শেষ হলো কার্যকারিণী বৈঠক, ২৩’এর কৌশল তৈরি বিজেপির

 শেষ হলো কার্যকারিণী বৈঠক, ২৩’এর কৌশল তৈরি বিজেপির
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

দৈনিক সংবাদ অনলাইন, উদয়পুর।। প্রদেশ বিজেপির দূইদিন ব্যাপী কার্যকারিণী বৈঠক বৃহস্পতিবার শেষ হয়েছে। গতকাল বুধবার থেকে উদয়পুরের পঞ্চায়েত রাজ ট্রেইনিং ইষ্টিটিউটে এই বৈঠক শুরু হয়েছিল। এই বৈঠকে সবাই উপস্থিত থাকলেও দুই বিধায়ক বুর্বমোমন ত্রিপুরা ও দিবাচন্দ্র রাংখল অনুপস্থিত ছিলেন। তবে চিকিৎসার কারনে নলছরের বিধায়ক সুভাষ দাস বহিঃরাজ্যে থাকায় তাই তিনি অনুপস্থিত ছিলেন। বিধায়ক দিবাচন্দ্র রাংখল ও বুর্বু মোহন ত্রিপুরার অনুপস্থিতির কারন জানা যায়নি।

এদিকে, দুই দিনের প্রদেশ কার্যকারিণী বৈঠকের শেষে বৃহস্পতিবার সাংবাদিক সন্মেলনে দলের মুখপাত্র সুব্রত চক্রবর্তী জানান, আগামী ২০২৩ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ৬০টি আসনে জয় লাভ করার জন্য কি কি রাজনৈতিক স্ট্রেটিজি নেওয়া প্রয়োজন সেই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে বৈঠকে। দলের সংঘঠনকে আরও মজবুত ও শক্তিশালী করার উপর গুরুত্ব দেওয়া হয় এই বৈঠকে। দলের সব মন্ডল, মোর্চা, শক্তি কেন্দ্র, বুথ ও সর্বশেষ পৃষ্ঠাপ্রমুখদের এক সঙ্গে সক্রিয় ভাবে কাজ করার উপর এই বৈঠকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সব ক্ষেত্রে টাইম বাউন্ড করে দেওয়া হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দলের সাংগঠনিক কাজকর্ম সম্পন্ন করার উপর গুরুত্ব পায় এই বৈঠকে।

এই বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে পৃষ্ঠাপ্রমুখদের বর্তমান অবস্থা কি ?
মুখপাত্র শ্রী চক্রবর্তী জানান, জনসংযোগ ও জন কল্যাণমূলক কর্মসুচি কি ভাবে বাস্তবায়ন করা যায়। সেই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। দলের সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করার নানা কৌশল নিয়েও আলোচনা হয়। জুলাই মাস ব্যাপী দলের বিভিন্ন মোর্চা এক সঙ্গে একই দিনে সারা রাজ্যে জন সংযোগ করবে। প্রদেশ কার্যকারিণীর পর জেলা , মন্ডল ও মোর্চা কার্যকারিণী বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
এই বৈঠকে স্থির হয়েছে আগামী ১০ জুলাই একই দিনে বিজেপি –র সাংগঠনিক ১০ জেলাতে এক সঙ্গে জেলা কার্যকারিণী বৈঠক বসবে। ১৭ জুলাই রাজ্যের ৬০টি মন্ডলে এক সঙ্গে মন্ডল কার্যকারিণী বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

১৯ জুলাই ত্রিপুরা প্রদেশ কমিটির ৬০টি মোর্চার কার্যকারিণী বৈঠক হবে একই দিনে। বেকারদের কর্মসংস্থান এবং নতুন নিয়োগ , কৃষিদপ্তর সহ সব দপ্তরে সকল শূণ্যপদের পূরণ দ্রুত সম্পন্ন করার বিষয়টিও এই বৈঠকে গুরুত্ব পায় বলে জানিয়েছেন প্রদেশ মুখপাত্র।
একই সঙ্গে স্বনির্ভরতার বিষয়টিও এই বৈঠকে বিশেষ গুরুত্ব পায়। রাজ্যে একটি নতুন বিষয় সামনে এসেছে বলে তিনি দাবি করেন। আত্মনির্ভর ও স্ব-রোজগারী যারা হতে চায় তাদের সরকার বিশেষ গুরুত্ব দেবে। সেই কাজে সরকার ও দলীয় ভাবে তাদের আরও উৎসাহ দেওয়ার বিষয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে জানান।

যাতে আত্মনির্ভর শীল হয়ে আত্মনির্ভর ত্রিপুরা গঠনে সহায়ক ভুমিকা নিতে পারে।
২৮টি ডিপার্টমেন্ট ও ১২ টি সেল রয়েছে। এদের রিপোর্ট নেওয়া হয়েছে। সেই জায়গায় দলের কাজকে আরও কিভাবে গতিশীল করা যায়, কোথায় কি অবস্থা রয়েছে , কোথাও দুর্বলতা থাকলে কিভাবে সেই দুর্বলতা কাটিয়ে তোলা যায়, তার জন্য সময় বেধে দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাজ্য কার্যকারিণী বৈঠক শেষ হওয়ার পর তারা নিজেদের মধ্যে বসে আলোচনা করে আগামী ৬ মাস বিভাগ গুলি কিভাবে চলবে তার একটা রূপরেখা তৈরী করবে। পরবর্তী সময়ে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব –র নির্দেশ অনুসারে এই বিভাগ গুলিও তাদের কাজ করবে।

আগামী ২৭,২৮,২৯ জুলাই সম্পন্ন হবে প্রদেশ প্রশিক্ষণ শিবির। আগামী ১৫ আগষ্ট দেশের স্বাধীনতা দিবসের দিনে রাজ্যের প্রত্যেকটি কার্যকর্তার বাড়িতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ১৩ ও ১৪ আগষ্ট এই উদ্যোগ নেবে দলের সকল কার্যকর্তা।
৩৩৩৪ টি বুথ রয়েছে রাজ্যে। সব বুথগুলিকে শক্তিশালী করে তোলার কাজ শুরু করবে। কর্মচারীদের বিষয়ে সরকার সহানোভুতিশীল।কর্মচারীদের দাবী দাওয়া যতটা সম্ভব মিটিয়ে দেবে সরকার। সরকারি কর্মচারীদের দেনা পাওনা নিয়ে কোন টাইম বাউন্ড রয়েছে কিনা ? জানতে চায় সাংবাদিকরা। উত্তরে তিনি জানান, সবই সরকার গুরুত্ত্ব দিয়ে দেখছে।


সম্প্রতি চারটি কেন্দ্রে উপ-নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে তিনটি কেন্দ্রে বিজেপি জয় পেয়েছে। এই নিরিখে জয়ের মার্জিন কি রয়েছে , বুথ লেভেল পর্যন্ত দলের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। ২৯ বছর পর যুবরাজনগর বিধানসভা কেন্দ্রটি এবার বিজেপি দল ছিনিয়ে আনতে পেরেছে।
দ্বিতীয় দিনের কার্যকারণী বৈঠকের শুরুতে একটি প্রস্তাব পেশ হয় এবং সেটি গৃহিত হয়। দেশের স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষ উদযাপন উপলক্ষে আজাদিকা আমৃত মহোৎসবের সময়ে গত ৭৫ বছরে দেশে রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী অনেকেই হয়েছেন। কিন্তু জনজাতি গোষ্ঠী থেকে রাষ্টপ্রতি পদ প্রার্থী এর আগে কেউ হন নি। এটা প্রথম বার দেশের কোন জনজাতি মহিলাকে এই পদে প্রার্থী করেছে বিজেপি দল। জনজাতি প্রদেশ মোর্চার পক্ষ্য থেকে একটি প্রস্তাব পেশ হয়। এই প্রস্তাবে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে ধন্যবাদ জানানো হয়। কারন এই পদের মাধ্যমে দেশের জনজাতিদের বিষেশ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.