সমুদ্রসীমার নিরাপত্তায় ইতিহাস সৃষ্টি করলেন নৌবাহিনীর মহিলা পাইলটরা

 সমুদ্রসীমার নিরাপত্তায় ইতিহাস সৃষ্টি করলেন নৌবাহিনীর মহিলা পাইলটরা
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

সমুদ্রসীমার নিরাপত্তায় ইতিহাস সৃষ্টি করলেন নৌবাহিনীর মহিলা পাইলটরা । ভারতীয় নৌবাহিনীর দুই পাইলট সহ পাঁচজন মহিলা অফিসার ডর্নিয়ার বিমান থেকে আরব সাগর পর্যবেক্ষণের মিশন শেষ করে ফিরেছেন শুক্রবার সকালে । সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এই বিশেষ বিমানযাত্রায় একজনও পুরুষ সহকর্মী ছিলেন না । এর আগে মহিলা পাইলটের দায়িত্বে যে কটি দীর্ঘসময় ব্যাপী বিমান পর্যবেক্ষণ হয়েছে তার প্রতিটিতেই নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব ছিলেন পুরুষ নৌসেনারা । গত ২৫ মে ৮৮ তম ‘ মন কী বাত ‘ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ইঙ্গিত দিয়েছিলেন সাধারণ জীবনের বাইরে সেনাবাহিনীতেও পুরুষদের সঙ্গে কাজ করবেন মহিলারা । ভারত পাকিস্তান তো বটেই , বাংলাদেশ সীমান্ত নজরদারিতেও মহিলারা সমান দক্ষতায় নজরদারি চালাচ্ছে । এমনকি ভারতীয় বায়ুসেনাতেও পাইলট হিসাবে মহিলারা কাজ করতে শুরু করে দিয়েছিল গত বছর মে মাস থেকে । এবার আরব সাগরের নজরদারির দায়িত্ব পড়ল মহিলা সেনাবাহিনীর উপর । ভারতীয় নৌবাহিনীর মুখপাত্র , কমান্ডার বিবেক মাধওয়ালের জানিয়েছেন , গুজরাতের পোরবন্দরে আইএনএস ৩১৪ নেভাল স্কোয়াড্রন থেকে উত্তর আরব সাগরে মেরিটাইম রিকনেসান্স এবং নজরদারি মিশন সম্পন্ন করেছে পাঁচজন মহিলা অফিসার । যার মধ্যে রয়েছেন দুই পাইলট , একজন কো – পাইলট এবং প্রযুক্তি সহায়তায় দুই মহিলা অফিসার । এই বিমানের মিশন কমান্ডার ছিলেন লেফটেন্যান্ট আঁচল শর্মা । এই মিশনের কৌশলগত ও সেন্সর অফিসার ছিলেন লেফটেন্যান্ট পূজা পান্ডে এবং সাব – লেফটেন্যান্ট পূজা শেখাওয়াত । প্রযুক্তিগত সহযোগিতায় ছিলেন লেফটেন্যান্ট শিবাঙ্গী এবং লেফটেন্যান্ট অপূর্ব গীতে ।এই মিশনের পাশাপাশি ভারতীয় নৌবাহিনীর এই মহিলা অফিসাররা সব বাধা ভেঙে ইতিহাস সৃষ্টি করলেন । নৌবাহিনীর একজন মুখপাত্রের মতে , পাঁচ মহিলা সেনা আধিকারিক এই ঐতিহাসিক মিশনের জন্য কয়েক মাস গ্রাউন্ড ট্রেনিং এবং ব্রিফিং করেছেন । আইএনএস ৩১৪ হল ভারতীয় নৌবাহিনীর ফ্রন্টলাইন নেভাল এয়ার স্কোয়াড্রন যেখান থেকে ডর্নিয়ার বিমান ২২৮ মেরিটাইম রিকনেসান্স যুদ্ধ বিমানটি একযোগে আরব সাগরের বুকে তদারকি করতে পারবে । সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় , আকাশপথে কোন সন্দেহজনক বিষয় দেখলেই ডর্নিয়ার বিমানের মাধ্যমে সাগরের বুকে টহলদারি যেকোনো নৌবাহিনীর জাহাজে সংকেত চলে আসবে । যার ফলে অবাঞ্চিত কোন বিষয় নিয়ে ভারতের স্থলভাগে প্রবেশ করা সম্ভব নয় । ৯/১১ জঙ্গি হানায় মুম্বাইতে প্রবেশের জন্য আজমল কাসভরা ব্যবহার করেছিল আরব সাগরের জলপথ । তাই গত প্রায় দেড় দশক ধরেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের লক্ষ্য আরব সাগর , বঙ্গোপসাগর এবং ভারত মহাসাগরের নজরদারি বাড়ানো সেই জন্য শুধু নৌ বাহিনী নয় বিমান বাহিনীকেও মোতায়ন করা । সাগরের বুকে এতদিন বিমান বাহিনীর দায়িত্বে ছিলেন পুরুষ সেনাকর্মীরা এবার তাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে টহলদারির দায়িত্বে নামলেন মহিলা সেনা কর্মীরাও । ভারতীয় নৌবাহিনীর মতে , এই ধরনের সামরিক – বিমান চালনায় মহিলাদের জন্য আরও দায়িত্ব ও চ্যালেঞ্জিং ভূমিকায় জোগাবে । প্রকৃত অর্থে এই উড়ান নারী – শক্তির চেতনাকে পূর্ণ করেছে বলে সেনাবাহিনীর তরফে জানানো হয়েছে । আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই ভারতীয় সেনাবাহিনীতে মহিলাদের জন্য এক বিরাট পরিবর্তন আসতে চলেছে । শুধু নৌবাহিনী কিংবা বিমান বাহিনী নয় , স্থলবাহিনীর ক্ষেত্রেও মহিলাদের জন্য আসন সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে । কেন্দ্রীয় সরকার ‘ অগ্নিপথ ‘ পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেছেন সেখানেও মহিলাদের জন্য এক তৃতীয়াংশ আসন সংরক্ষিত থাকবে । অগ্নিপথ প্রকল্পের রেজিস্ট্রেশনে , অগ্নিবীর হওয়ার জন্য মহিলাদের জন্য আশি হাজারেরও বেশি আবেদন জমা পড়েছে । নৌবাহিনীতে অগ্নিবীরের প্রথম ব্যাচে তিন হাজারটি শূন্যপদ রয়েছে , যার মধ্যে ২০ শতাংশ মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত ।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.