শ্বাসনালি কেটে ১ ব্যক্তিকে খুন, আতঙ্ক জিরানীয়ায়

 শ্বাসনালি কেটে ১ ব্যক্তিকে খুন, আতঙ্ক জিরানীয়ায়
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

নিজ ঘরেই এক ব্যক্তিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে শ্বাসনালি কেটে এবং কাঠের ফাইল দিয়ে খুন করলো দুষ্কৃতীরা। এই রোমহর্ষক চাঞ্চল্যকর নৃশংস ঘটনাটি ঘটেছে জিরানীয়া থানাধীন এসএন কলোনী অফিসটিলা এলাকায়। মৃতের নাম কানাইলাল সাহা (৫৫)। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সকাল পৌনে নয়টা নাগাদ থানার খবর আসে, নিজ ঘরেই এক ব্যাক্তির মৃতদেহ পড়ে রয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে ছুটে বার থানার পুলিশ। পরবর্তী সময়ে থানার ওসি নারুগোপাল দেব, এসডিপিও হিমাদ্রি প্রসাদ দাস এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অবিনাশ রায় সহ বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। খবর দেওয়া হয় পুলিশ কুকুর, ফরেন্সিক টিম ও ফিঙ্গার প্রিন্ট বিশেষজ্ঞদের। তদন্তে নেমে পুলিশ ঘরের বাইরে থাকা কিছু চুল, একটি কাঠের ফাইল, একটি গামছা সহ কিছু জিনিস উদ্ধার করে ফরেন্সিক ল্যাবে পাঠায়। মৃত কানাই লাল সাহা গতকাল রাতে একটি বাড়িতে ছিলেন। খুনিরা একাকিত্বের সুযোগ নিয়েই তাকে নৃশংসভাবে খুন করে চম্পট দেয়। সোমবার সকালে তার স্ত্রী বাড়িতে ফিরে দেখে স্বামীর দেহ ঘরের মাটিতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। তার কান্না ও চিৎকারে ছুটে আসে এলাকাবাসী সহ মৃতের আত্মীয় পরিজনরা। মৃত কানাইলাল সাহার স্ত্রীর বয়ান অনুযায়ী গতকাল সকালে স্বামীকে রেখে তিনি মেয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন। আজ সকালে বাড়িতে এসেই দেখতে পান স্বামীর নিথর দেহ। পুলিশ জানায়, প্রতিদিন সকাল থেকেই মদমত্ত অবস্থায় থাকেন তিনি। ঝগড়া বিবাদ ছিল অনেক মানুষের সঙ্গেই। তবে পূর্বশত্রুতার জেরেই এই খুন হয়েছে কিনা তা প্রশ্নের। এদিকে, মৃতের স্ত্রী, পুত্র ও কন্যার কথা মোতাবেক কানাইলাল সাহা প্রায়শই বাড়িঘরে উৎপাত করতো। এমনকি লক্ষ্মীপুজোর দিন তিনি তার স্ত্রীকে পিটিয়ে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিলেন। এরপর থেকেই ভয়ে তার স্ত্রী দূর থেকেই স্বামীকে দেখে গিয়ে মেয়ের বাড়িতে থাকতেন। গতকাল দুপুরেও তিনি দূর থেকে স্বামীকে দেখেগিয়েছিলেন।
কিন্তু আজ সকালেই বাড়িতে ফিরে স্বামীর মৃতদেহ দেখে তার মাথায় বজ্রাঘাত নেমে আসে। পুলিশ ‘মৃতদেহটি যে অবস্থায় উদ্ধার করেছে তাতে প্রাথমিকভাবে পুলিশের ধারণা দুষ্কৃতীরা উঠানেই তাকে পিটিয়ে আধমরা করে ঘরের ভেতরে নিয়ে গিয়ে গলার নালি কেটে খুন নিশ্চিত করেছে। এমনকি মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য তার গোপনাঙ্গেও মারাত্মকভাবে আঘাত করেছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। এ ব্যাপারে এদিন রাত আনুমানিক পৌনে আটটা নাগাদ পুলিশ তিন-চারজনকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছে। এই খুনের পেছনে পরিবারের কোনও লোকজন জড়িত থাকতে পারে বলেও এলাকাবাসীর অভিমত। পুলিশের একটি সূত্রে জানা গেছে, যাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে তাদের মধ্যে রাতেই দুই-একজনকে আটক করতে পারে পুলিশ। উল্লেখ্য, জিরানীয়া থানা এলাকায় গত কিছুদিনের মধ্যে একের পর এক খুন কাণ্ডে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। কয়েক মাস আগেই এস এন কলোনী এলাকায় নিজ ঘরেই সন্ধ্যা রাণী কর্মকার নামে এক বৃদ্ধাকে হাত-পা বেঁধে নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুন করেছিল দুষ্কৃতীরা। এ ব্যাপারে পুলিশ মেয়ের জামাইকে আটক করলেও আদৌ সে খুনে জড়িত কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন এলাকাবাসীর।এদিকে, সম্প্রতি জয়নগর এলাকায় ইটভাট্টা সংলগ্ন স্থানে অজ্ঞাত পরিচয় এক বৃদ্ধার মৃতদেহ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। এ ঘটনায় ইটভাট্টার এক শ্রমিককে পুলিশ গ্রেপ্তার করলেও মৃতার পরিচয় এখনও জানতে পারেনি পুলিশ। অজ্ঞাত পরিচয় ওই বৃদ্ধাকে ধর্ষণ শেষেই অভিযুক্তরা খুন করেছে বলে পুলিশের একটি সূত্রে খবর। একের পর এক খুনের ঘটনায় উদ্বিগ্ন সচেতন নাগরিকরা। এলাকাবাসী অবিলম্বে কানাইলাল সাহার হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করার দাবি জানান ৷

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.