শুক্রাণু-ডিম্বাণু ছাড়াই কৃত্রিম মানব-ভ্রূণ, চমকে দিলেন বিজ্ঞানীরা।
শুক্রাণু আর ডিম্বাণুর মিলনে মানবদেহে নতুন প্রাণের সৃষ্টি হয়। এটাই শাশ্বত নিয়ম। জীববিজ্ঞানের এই নিয়ম কি এবার বদলে যেতে চলেছে? শুক্রাণু এবং ডিম্বাণু ছাড়াই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের একটি গবেষক দলের কৃত্রিম মানব ভ্রূণ তৈরি শুধু বিশ্বকেই চমকে দেয়নি,মানবজন্মের বিকল্প সম্ভাবনাও উস্কে দিয়েছে। গবেষকরা দাবি করেছেন তারা ডিম এবং শুক্রাণুর প্রয়োজনীয়তা বাইপাস করে স্টেম সেল থেকে বিশ্বের প্রথম কৃত্রিম মানব ভ্রূণের মতো কাঠামো তৈরি করেছেন।এই ভ্রূণ- সদৃশ কাঠামোগুলি মানুষের বিকাশের একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে: উদাহরণস্বরূপ,তাদের স্পন্দিত হৃদয় বা মস্তিষ্ক নেই।কিন্তু বিজ্ঞানীরা বলছেন যে তারা একদিন জেনেটিক রোগ বা গর্ভপাতের কারণগুলি বোঝার অগ্রগতিতে সাহায্য করতে পারে। এই আবিষ্কার যতই চমকপ্রদ হোক, এই গবেষণা কিন্তু আমেরিকা-সহ বেশ কিছু দেশে নীতিগত এবং আইনি প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। সিন্থেটিক ভ্রূণ তৈরির মাধ্যমে চিকিৎসা পদ্ধতিকে নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি ভাবাচ্ছে বিশেষজ্ঞদের।এই ক্ষেত্রে আবিষ্কারের গতি নিয়ে চিন্তিত বায়োএথিক্স বিশেষজ্ঞরা।কারণ তাদের দাবি, এই আবিষ্কার মানবসভ্যতাকে জীবনের প্রান্তে ঠেলে দিতে পারে।বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, এই সিন্থেটিক ভ্রূণের মাধ্যমে নতুন প্রাণের উদ্ভাবনে অবিলম্বে রাশ টানা দরকার। ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন (আইভিএফ) পদ্ধতিতে যেভাবে শিশুর জন্ম হয়, তার নির্দিষ্ট আইনি প্রক্রিয়া আছে। কিন্তু সিন্থেটিক ভ্রূণের সৃষ্টিতে আইনের কোনও লাগাম এখনও পরানো হয়নি।যা ভবিষ্যতে বিপদ ডেকে আনতে পারে বলে মত অনেকের। ফ্রান্সিস ক্রিক ইনস্টিটিউটের সহযোগী গবেষণা পরিচালক জেমস ব্রিসকো এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন,স্টেম সেল থেকে উদ্ভূত মডেল তৈরি এবং ব্যবহারের জন্য একটি কাঠামো প্রদানের জন্য আইনি বৈধতার প্রয়োজন রয়েছে।গবেষক দলের প্রধান ডাঃ ম্যাগডালেনা জেরনিকা গোয়েটজ বুধবার বোস্টনে ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর স্টেম সেল রিসার্চের বার্ষিক সভায় একটি উপস্থাপনায় নিজেদের এই উদ্ভাবন ব্যাখ্যা করেন।ক্যালটেক এবং কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান এবং জৈবিক প্রকৌশলের অধ্যাপক জেরনিকা বলেন,গবেষণাটি একটি সুপরিচিত বৈজ্ঞানিক জার্নালে গৃহীত হয়েছে, তবে প্রকাশিত হয়নি। গবেষণাটি প্রথম প্রকাশিত হয় ‘দ্য গার্ডিয়ান’ সংবাদপত্রে। জেরনিকা-গোয়েটজ বলেন,যে ভ্রূণ-সদৃশ কাঠামোটি তার ল্যাব তৈরি করেছে,সেটি একক মানব ভ্রূণীয় স্টেম কোষ থেকে উৎসারিত হয়েছিল।