এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

মঙ্গলবার শেষ হলো দুই দিন ব্যাপী জি-২০ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির বিজ্ঞান সম্মেলন।ঊনিশটি দেশ এবং একটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রায় দেড়শ প্রতিনিধি,আলোচনার টেবিলে বসে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বার্থে পৃথিবীকে আরও বেশি সবুজ কী করে করা যায়- এর সমাধান সূত্র খুঁজলেন।


আগরতলার হাপানিয়াস্থিত আন্তর্জাতিক মেলা প্রাঙ্গণের ইণ্ডোর হলে আয়োজিত দুইদিনের সম্মেলনে গ্রীণ হাইড্রোজেন, সমুদ্র থেকে প্রাপ্ত শক্তি এবং সেই শক্তি কীভাবে সংরক্ষণ করা যায়- এ নিয়ে বিজ্ঞানীরা বিস্তর আলোচনা করেছেন। ত্রিপুরার মতো ছোট রাজ্যে প্রথমবার এতবড় মেগা ইভেন্ট সফলভাবে সম্পন্ন করতে পেরে স্বাভাবিকভাবেই উচ্ছ্বসিত রাজ্য। যার ফলশ্রুতিতে মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা নিজেই দাবি করেছেন, রাজ্যের জন্য সম্ভাবনার দরজা খুলে দিতে চলেছে জি-টুয়েন্টি বিজ্ঞান সামিট।


সম্ভাবনার সেই ফসল চলতি বছরের শেষ কিংবা আগামী বছরের শুরুর দিকে বিষয়গুলি উপলব্ধিতে আসবে। মানে দারুণভাবে লাভবান হতে চলেছে ত্রিপুরা। সাংবাদিক সম্মেলন করে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেছেন, আগে ত্রিপুরার অবস্থান চিহ্নিত করতে পারতেন না দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ। এখন সেই পরিস্থিতি নেই। জি-টুয়েন্টি বিজ্ঞান সম্মেলনের পর গোটা বিশ্ব জানবে ত্রিপুরার কী কী রয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই বাড়বে রাজ্যের গুরুত্ব। জি-টুয়েন্টি বিজ্ঞান সম্মেলনে ইনভেস্টরস মিটও হয়েছে। সেখানে অংশ নিয়েছেন বিভিন্ন দেশের বিনিয়োগকারীরা।


এই বৈঠকেও ইতিবাচক সাড়া পেয়েছে রাজ্য- এমনটাই দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, বিনিয়োগের বিরাট সম্ভাবনা রয়েছে। অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করেছেন ত্রিপুরায় বিনিয়োগের। খুব শীঘ্রই সাক্রমের মৈত্রী সেতু উদ্বোধন হবে। তা হতে চলেছে দক্ষিণ এশিয়ার প্রবেশদ্বার। বিষয়টি বুঝতে পেরেই বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়ছে। রাজ্যে উৎপাদিত বাঁশকে কেন্দ্র করে ভিয়েতনামের প্রতিনিধিরা রাজ্যে বাঁশ শিল্প স্থাপনে প্রস্তাব দিয়েছেন।মুখ্যমন্ত্রীর আরও দাবি, বিনিয়োগকারীদের সম্মেলনে রাজ্যে হাসপাতাল স্থাপন, ফুড প্রসেসিং সেন্টার, পর্যটন, আইটি, ফার্মাসিউটিক্যাল, ইনস্টিটিউট, ব্যাম্বো ইণ্ডাস্ট্রি, চা, রাবার শিল্প, হোটেল, ইণ্ডাস্ট্রি, এমনকী রাজ্যে মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল গড়ে তোলার উপর গুরুত্ব দিয়েছেন। আগামীদিনে বাঁশ থেকে গ্রীণ হাইড্রোজেন উৎপাদন করার পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে-এমনটাই দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা। কিন্তু মূল প্রশ্ন হচ্ছে, এমন বহু সম্ভাবনা, এমন বহু পরিকল্পনার কথা রাজ্যবাসী এর আগে বহুবার শুনেছেন। রাজ্যবাসী শুনেছেন বহুক্ষেত্রে রাজ্যকে স্বয়ম্ভর করে তোলার কথা। গত ত্রিশ বছর ধরে মুখে মুখে বহু শিল্প স্থাপনের কথা শুনেছেন রাজ্যবাসী। ফলে মানুষের বিশ্বাস ও ভরসার জায়গাটা আজ বড় নড়বড়ে হয়ে গেছে। এই দায় কিন্তু মানুষের নয়। এই দায় তাদের, যারা মানুষকে আকাশের চাঁদ হাতে পাইয়ে দেওয়ার স্বপ্ন দেখান । তবুও মানুষ বিশ্বাস করেন। তবুও মানুষ স্বপ্ন দেখেন। কারণ একটাই, হয়ত একদিন ঠিকই স্বপ্ন সফল হবে এই আশায়। তাই প্রথমবারের মতো জি-টুয়েন্টি গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির বিজ্ঞান সামিট আয়োজন করে, ত্রিপুরার ভবিষ্যৎ নির্মানের যে সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে তা যেন প্রকৃত অর্থেই বাস্তবায়িত হয়। ত্রিপুরাবাসীর এটাই প্রত্যাশা থাকবে।

Dainik Digital

Recent Posts

নিগো – অন্ধ প্রশাসন!!

নিগো বাণিজ্যের রমরমা চালানোর জন্যই কি ১৮ সালে রাজ্যের মানুষ বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় বসিয়েছিলো?রাজ্যের আকাশ…

11 hours ago

বিমানযাত্রীর মর্মান্তিক মৃত্যু নিয়ে পুলিশের তদন্ত শুরু!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-এয়ারইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের কর্মীর চরম গাফিলতি ও উদাসীনতার কারণে রীতা বণিক (৫৯) বিমান যাত্রীর…

11 hours ago

হরিয়ানাঃ পাল্লা কার পক্ষে?

হরিয়ানা কি বিজেপির হাত থেকে ফসকে যাচ্ছে?শাসক বিজেপির হাবভাব দেখে তেমনটাই অনুমান করছে রাজনৈতিক মহল।প্রধানমন্ত্রী…

1 day ago

রাজধানীতে চাঁদার জুলুমে অতিষ্ঠ মানুষ!!

অনলাইন প্রতিনিধি:-মুখ্যমন্ত্রীডা. মানিক সাহার নির্বাচনি এলাকার আপনজন ক্লাবের চাঁদার নামে বড় অঙ্কের তোলাবাজির অভিযোগের রেশ…

2 days ago

ইন্ডিয়ান বুকে রাজ্যের মেয়ে ঝুমা!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-ইচ্ছে ছিলো অনেক আগে থেকেই। অবশেষে নিজের ইচ্ছেকেই বাস্তবে পরিনত করলো ঝুমা দেবনাথ।…

2 days ago

সুশাসনে আইনশৃঙ্খলা!

রাজ্যে কি সত্যিই আইনের শাসন রয়েছে?সাধারণ মানুষ কিন্তু প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে।সরকার বলছে রাজ্যে সুশাসন…

2 days ago