সংরক্ষণ নীতি লঙ্ঘন, প্রদ্যোতের হস্তক্ষেপে ঘুম ভাঙলো সরকারের।।

অনলাইন প্রতিনিধি :-সংরক্ষণ নীতি মানছে না রাজ্য সরকার। গত পাঁচ বছর ধরে সংরক্ষণ নীতি লঙ্ঘনের দৌলতে সরকারী নিয়োগ মাঝপথে বন্ধ হচ্ছে। একমাত্র এই সংরক্ষণ নীতি অমান্য করে নিয়োগ প্রক্রিয়ার জন্য গত সাড়ে তিন বছর ধরে রাজ্যে এসটিজিটি শিক্ষক পদে নিয়োগ হচ্ছে না। এমনকী টিসিএস, টিপিএস এবং টিপিএসসির বিভিন্ন নিয়োগ প্রক্রিয়াও আদালতে গিয়েছে। এরপরও হুঁশ ফিরলো না রাজ্য সরকারের। উল্টো গত সাত ফেব্রুয়ারী জুনিয়র পিআই নিয়োগের ক্ষেত্রেও ত্রিপুরা সরকারের এসটি, এসসি সংরক্ষণ নীতি পুরোপুরি লখন করে বিজ্ঞাপন দিল রাজ্য সরকার, যুব কল্যাণ ও ক্রীড়া দপ্তর। রাজ্য সরকারের এই ব্যর্থতার জন্য পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে এসে ঠেকেছে যে ৩০১টি জুনিয়র পিআই পদের নিয়োগ বাতিল হওয়ার পথে।তবে জুনিয়র পিআই নিয়োগের ক্ষেত্রে এসটি, এসসি সংরক্ষণ নীতি লঙ্ঘনের বিষয়টি নজরে আসতেই পদক্ষেপ নিলেন তিপ্রা মথার সুপ্রিমো প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ। শুধু তাই নয়, তার হস্তক্ষেপের পরই একপ্রকার ঘুম ভাঙলো রাজ্য সরকারের। এমনকী জুনিয়র পিআই নিয়োগে সংরক্ষণ নীতি লঙ্ঘনের বিষয়ে ক্রীড়ামন্ত্রী টিংকু রায়ের সাথে আলোচনা করেছেন প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ। যাতে রাজ্যের যুবক যুবতীদের চাকরি হয়। ক্রীড়ামন্ত্রী টিংকু রায়ও জুনিয়র পিআই নিয়োগের ক্ষেত্রে সংরক্ষণ নীতি সংশোধনের আশ্বাস দিয়েছেন।
তবে কেন রাজ্য সরকারের প্রত্যেকটি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নিয়োেগ নীতি, সংরক্ষণ নীতি লঙ্ঘন হচ্ছে? এ নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে।রাজ্য সরকারের এই ব্যর্থতার জন্য অধিকাংশ নিয়োগ প্রক্রিয়া আদালতে যাচ্ছে। আর আদালতে গিয়ে মুখ পুড়ছে রাজ্য সরকারের। এমনকী একটি নিয়োগ প্রক্রিয়াও পাঁচ বছরের আগে শেষ হচ্ছে না।ফলে রাজ্যের বেকার যুবক যুবতীদের চাকরিজীবন থেকে পাঁচ থেকে আট বছর গায়েব হচ্ছে। এরপর চাকরিতে যোগদানের পর আবার পাঁচ বছর ফিক্সড পে স্কেলে চাকরি বাধ্যতামূলক। তাই অবসরকালীনসময়েও আর্থিকভাবে বঞ্চিত রাজ্যের বেকার। এমনকী চাকরির ফুল বেনিফিটও তারা পাচ্ছে না।এদিকে, তিপ্রা মথার সুপ্রিমো প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ আজ এক চিঠিতে ক্রীড়ামন্ত্রী টিংকু রায়কে বলেন, জুনিয়র পিআই নিয়োগে সংরক্ষণ নীতি মানা হয়নি। ত্রিপুরা সরকারের সংরক্ষণ নীতি অনুযায়ী মোট শূন্যপদের একত্রিশ শতাংশ আসন উপজাতি প্রার্থীদের জন্য এবং সতেরো শতাংশ এসসি প্রার্থীদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে। অবাক করার বিষয় হলো, ৩০১টি জুনিয়র পিআই নিয়োগের ক্ষেত্রে এসটি প্রার্থীদের জন্য মাত্র আঠারোটি আসন রাখা হলো। এক্ষেত্রে মাত্র ছয় শতাংশ সংরক্ষণ নীতি কার্যকর হলো। যদিও একত্রিশ শতাংশ সংরক্ষণ নীতি অনুযায়ী এসটি প্রার্থীদের শূন্যপদ হবে তিরানব্বইটি। একইভাবে এসসি প্রার্থীদের ক্ষেত্রে আইন লঙ্ঘন করে বারো শতাংশ সংরক্ষণ নীতি মোতাবেক পঁয়ত্রিশটি শূন্যপদ রাখা হলো।অথচ ত্রিপুরা সরকারের আইন অনুযায়ী সতেরো শতাংশ সংরক্ষণ নীতি মোতাবেক এসসি প্রার্থীদের শূন্যপদ হবে একান্নটি। যা মানা হলো না।
প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ বলেন, এভাবে রাজ্যের এসটি এবং এসসি যুবক যুবতীদের বঞ্চিত করার সুযোগ নেই। রাজ্য সরকারকে ভুল সংশোধন করে পুনরায় বিজ্ঞাপন প্রকাশ করতে হবে। রাজ্যের সকলস্তরের বেকার যুবক যুবতীদের স্বার্থে আমরা রাজপথে থাকবো। তিনি বলেন, বিভিন্ন নিয়োেগ প্রক্রিয়ায় এসব কেন হচ্ছে তা আমাদের ভাবা উচিত। বেকার স্বার্থে ভুল সংশোধন করতে হবে।