শৈলেশের বিরুদ্ধে ৩ পিটিশনই ড় খারিজ হলো উচ্চ আদালতে!!

 শৈলেশের বিরুদ্ধে ৩ পিটিশনই ড় খারিজ হলো উচ্চ আদালতে!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-নৈশকালীন কারফিউ জারি থাকা সত্ত্বেও বিকট শব্দে ডিজে বাজিয়ে চলছিল বিয়ে বাড়ির অনুষ্ঠান।অগত্যা সেখানে হানা দিয়েছিলেন তৎকালীন সময়ে পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার জেলাশাসক ডা. শৈলেশ কুমার যাদব।একপ্রকার ভেস্তেও দিয়েছিলেন একের পর এক দু-দুটি বিয়ের অনুষ্ঠানকে।এ নিয়ে পরবর্তী সময় তার বিরুদ্ধে ত্রিপুরা উচ্চ আদালতে তিন তিনটি মামলা দায়ের করা হয়। বুধবার তার বিরুদ্ধে আনীত এই মামলাগুলির সবকটিই খারিজ করে দেয় উচ্চ আদালত।
ঘটনা, ২০২১ সালের ২৬ এপ্রিল। করোনাকালীন দিনগুলিতে সে সময় একদিকে যেমন জারি ছিল নৈশকালীন কারফিউ, তেমনি জারি ছিল ডিজেস্টার ম্যানেজমেন্ট অ্যাক্টও। সাথে ১৪৪ ধারা তো ছিলই। অতিমারির কারণে সে সময় রাজ্যের মুখ্যসচিব এক নোটিফিকেশনে ২০ এপ্রিল ২০২১ তারিখে ডিজেস্টার ম্যানেজমেন্ট অ্যাক্ট চালু করে দিয়ে জেলা ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটির চেয়ারম্যান করে দেন তৎকালীন সময়ে পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার জেলাশাসক ডা.শৈলেশ কুমার যাদবকে। জেলাশাসক সেই অনুযায়ী খবর পেয়ে সাথে সাথেই ছুটে যান রাজধানীর উত্তর গেট এলাকার দু-দুটি বিয়ে বাড়িতেই। বেআইনিভাবে রাত সোয়া এগারোটা নাগাদ বিয়ের অনুষ্ঠান চলতে দেখে প্রথমে তিনি বাধা দেন তাদের। পরে কর্ণপাত না করায় আইন প্রয়োগে দ্বিধাবোধ করলেন না ডা. শৈলেশ।
ঘটনার পর গত ৩ মে ২০২১ তার বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে প্রথম মামলাটি দায়ের করেন আইনজীবী ভাস্কর দেববর্মা। তার মামলাটি ছিল জনস্বার্থ
বিষয়ক, ৫/২০২১। এরপরই একে একে মাণিক্য কোর্ট বিয়ে বাড়িতে যে বিয়ে চলছিল সেই বিয়ের অনুষ্ঠান
থেকে পাত্রীর বাবা স্বপন কুমার দেব পৃথকভাবে আরও একটি রিট পিটিশন দাখিল করেন।যার নম্বর ছিল ৩৫০/২০২১।এটি ছাড়াও পার্শ্ববর্তী গোলাপ বাগান নামে অন্য আরও একটি বিয়ে বাড়িতে যে বিয়ের অনুষ্ঠান
চলছিল সেখানকার পুরোহিত সর্বানন্দ ঝাঁও আরও একটি রিট পিটিশন দাখিল করেন। যার নম্বর ৩৪৬/২০২১। মামলা দায়ের পর গত তিন বছরে ত্রিপুরা উচ্চ আদালতে অন্তত ৩০ বার উঠে এই মামলা।শুনানিও হয় অন্তত ৩ বার। মাননীয় আদালত এতে বাদী- বিবাদী উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে অবশেষে বুধবার প্রধান বিচারপতি অপরেশ কুমার সিং এবং বিচারপতি অরিন্দম লোধের ডিভিশন বেঞ্চ এক রায়ে তিনটি মামলাকেই খারিজ করে দেয়। মামলাগুলির বিস্তারিত জানাতে গিয়ে ডা. শৈলেশ কুমার যাদবের পক্ষে আইনজীবী সম্রাট কর ভৌমিক -জানান, এই ঘটনায় তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের একটিও সত্যতা খুঁজে পেলো না উচ্চ আদালত।যে ভিডিও ক্লিপিংসগুলি আদালতের সামনে তুলে ধরা হয় সেগুলিও ছিল সম্পূর্ণ এডিটেড ভিডিও।এছাড়াও ঘটনার পর বিয়ে বাড়ি থেকে পাত্র- পাত্রী উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজনকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয় বলে অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে।কিন্তু আদালতে তিনি এর নির্দেশ দিয়েছেন বলেও প্রমাণিত হয়নি।
বরিষ্ঠ আইনজীবী সম্রাট কর ভৌমিক বলেন, তৎকালীন সময়ে তার বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন দাখিলের পর সে সময়কার প্রধান বিচারপতি এ কুরেশি তৎক্ষণাৎ তাকে তার দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন।সেই অনুযায়ী তাকে জেলান্তরিতও করা হয়। পরে তার বিরুদ্ধে একের পর এক মোট তিন দফার তদন্ত কমিটি গঠন করে চালিয়ে যাওয়া হয় তদন্ত।এই রিপোর্টও জমা পড়ে আদালতে।তিনি আরও জানান, আসলে বিয়ে বাড়ির অনুমতি ছিল বলে যে দাবি করা হচ্ছিলো বারংবার, তা ছিল রাত দশটা অবধি।যে অনুমতি ছিল,তাতেও পাত্র-পাত্রী সহ সর্বাধিক ৫০ জন থাকতে পারবে।কিন্তু ডা. শৈলেশ যখন অভিযান চালান তখন বিয়ে বাড়িতে কম করেও ৭০ জনের উপস্থিতি দেখতে পান তিনি।দুটি বিয়ে বাড়ির ক্ষেত্রেই ছিল প্রায় একই অবস্থা।বিয়ে সম্পন্ন হয়নি বলে যে অভিযোগ উঠে তাতেও তিনি বলেন, আদালত এ বিষয়টিও দেখেছে।তার কথায়, সেদিন বিয়ের লগ্ন ছিল সন্ধ্যা ছটার সময়। সরকার পক্ষে এই মামলার আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট জেনারেল সিদ্ধার্থ শংকর দে।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.