শীতকালীন আগ্নেয়গিরি!!
লোকসভার শীতকালীন অধিবেশন শুরু হইয়াছে।এই অধিবেশন নামেই শীতকালীন,বাস্তবিক সংসদের দুই কক্ষ যে ক্রমেই আগ্নেয়গিরির রূপ লইবে তাহা বুঝা যাইতেছে বিরোধী দলগুলির মেজাজমর্জি দেখিয়া।তাহারা সকল আলোচ্যসূচি তোলা রাখিয়া আদানি ইস্যুতে আলোচনা দাবি করিয়াছেন।আগে হইতেই প্রমাদ গুনিয়া লইয়াছে শাসকদল।সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজু জানাইয়াছেন,বিএসির সিদ্ধান্তক্রমে যে সূচি তৈরি হইয়াছে সেই সূচি মোতাবেক কাজ চলিতে দেওয়া প্রয়োজন।কোনও নতুন বিষয়কে চাপাইয়া দিয়া সভার স্বাভাবিক কাজকর্ম যাহাতে পণ্ড না হয় সেই কথা ভাবিতেছে শাসকদল।
অপরদিকে বিরোধীরা ক্রমেই কোমর কষিয়া ময়দানে অবতীর্ণ হইতেছে।আদানি গোষ্ঠী যে প্রধানমন্ত্রীর মিত্র এবং প্রধানমন্ত্রীরই প্রতিভূ এই কথা তাহারা ঘাটেমাঠে শতসহস্রবার বলিয়া আসিতেছেন।অতএব মোদি-আদানিকে এক গুচ্ছে বাঁধিয়া তাহারা আদানি কোম্পানির বিরুদ্ধে মার্কিন কৌঁসুলিদের দাবিকে সামনে রাখিবেন ও অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে আলোচনা চাহিবেন। কেবলমাত্র আদানি ইস্যুই নহে,বিরোধীদের হাতে রহিয়াছে মণিপুর এবং ওয়াকফ সংশোধনী বিল। প্রসঙ্গত,কেন্দ্র সরকার চলতি শীতকালীন অধিবেশনে মোট ষোলখানা বিল বিবেচনার জন্য তালিকা তৈরি করিয়াছে।এই বিলগুলি সংসদে পাস করাইয়া লওয়াই তাহাদের উদ্দেশ্য। এই ষোলখানা বিলের মধ্যে ওয়াকফ সংশোধনী বিলও রহিয়াছে।সংসদের অধিবেশন শুরু হইবার পূর্বে নিয়মমাফিক যে সর্বদলীয় আলোচনা সভা হইয়া থাকে সেইখানেও ওয়াকফ বিলের বিরোধিতা করিয়াছেন বিরোধী দলের নেতারা। ডিএমকে সাংসদ তিরুচি শিবা ওয়াকফ সংশোধনী বিল প্রত্যাহার করিয়া লওয়ার জন্য দাবি জানাইয়াছেন কেন্দ্রের সরকারকে।এর আগে বিভিন্ন মুসলিম সংগঠন এই বিলের জোর প্রতিবাদ জানাইয়াছে। এতদ সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় সরকার এই বিলটি চলতি অধিবেশনে আলোচনার টেবিলে আনিতে আগ্রহী।প্রসঙ্গত, দুই রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পরপরই সংসদের শীতকালীন অধিবেশন শুরু।বাহিরের তাপ উত্তাপ যে অন্দরেও প্রবাহিত হইবে তাহা বলাই বাহুল্য।তবে বিধানসভার নির্বাচন,উপনির্বাচনে অনেকটাই পিছনে পড়িয়া যাওয়া বিরোধী ইন্ডিয়া জোটকে সংসদের অভ্যন্তরে চনমনে রাখিবে আদানি কোম্পানি ইস্যু।দেশের আমলা ও রাজনীতিকদের ২২০০ কোটি টাকা ঘুষের বিনিময়ে বরাত হাসিলের এই অভিযোগ মারাত্মক।ইন্ডিয়া জোট চাইবে আলোচনা হউক, আলোচনায় যে তাহারা আদানি গ্রেপ্তার দাবি করিবে তাহার আভাস ইতিপূর্বেই মিলিয়াছে।মোদি মিত্র’ আদানি লইয়া দুইপক্ষে তুমুল বাকবিতণ্ডা হইবে, যা দিল্লীর ধোঁয়াশা, বায়ুদূষণকেও পিছনে ফেলিবে।প্রসঙ্গত,বিরোধী রাজ্যে কোথাও পান হইতে চুন খসিলে দিল্লীর এনডিএ সরকার কী কী করিয়া থাকে তাহার জ্বলন্ত প্রমাণ রহিয়াছে ঝাড়খণ্ডে।হেমন্ত সোরেনকে জেলখানায় পোরা হইয়াছে। জম্মু কাশ্মীরে আনা হইয়াছে পরিবর্তন।কিন্তু বারবার ব্যতিক্রমও দেখা যাইতেছে বিজেপি শাসিত মণিপুরে। এক যাত্রায় পৃথক ফল কেন হইবে – এই লইয়া বিরোধী ইন্ডিয়া জোট অস্ত্র শানাইয়াছে। আর এই সকল ইস্যুর সহিত উত্তরপ্রদেশের সম্ভাল জুড়িয়া গেলে সংসদের কাজকর্ম লাটে তুলিতে বিরোধী অস্ত্র সত্যই ভয়ানক আকার লইবে।