শীত বাড়তেই ফের করোনার দাপট!!

 শীত বাড়তেই ফের করোনার দাপট!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-শীতের মরশুমে ফের মাথাচাড়া দিচ্ছে কোভিডের নতুন সার ভ্যারিয়েন্ট জেএন-১। একদিনে দেশে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে।মৃতদের পাঁচজনই কেরলের।বাকি দু-জনের একজন করে উত্তরপ্রদেশের আর কর্ণাটকের।বিশেষজ্ঞদের যদিও দাবি,এদের মৃত্যুর জন্য শুধুমাত্র কোভিডের নয়া ভ্যারিয়েন্টকে দায়ী করা ভুল। কারণ এদের প্রত্যেকের একাধিক কো-মবিডিটি বা অন্য ক্রনিক অসুখ ছিল।তবে, সংক্রমণের ঊর্ধ্বমুখী গ্রাফও বাড়াচ্ছে চিন্তা।দেশে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা ৩৩৫ জন। অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা ১,৭০১ জন।মঙ্গলবার সতর্কবার্তা শুনিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক।স্বাস্থ্য মন্ত্রক নির্দেশিকা দিয়ে রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে সতর্ক থাকতে বলেছে। নজরদারি বাড়ানো, আরটি-পিসিআর টেস্টে জোর দিতে বলেছে।কেন্দ্রের তরফে বলা হয়েছে, জেলাস্তরে কোভিড কেসের উপর নজরদারি বাড়াতে প্রতিটি রাজ্যকে প্রতিদিন দিল্লিতে রিপোর্ট পাঠাতে হবে। জেলাভিত্তিক ইনফ্লুয়েঞ্জা গোত্রীয় অসুস্থতার রিপোর্টও কেন্দ্রকে পাঠাতে বলা হয়েছে। কেন্দ্রের নির্দেশিকায় বক্তব্য সামনেই বর্ষশেষ,উৎসবের মরশুম।এই সময় জনস্বাস্থ্যে সুরক্ষিত রাখা এবং সংক্রমণের সম্ভাবনা কমনা খুবই প্রয়োজন।আরটি-পিসিআর টেস্ট বাড়াতে হবে এবং নমুনা পজিটিভ এলে জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য তৎক্ষনাৎ পাঠাতে হবে।”এদিকে বিশ্বের ৩৮টি দেশে করোনার নয়া সাব-ভ্যারিয়েন্ট জেএন-১ ছড়িয়েছে।কড়া নজরদারির পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)।করোনার নতুন সাব-ভ্যারিয়েন্ট জেএন-১ দেখা গিয়েছে কেরলের কারাকুলামে।সেখানে ৭৯ বছরের বৃদ্ধার দেহে আরটি-পিসিআর পরীক্ষায় জেএন-১ সাব-ভ্যারিয়েন্ট ধরা পড়েছে।ইনফ্লুয়েঞ্জার মৃদু উপসর্গ দেখা গিয়েছিল। কেরলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জর্জ বলেছেন,‘জেএন-১ সাব-ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই। মাসখানেক আগে সিঙ্গাপুর বিমানবন্দরে পরীক্ষায় কয়েকজন ভারতীয় যাত্রীর দেহে এই ভ্যারিয়েন্ট দেখা যায়।কেরলে জিনোম সিকোয়েন্সিং-এ জেএন-১ দেখা গিয়েছে।পরিস্থিতিতে নজর আছে।কো-মবিডিটি থাকলে সতর্ক থাকা দরকার।’
কেরলে সংক্রমণ ছড়াতেই সাবধান কর্ণাটক। হাসপাতালগুলিকে পরিস্থিতি
মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে বলেছেন কর্ণাটকের স্বাস্থ্যমন্ত্রী দীনেশ গুন্ডুরাও।বয়স্ক ও যাদের কো-মবিডিটি রয়েছে তাদের মাস্ক ব্যবহার করতে বলেছেন তিনি।কেরলের সীমানাবর্তী জেলাগুলিতে বেশি নজর রাখার পরামর্শ দিয়েছেন দীনেশ।তিনি মঙ্গলবার দুপুরে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন,’যাদের জ্বর, সর্দির মতো কোভিডের একাধিক উপসর্গ রয়েছে, তাদের টেস্ট করাতে বলা হচ্ছে।আমরা এখনই জমায়েত না করা বা ভিড় জায়গায় না যাওয়ার মতো কোভিডবিধি জারি করছি না। তবে সংক্রমণ বাড়তে থাকলে নির্দেশিকার ব্যাপারে ভেবে দেখব।ন্যাশনাল ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন কোভিড টাস্ক ফোর্সের কো- চেয়ার রাজীব জয়দেবনের বলেছেন,’জেএন-১ দ্রুত ছড়ায়,রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাকে ফাঁকি দিতে সক্ষম।’ দু’সপ্তাহ আগেও ভারতের অ্যাক্টিভ কেসের সংখ্যা ছিল ১০০-র কম।স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান বলছে, রবিবার থেকে পরপর তিনদিনে অ্যাক্টিভ কোভিড রোগীর সংখ্যা পাঁচশো’র বেশি বেড়েছে।ইতিমধ্যে কেরল এবং কর্ণাটক রাজ্যের সব হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিকেও কোভিডের চিকিৎসার জন্য তৈরি থাকতে বলা হয়েছে। তবে পরিস্থিতি উদ্বেগজনক নয় বলেছেন মাইক্রোবায়োলজিস্ট তথা ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্সের অধ্যাপক ডাঃ সৌমিত্রা দাস বলেছেন, ‘সংক্রমণ এখনও কম। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। সংক্রমিতরা বেশিরভাগ জেএন-১ সাব-ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত।এটা এসেছে বিএ২-৮৬ থেকে।সতর্কতা বিশেষ ভাবে প্রয়োজন।’
বিশেষজ্ঞদের কথায়, হাল্কা জ্বর, কাশি, নাকে অস্বস্তি, নাক থেকে জল পড়া, গলা ব্যথা, মাথা ব্যথা জেএন-১-এর সাধারণ উপসর্গ।সিঙ্গাপুরের পরিস্থিতি সবথেকে খারাপ।ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে সিঙ্গাপুরে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৫৬,০৪৩,যা আগের সপ্তাহে ছিল ৩২,০৩৫।
এখন সিঙ্গাপুরে দৈনিক করোনা সংক্রমণ গড়ে ৩৫০ করে বাড়ছে।হু-র করোনা বিশেষজ্ঞ মারিয়া ভেন কেরখোভ জানিয়েছে, ‘ওমিক্রনের সাব-ভ্যারিয়েন্ট বিএ২.৮৬ থেকে উদয় হয়েছে জেএন-১।সিঙ্গাপুর-সহ কয়েকটি দেশে সংক্রমণ ছড়াচ্ছেতা নিশ্চিত করেছে হু। সংক্রমিতদের ৬৮ শতাংশ এক্সবিবিসাব-ভ্যারিয়েন্টে ভুগছেন।বাকিরা জেএন-১-এ সংক্রমিত।বেশিরভাগ উপসর্গহীন।সুরক্ষিত থাকতে টিকাকরণের সঙ্গে বিধিনিষেধ পালন করতে হবে। তবে শুধু করোনা ছড়াচ্ছে তা নয়, ইনফ্লুয়েঞ্জা, অন্য ভাইরাস ও ব্যাকটিরিয়া প্রভাব বিস্তার করছে।’

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.