সময়ের নিরিখে রাজ্যেও জরুরি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল
দৈনিক সংবাদ অনলাইন, অমরপুর।। সময়ের তাগিদে এবং রাজ্যের মানুষের স্বার্থে ও রাজ্যের অর্থনৈতিক বুনিয়াদ পাকাপোক্ত করার লক্ষ্যে ত্রিপুরা রাজ্যে একটি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল গড়ে তোলা একান্ত প্রয়োজন। রাজ্যের অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞ থেকে শুরু করে সমাজের এবং প্রশাসনিক স্তরে এমন কি প্রতিবেশী বাংলাদেশের নাগরিক, যারা এরাজ্যের রেল স্টেশন ও বিমানবন্দর ব্যবহার করে প্রতিনিয়ত ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে চিকিৎসা পরিষেবা নিতে যাচ্ছেন, তাদের সকলের এমটাই অভিমত।
তাছাড়া রাজ্যে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল গড়ে তোলা হলে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভড়পুর ত্রিপুরায় মেডিক্যাল ট্যুরিজম কনসেপ্ট দারুণ ভাবে সফলতা পাবে এবং রাজ্যের পর্যটন ক্ষেত্রের বিকাশ হবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
দীর্ঘদিনের পর্যবেক্ষণে লক্ষ্য করা গেছে যে শিলচর, কলকাতা,চেন্নাই, ব্যাঙ্গলোর, হায়দরাবাদ ইত্যাদি শহর গুলিতে অবস্হিত বিশেষ বিশেষ স্বাস্হ্য কেন্দ্র ও হাসপাতাল গুলিতে গুরুতর রোগের চিকিৎসার জন্য নির্ভরশীলতা বেশী এই রাজ্যের এবং প্রতিবেশী দেশের মানুষদের । যদিও রাজ্য সরকার সীমিত ক্ষমতা ও দুর্বল পরিকাঠামোর মধ্য দিয়েও রাজ্যবাসীকে যথাসাধ্য গুনমান সম্পন্ন স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানের এবং স্বাস্থ্য পরিষেবার মানোন্নয়নের চেষ্টা করে যাচ্ছে। কিন্তু এটাই যথেষ্ট নয়।
সম্প্রতি ত্রিপুরা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত এক সেমিনারেও বিষয়টি আলোচনায় উঠে আসে। সেমিনারে বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজ্য সরকারের সচিব তথা রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক কিরন গিত্যে বলেন, রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের যৌথ উদ্যোগে ত্রিপুরায় সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল গড়ার উপযুক্ত প্ল্যাটফর্ম তৈরি করার চেষ্টা চলছে। তিনি আরও বলেন রাজ্যের বিভিন্ন এলাকা থেকে এবং প্রতিবেশী দেশ থেকে আগরতলার হাসপাতাল গুলিতে প্রতিদিনই স্বাস্থ্য পরিষেবার সুবিধা নিতে মানুষ আসছেন ঠিকই।
কিন্তু যতক্ষণ সুপার স্পেশালিস্ট ডাক্তার নিয়োগ করা সম্ভব হবে না, ততক্ষণ সুপার স্পেশালিটি স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদান করা কঠিন।
বর্তমান সময়ে চিকিৎসার পাশাপাশি পর্যটন (Medical tourism concept) একটি গুরুত্বপূর্ণ কনসেপ্ট। এই কনসেপ্টটি ত্রিপুরা রাজ্যের জন্য প্রাসঙ্গিক এবং অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ শিলচর,কলকাতা সহ বিভিন্ন শহরের সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল গুলিতে রাজ্যের কঠিন রোগাক্রান্তরাই জীবন বাঁচানোর তাগিদে ছুটে যাচ্ছেন। রাজ্যের মধ্যে সেই সুবিধা থাকলে নিশ্চয়ই কেউ বহিঃরাজ্যে চিকিৎসা পরিষেবার জন্য যেতো না। তাছাড়া প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশের নাগরিকরাও রাজ্যের রেল স্টেশন ও আগরতলা বিমানবন্দর ব্যবহার করে কলকাতা সহ ভারতবর্ষের অন্যান্য শহরে চিকিৎসার জন্য অহরহ আসা যাওয়া করছেন। ত্রিপুরা রাজ্যে যদি এইমসের ধাচে ওই ধরনের স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানের পরিকাঠামো গড়ে তোলা যায় তাহলে কেউই আর কলকাতা,দিল্লি, চেন্নাই ছুটবে না। আর সেটা হলেই এরাজ্যে মেডিক্যাল ট্যুরিজম কনসেপ্টও সফলতা লাভ করবে বলে সংশ্লিষ্টদের অভিমত।