খাবার খাওয়া। খাবার রুটিনে কোনও ছেদ না দেওয়া,বিশেষত প্রাতরাশ বা ব্রেকফাস্ট।খাবারের সময় টেলিভিশন না দেখা।খাবার গ্রহণে ছোট থালা বা প্লেট ব্যবহার করা।বেশি চিনি, ফ্যাট,বা চিনিযুক্ত পানীয় বর্জন।শিশু বেশি বেশি খেলে তাকে পুরস্কৃত করা হরে, এরূপ প্রলোভন না দেখানো। শিশুর শোয়ার ঘরে টেলিভিশন না রাখা এবং টেলিভিশন ও ভিডিও গেমস দেখার মোট সময় নির্ধারণ করে দেওয়া।চিপস, জুস, চকোলেট, ফাস্ট ফুড, সুগার ড্রিংকস ইত্যাদি অস্বাস্থ্যকর খাবার কেনার টাকা না দেওয়া।মনে রাখবেন,শিশুকে অতিরিক্ত ওজনের পরিণাম বুঝিয়ে বললেই যে সে পরদিন থেকে তার সব প্রিয় খাবার বাদ দিয়ে গপাগপ কেবল সেদ্ধ সবজি খাবে, আর দুই
ঘণ্টা করে দৌড়াবে-তা তো নয়।বরং আইসক্রিম, চকলেট, কেক, পেস্ট্রি, জুস, বার্গার, পিৎজা, পাস্তার মতো সুস্বাদু খাবার না পেলে শিশুর মনমেজাজ বিগড়ে যাওয়ারই কথা।জীবনটাকে রুটিনের মধ্যে আনতে হবে’বলে একটা রুটিন তৈরি করে দিলেই যে সে আপনার করা রুটিনমাফিক জীবনযাপন করবে,এমনটাও নয়।তাই পরিবারের অন্যদেরও একই রকম ইতিবাচক জীবনধারা গ্রহণ করতে হবে,তবেই শিশু তাদের দেখে সঠিক জীবনযাপনের পদ্ধতি শিখবে।
ডায়াবেটিস বা মধুমেহ আজকের সমাজে একটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে পরিচিত।এই রোগটি ধীরে ধীরে বাড়ছে…
অনলাইন প্রতিনিধি :-ত্রিপুরা মধ্যশিক্ষা পর্ষদের পরীক্ষাসূচি এগিয়ে আনা হবে।২০২৫ সালে রাজ্য মধ্যশিক্ষা পর্ষদের মাধ্যমিক এবং…
অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যে বিজেপি সরকার প্রতিষ্ঠার পর রাজ্যের কৃষকদের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। এই সরকারের…
গুণ-বিচার পরে, আগে তো দর্শনধারী!এই আপ্তবাক্য আজকের ডিজিটাল জেট যুগে একেবারে সর্বাংশে সত্য। দর্শন অথে…
অনলাইন প্রতিনিধি :-ডবলইঞ্জিনের সরকারের ক্ষমতা ঠুনকো।কোনও প্রতিশ্রুতি পালন বা পদক্ষেপ নিতে পারছে না।অন্তত কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস…
অনলাইন প্রতিনিধি :-সোমবার উত্তরাখণ্ডের গারওয়াল থেকে কুমায়ুন এর দিকে গন্তব্য ছিল বাসটির। বাসে তখন কমপক্ষে…