সমকামী সম্পর্ককে স্বীকৃতি, বিবাহে না।।

এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-সমকামিতাকে স্বীকৃতি দিলেও, সুপ্রিম কোর্ট ৩-২ সংখ্যাগরিষ্ঠ রায়ে সমলিঙ্গ বিবাহকে স্বীকৃতি দিলো না। প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ মঙ্গলবার বলেন, প্রচলিত আইন সমলিঙ্গ বিবাহকে স্বীকৃতি দেয় না। সেই আইন তৈরির ক্ষমতা রয়েছে একমাত্র দেশের সংসদের। তবে পাঁচ বিচারপতিই একমত হয়ে জানিয়েছেন, সমকামী সম্পর্কে থাকা ব্যক্তিদের অধিকার নিশ্চিত করতে আইনে কিছু সংশোধনীর জন্য কেন্দ্রীয় সরকার দ্বারা প্রস্তাবিত উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন কমিটি অগ্রসর হোক।প্রধান বিচারপতি ছাড়া বিচারপতি এস কে কল সমলিঙ্গ বিবাহকে স্বীকৃতি দেওয়া এবং দত্তক নেওয়ার পক্ষে রায় দিলেও বিচারপতি রবীন্দ্র ভাট, বিচারপতি হিমা কোহলি ও বিচারপতি পি এস নরসিংহ তার বিরোধিতা করেন। এর ফলে সমলিঙ্গ বিবাহ এবং এসব যুগলের ক্ষেত্রে সন্তান দত্তক নেওয়া আইন বৈধতা পায়নি। তবে পাঁচ বিচারপতিই সমকামিতাকে স্বীকৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, তাদের অধিকার নিশ্চিত করতে কেন্দ্রকে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। রেশন কার্ড, পেনশন, গ্র্যাচুইটি ও উত্তরাধিকার সংক্রান্ত যে সব বিষয়ে সমকামী বা রূপান্তরকামীদের সমস্যায় পড়তে হয়,তার নিরসন করতে হবে। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, সমকামীদের ক্ষেত্রে কোনও বৈষম্য থাকা উচিত নয়।তাদের যে কোনও রকম হেনস্তা সরকারকে বন্ধ করতে হবে।সমকামী বা এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের কাকে যৌন পরিচয় জানার জন্য থানায় তলব করা যাবে না। কেউ গৃহত্যাগ করলে জোর করে তাদের ফিরিয়ে আনা যাবে না।এই গোষ্ঠীর কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ গ্রহণের আগে পুলিশকে প্রাথমিকভাবে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে
হবে। হুট করে এমন কিছু করা যাবে না যাতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির অধিকারহরণ হয় বা সম্মানহানি ঘটে।প্রধান বিচারপতি বলেন,কে কাকে জীবনসঙ্গী করবেন,তা তাদের অধিকার।সমলিঙ্গ বিয়েকে ‘স্পেশাল ম্যারেজ অ্যাক্ট’-এর আওতায় স্বীকৃতি দেওয়ার দাবিতে মামলাকারীদের হয়ে সুপ্রিম কোর্টে জোরালো সওয়াল করেছিলেন মুকুল রোহতগি,অভিষেক মনু সিংভি, গীতা লুথরা,আনন্দ গ্রোভার, মেনকা গুরুস্বামীর মতো নামি আইনজীবীরা।
কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার তার তীব্র বিরোধিতা করে।কেন্দ্রের বক্তব্য তুলে ধরার সময় সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন,এ বিষয়ে আইন প্রণয়নের ক্ষমতা একমাত্র দেশের সংসদেরই আছে। তিনি বলেন, এই অসম বিয়ে অথবা সহাবস্থান শহুরে ও অভিজাতদের ধারণা। সমলিঙ্গ বিয়েকে স্বীকৃতি দেওয়া হলে সমাজে নানা রকম সমস্যা ও জটিলতার সৃষ্টি হবে।নাগরিক স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা এ বিষয়ে একেকজন একেক ধরনের মন্তব্য করেন।পাঁচ বিচারপতি মোট চারটি রায় দেন।প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় তার রায়ে বলেন, বিবাহ একটি প্রতিষ্ঠান, তবে তা অনড়, অটল ও স্থিতিশীল নয়।তাতে বিভিন্ন সময় নানা বিবর্তন ঘটে।সমকাম শুধু শহুরে বা অভিজাত সমাজের ধারণাও নয়।যুগ যুগ ধরে দেশে দেশে তা চলে আসছে।তবে সমলিঙ্গ বিয়েকে স্বীকৃতি দিতে বিশেষ বিবাহ আইনে পরিবর্তন করা হবে কিনা, সে বিচার সংসদকেই করতে হবে।তিনি বলেন, সব ধরনের মানুষেরই অধিকার আছে নিজের জীবনের নৈতিকতা বিচার করার।বেঞ্চ মনে করেন, সমকামিতা বৈধ। সমকামীদের প্রতি কোনও বৈষম্য থাকা উচিত নয়। বিচারপতি এস কে কল বলেন, সমকামী যুগল বা এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের জন্য এক বৈষম্যবিরোধী আইন থাকা দরকার।

Dainik Digital

Share
Published by
Dainik Digital

Recent Posts

নিগো – অন্ধ প্রশাসন!!

নিগো বাণিজ্যের রমরমা চালানোর জন্যই কি ১৮ সালে রাজ্যের মানুষ বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় বসিয়েছিলো?রাজ্যের আকাশ…

11 hours ago

বিমানযাত্রীর মর্মান্তিক মৃত্যু নিয়ে পুলিশের তদন্ত শুরু!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-এয়ারইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের কর্মীর চরম গাফিলতি ও উদাসীনতার কারণে রীতা বণিক (৫৯) বিমান যাত্রীর…

11 hours ago

হরিয়ানাঃ পাল্লা কার পক্ষে?

হরিয়ানা কি বিজেপির হাত থেকে ফসকে যাচ্ছে?শাসক বিজেপির হাবভাব দেখে তেমনটাই অনুমান করছে রাজনৈতিক মহল।প্রধানমন্ত্রী…

1 day ago

রাজধানীতে চাঁদার জুলুমে অতিষ্ঠ মানুষ!!

অনলাইন প্রতিনিধি:-মুখ্যমন্ত্রীডা. মানিক সাহার নির্বাচনি এলাকার আপনজন ক্লাবের চাঁদার নামে বড় অঙ্কের তোলাবাজির অভিযোগের রেশ…

2 days ago

ইন্ডিয়ান বুকে রাজ্যের মেয়ে ঝুমা!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-ইচ্ছে ছিলো অনেক আগে থেকেই। অবশেষে নিজের ইচ্ছেকেই বাস্তবে পরিনত করলো ঝুমা দেবনাথ।…

2 days ago

সুশাসনে আইনশৃঙ্খলা!

রাজ্যে কি সত্যিই আইনের শাসন রয়েছে?সাধারণ মানুষ কিন্তু প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে।সরকার বলছে রাজ্যে সুশাসন…

2 days ago