শেকঁড়হীন হয়ে পড়লো সিপিএম!!

এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

দৈনিক সংবাদ অনলাইন প্রতিনিধি।। টানা ২৫ বছর ক্ষমতায় থাকা একটি রাজনৈতিক দল ক্ষমতা হারানোর মাত্র পাঁচ বছরের ব্যবধানে কতটা অস্তিত্বহীন, কতটা শেকঁড়হীন হয়ে যেতে পারে, তা দেখালো ত্রয়োদশ ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনের ফল। যে কমিউনিস্ট সুর্য অস্ত যায়না বলে একসময় দম্ভ করতেন সর্বহারা নেতারা, তারা আজ জনবল হারিয়ে সত্যিকার অর্থেই সর্বহারা। রক্তবীজের বংশধরখ্যাত দলটির এমন রক্তশুন্যতার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে যে, এবার বিধানসভায় বিরোধী দলনেতার পদটিও আজ তাদের দখলে রাখার মতো শক্তি নেই। নীতি এবং আদর্শের বিসর্জন দিয়ে কংগ্রেসের সাথে জোট করে এরা শুধু নিজেরাই ডুবলো না, হাজার হাজার বামপন্থী আদর্শে বিশ্বাসী কর্মী সমর্থকদের ভাবাবেগকেও ওরা পদদলিত করেছে।

যে কমিউনিস্টরা একদিন পাহাড়ের শক্তি নিয়ে বড়াই করত, সেই পাহাড়েই আজ তাদের ঠেলে ফেলে দিয়েছে গভীর লুঙ্গায়। পশ্চিমবঙ্গেও পঁয়ত্রিশ বছরের দীর্ঘতম কমিউনিস্ট শাসনে ছেদ পরার পর দলের অস্তিত্ব এখন গভীর সংকটে। ত্রিপুরার পরিস্থিতিও সেই পথেই এগোচ্ছে এখন। চিরশত্রু কংগ্রেসের সঙ্গে হাতমিলিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়েও ব্যুমেরাং হয়েছে। ত্রিপুরার রাজনৈতিক সচেতন মানুষ সেই অনৈতিক জোটকে প্রত্যাক্ষান করেছে। অথচ এরাই এই জোটকে মানুষ চেয়েছে বলে, মানুষের জোট বলে প্রচার করে গেছে রাতদিন। ভোরবেলায় দলবেধে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে শুধু পরিবর্তন নয়, প্রত্যাবর্তনের জন্যও যে ভোট হতে পারে, সেটা এবার প্রমানিত হয়েছে।

পাঁচবছর আগের ষোলটি জয়ী আসনও এবার ধরে রাখতে পারেনি বামেরা। ঘরে বসে মানুষের সাথে যোগাযোগ ছিন্ন করে, আর সোশ্যাল মিডিয়ায় হাওয়া তুলে এই বামেরাই প্রচার করে বেরিয়েছে তারাই ক্ষমতায় আসছে। ফলাফল প্রকাশের পর দেখা গেল, একসময়ের দোর্দন্ড প্রতাপশালী সিপিএম এখন এগারোজনের ফুটবল দলে পরিনত হয়েছে। পরিস্থিতি এমন জায়গায় গিয়ে পৌছেছে যে, এখন রিজার্ভ বেঞ্চে বসারও লোক নেই। পাঁচবছর আগে ক্ষমতা হারিয়ে মেলারমাঠের তথাকথিত তাত্ত্বিক নেতারা যখন ঘর থেকে বেরোলেন, তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে। আত্মতৃপ্তিতে ভোগে সবকিছু নিজেদের মত করে ব্য করলেন মেলারমাঠের নেতারা।

কিন্তু একবারও ভেবে দেখলেন না মানুষ আসলে কি চাইছে? এবারের ভোটগ্রহণ এবং ভোটগননা শেষে অভিযোগ তোলারও রাস্তা খোলা রাখলনা কমিশন। ফলে এখন মানুষকে বলার মতোও কিছু খুঁজে পাচ্ছে না। পাঁচ বছরে ঘরবন্দী নেতারা যখন বুঝতে পারলেন, ততক্ষনে বিজেপি একাই বত্রিশ আসনে জয়ী হয়ে গেছে। উল্টোদিকে কোনোরকম এগারো নিয়ে দুপায়ে খাড়া রইল মেলারমাঠ। খোদ দলের রাজ্যসম্পাদক জীতেন্দ্র চৌধুরী সাব্রুমে হারতে হারতে কোনোরকম ভাবে জয়ী হয়েছেন।শেষ পর্যন্ত নিজের পরাজয় ঠেকাতে পারলেও, পুরো দলটাকেই ডুবিয়ে দিলেন জিতেন বাবুরা। এই পরাজয় থেকে মেলারমাঠ কোনো শিক্ষা নেয় কিনা, এখন সেটাই দেখার।

Dainik Digital

Recent Posts

নিগো – অন্ধ প্রশাসন!!

নিগো বাণিজ্যের রমরমা চালানোর জন্যই কি ১৮ সালে রাজ্যের মানুষ বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় বসিয়েছিলো?রাজ্যের আকাশ…

21 hours ago

বিমানযাত্রীর মর্মান্তিক মৃত্যু নিয়ে পুলিশের তদন্ত শুরু!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-এয়ারইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের কর্মীর চরম গাফিলতি ও উদাসীনতার কারণে রীতা বণিক (৫৯) বিমান যাত্রীর…

21 hours ago

হরিয়ানাঃ পাল্লা কার পক্ষে?

হরিয়ানা কি বিজেপির হাত থেকে ফসকে যাচ্ছে?শাসক বিজেপির হাবভাব দেখে তেমনটাই অনুমান করছে রাজনৈতিক মহল।প্রধানমন্ত্রী…

2 days ago

রাজধানীতে চাঁদার জুলুমে অতিষ্ঠ মানুষ!!

অনলাইন প্রতিনিধি:-মুখ্যমন্ত্রীডা. মানিক সাহার নির্বাচনি এলাকার আপনজন ক্লাবের চাঁদার নামে বড় অঙ্কের তোলাবাজির অভিযোগের রেশ…

3 days ago

ইন্ডিয়ান বুকে রাজ্যের মেয়ে ঝুমা!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-ইচ্ছে ছিলো অনেক আগে থেকেই। অবশেষে নিজের ইচ্ছেকেই বাস্তবে পরিনত করলো ঝুমা দেবনাথ।…

3 days ago

সুশাসনে আইনশৃঙ্খলা!

রাজ্যে কি সত্যিই আইনের শাসন রয়েছে?সাধারণ মানুষ কিন্তু প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে।সরকার বলছে রাজ্যে সুশাসন…

3 days ago