Categories: দেশ

সমীক্ষায় আত্মবিশ্বাসের ছাপ নেই

এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

সরকারের মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ভি অনন্ত নাগেশ্বরণ মুখে স্বস্তির বার্তা দিলেন। বললেন, অর্থনীতির মন্দার দিনের অবসান ঘটেছে। এমনকী সেই মন্দা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল, সেই পর্বও সমাপ্ত। এবার আশা করা যায় আগামীদিনে শুধুই ইতিবাচক আলোর সূচনা। তিনি এই দাবি করলেও, মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টার তৈরি করা আর্থিক সমীক্ষায় কেন্দ্রীয় সরকারের দৃপ্ত আত্মবিস্বাসের ছাপ বিশেষ পাওয়া গেল না।
বরং আশাব্যঞ্জক একঝাঁক পরিসংখ্যান শোনানো হলেও, আদতে এখনও পর্যন্ত আশা নিরাশার দোলাচল যে অব্যাহত সেকথা আর্থিক সমীক্ষায় স্পষ্ট। প্রথমত আর্থিক বৃদ্ধিহারের ঘোষণা যথেষ্ট সতর্ক। গত বছরের আর্থিক সমীক্ষায় বলা হয়েছিল, সাড়ে আট শতাংশ পর্যন্ত হবে জিডিপি বৃদ্ধির হার বৃদ্ধি। অথচ তারপর বিগত বছরে কয়েক মাস পর পর দেখা গিয়েছে যে, আর্থিক বৃদ্ধিহার সম্পর্কে অর্থমন্ত্রক শ অথবা রিজার্ভ ব্যাঙ্ক পিছিয়ে এসেছে। বলা হয়েছে খুব বেশি হলে সাত শতাংশ হবে। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ৬.৮ শতাংশও বলেছে। সেই প্রেক্ষিতে এবার যখন আর্থিকভাবে চাঙ্গা হওয়ার বার্তাই দিচ্ছে অর্থনীতি, তখন তো ২০২৩-২৪ আর্থিক বছরে আরও বেশি করে জিডিপির পূর্বাভাস দেওয়াই ছিল স্বাভাবিক। সেটা হলো না। বরং এবার কমিয়েই দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে গড়ে সাড়ে ছয় শতাংশ হতে পারে আর্থিক বৃদ্ধিহার। ৬ থেকে ৬.৮ শতাংশ। উৎপাদন সেক্টর গত তিনমাসে ঘুরে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছে। প্রায় অনেকটাই বৃদ্ধিহার প্রবণতা বেড়েছে। মূল্যবৃদ্ধির হারও অবশেষে স্বস্তি দিয়েছে। কারণ খাদ্যশস্য ও অন্য খাদ্যপণ্যের দাম তথা সবজির দাম মূল্যবৃদ্ধির হারকে সাত শতাংশের উপরে পৌঁছে দিয়েছিল এক সময়। সেটা কমেছে বিগত দুমাসে। কিন্তু এখনও যে সম্পূর্ণ স্বস্তির শ্বাস ফেলার সময় আসেনি, সেটা স্বীকার করছে আর্থিক সমীক্ষা। বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি আবার ঘোরালো হলে কিংবা কোভিড যদি পুনরায় চিনের সীমানা পেরিয়ে আঘাত হানে বহির্বিশ্বে তাহলে পুনরায় মূল্যবৃদ্ধি ধাক্কা খাবে। সুতরাং সতর্ক থাকতেই হচ্ছে। এমনকী রেপো রেট যে এখনই কমে যাবে এবং সাধারণ মানুষের ইএমআই সঙ্কট কিছুটা কমবে তেমন সম্ভাবনা আপাতত কম। অন্তত আগামী আর্থিক বছরের প্রথমার্ধ পর্যন্ত এরকমই সতর্ক অবস্থান থাকবে। তবে আর্থিক সমীক্ষা বারংবার যে সম্ভাব্য সমস্যা নিয়ে প্রবল উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সেটি হলো আমদানি ও রপ্তানি বাণিজ্যের ঘাটতি। যেহেতু রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধের জেরে এবং বিশ্বের আর্থিক মন্দার কারণের জোড়া ফলায় বিদেশি বাজারে মন্দা ক্রমবর্ধমান, তাই ভারতের রপ্তানি বাণিজ্য কমছে। আমদানি বাড়ছে। এটাই বিপদ বাণিজ্য ঘাটতিকে চরমে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে। আর এই প্রবণতা চলার অর্থ ডলারের বিনিময়ে টাকার মূল্য আবার হু হু করে কমবে। যা অর্থনীতিকে প্রবলভাবে সমস্যায় ফেলবে। এই ফ্যাক্টরগুলি থেকে বেরিয়ে আসতে পারলে ২০২৩ সাল থেকেই আবার – অর্থনীতি স্বাভাবিক হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

Dainik Digital

Share
Published by
Dainik Digital

Recent Posts

হৃদরোগে হঠাৎ মৃত্যু: কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের কারণ, লক্ষণ, প্রতিরোধ ও চিকিৎসা!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-বর্তমান যুগে হৃদরোগ জনিত সমস্যা ক্রমশ বেড়ে চলেছে।এর মধ্যে সবচেয়ে বিপজ্জনক ও জীবনঘাতী…

19 hours ago

প্রশ্নের মুখে বৈধ সীমান্ত বাণিজ্য, আমদানির তুলনায় রপ্তানি নামমাত্র, পরিস্থিতি চিন্তাজনক!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-বর্তমানে রাজ্যেনয়টি ল্যান্ড কাস্টম স্টেশন রয়েছে।কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এই নয়টি ল্যান্ড কাস্টম স্টেশনকে…

20 hours ago

আঠাশের বিধানসভা নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধ থাকার বার্তা প্রদ্যোতের!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-২০২৮ সালে বিধানসভা নির্বাচনেও আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারলেই, আমাদের…

20 hours ago

হার্ভেকে নকআউট করে তপনের সেমিতে সংহতি!!

অনলাইন প্রতিনিধি:-তপন স্মৃতি নকআউট ক্রিকেটের দ্বিতীয় দল হিসাবে সেমিফাইনালে হার্ভেকে নকআউট করে তপনের সেমিতে সংহতি!!খেলার…

20 hours ago

সতর্কতাই বাঞ্ছনীয়!!

নজিরবিহীন গরমের মুখোমুখি রাজ্য। মার্চ মাসের শেষ দিকে গরমের এই প্রকোপ এককথায় নজিরবিহীন।এজন্য আবহাওয়া দপ্তরকে…

20 hours ago

খুশির ঈদ উদযাপন

অনলাইন প্রতিনিধি :-"ঈদুল ফিতর" যার অর্থ হলউপবাস ভাঙার আনন্দ। মুসলমানদের সবচেয়ে বড় দুটো ধর্মীয় উৎসবের…

2 days ago