সংকটে আপ।।

গভীর সংকটে অরবিন্দ কেজরিওয়াল। বলা ভালো অরবিন্দ গভীর কেজরিওয়ালের সাথে সংকটে আম আদমি পার্টির ভবিষ্যৎও। দিল্লীতে আম আদমি পার্টির ভরাডুবির পরে এবার আম আদমি পার্টির ভবিষ্যৎ নিয়ে সন্দিহান রাজনৈতিক মহল। দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনে আপোশহীন এবং নির্ভীক লড়াই, আন্দোলনের গর্ভে জন্ম নিয়োছিলো আম আদমি পার্টি এবং এর ফলশ্রুতিতে দিল্লীতে পরপর ২ বার ক্ষমতার স্বাদ পেয়েছিলো আম আদমি পার্টি। এরপর পাঞ্জাবও দখল করে আম আদমি পার্টি। অরবিন্দ কেজরিওয়াল নামের এক নেতারও জন্ম হয়েছিলো আম আদমি পার্টির ব্যানারে। সেই আম আদমি পার্টির সর্বময় কর্তা অরবিন্দ কেজরিওয়াল এখন দুর্নীতির দায়ে জড়িয়ে জেল পর্যন্ত খেটে এসেছেন। এবার তার দলতো ডুবেছেই, নির্বাচনে নিজেও হেরে ভূত হয়ে অরবিন্দ কেজরিওয়াল এখন সিভিসি তদন্তের মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন। আগেই তিনি সিবিআই, ইডির তদন্তের জালে জড়িয়ে গিয়েছেন। এবার নতুনভাবে অরবিন্দ কেজরিওয়াল সেন্ট্রাল ভিজিলেন্স কমিশন (সিভিসি) -এর তদন্তের মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন। অরবিন্দ কেজরিওয়াল মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালে তার সরকারী বাসভবনকে রাজকীয় করার প্রয়াস নেন তিনি। কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এবং সংস্কার করা হয় তার সরকারী নিবাস। এ নিয়ে বিজেপি পরপরই অভিযোগ তোলে। বিজেপি তার সরকারী আবাসের নাম দেয় শিশমহল।সম্প্রতি ক্যাগ রিপোর্টে প্রকাশ পায় যে শিশমহল তৈরি করতে প্রায় ৩৩ কোটি টাকার আর্থিক অনিয়ম হয়েছে। এ নিয়েই এবার সিভিসি অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে জালে তুলতে চাইছে। বিজেপি বহু আগে থেকেই আম আদমি পার্টির তাবড় তাবড় নেতাদের ঘিরে ফেলার পরিকল্পনা ফাঁদে। কখনও বা লেফটেন্যান্ট গভর্নরকে দিয়ে, কখনও বা সিবিআই, ইডিকে দিয়ে আম আদমি পার্টির সমস্ত বড় নেতাকে গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠানো হয়। এবার নির্বাচনে হারার পর অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সাথে আম আদমি পার্টির ভবিষ্যৎ গভীর অন্ধকারে নিমজ্জিত হতে যাচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। নির্বাচনের কিছুদিন আগেই ফের আমআদমি পার্টির ৬ জন বিধায়ক ইস্তফা দিয়ে বিজেপির দিকে পা বাড়িয়ে রাখেন। এবার দিল্লী পুরসভার তিন কাউন্সিলর বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী দিনে আরও আম আদমি কাউন্সিলর দলে দলে বিজেপিতে শামিল হবেন। অর্থাৎ বিজেপি চাইছে সবদিক দিয়ে আম আদমি পার্টিকে বিনাশ করতে। একদিকে নেতাদের আইনি জালে ফেলা হচ্ছে-অন্যদিকে দলের নেতা কর্মীদের দল ভাঙিয়ে বিজেপিতে শামিল করানো হচ্ছে। সেজন্যই আম আদমি পার্টির ভবিষ্যৎ আগামীদিনে কী হতে চলেছে তা খোদায় মালুম। শোনা যাচ্ছে সরকার ভাঙার খেলা শুরু হয়ে গেছে। এখন একমাত্র পাঞ্জাবেই আম আদমি পার্টির সরকার রয়েছে। সেই আম আদমি পার্টির সরকার যদি পাঞ্জাবে ধরাশায়ী হয় তাহলে দলের বিনাশ কেউ ঠেকাতে পারবে না।
কেননা আম আদমি পার্টি দিল্লী ভিত্তিক পার্টি। অরবিন্দ কেজরিওয়াল, মণীশ সিশদিয়া, সত্যেন্দ্র জৈন, অতীশী, সঞ্জয় সিং-দের আগেই টাটা বাই বাই করে করে বেরিয়ে গেছেন আশুতোষ, কুমার বিশ্বাসদের মতো নেতারা। স্বাতী মালোয়ালও এখন বেসুরো। যেকোন সময় বিজেপির দিকে তিনি পা বাড়াবেন। সুতরাং ভবিষ্যতে আম আদমি পার্টির ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর সন্দিহান আপ নেতৃত্বই। হঠাৎ করে গজিয়ে ওঠা এক পার্টি যার মূল ভিত্তি ছিল দুর্নীতি রোধ করা, দুর্নীতি তাড়ানো, সেই পার্টির নেতৃত্ব যদি একের পর এক দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত হন তাহলে সেই দলের ভবিষ্যৎ যে আর বেশিদিন নেই তা হলফ করে বলে দেওয়া যায় এখন থেকেই। দিল্লী বিজয়ের পর এখন আপাতত বিজেপির লক্ষ্য পাঞ্জাব দখল এবং আম আদমি পার্টির বিধায়ক, নেতাদের বিজেপিতে শামিল করানো। দেখা যাক, আপাতত অরবিন্দ কেজরিওয়ালের উপর খাঁড়ার ঘা কী পরিমাণ নেমে আসে। সেই দিকেই নজর রাখতে হবে।