সর্বত্র ক্ষতচিহ্ন রেখে যেতে পারে ভয়াবহ বন্যা!!

এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-ভয়াবহ বন্যা রাজ্যের সর্বত্র বড়সড় ক্ষত চিহ্ন রেখে যেতে চলেছে। ক্ষতির বহর মূল্যায়নের আগেই গোটা রাজ্যজুড়ে প্রাথমিকভাবে যে দৃশ্যপট ধরা পড়েছে তাতে বিরাট ক্ষয়ক্ষতির আভাস মিলেছে সড়ক যোগাযোগ, কৃষি, মৎস্য চাষ সহ ক্ষেত্রগুলিতে বুনিয়াদি ক্ষেত্রগুলিতে। ভয়াবহ দুর্যোগ পরিস্থিতি সড়ক ব্যবস্থাপনার নগ্ন দুর্বলতার দিকগুলি প্রকাশ করে দিয়েছে। রাস্তাঘাটের কঙ্কাল সার দেহ বেরিয়ে এসেছে বন্যার জলের তোরে। গত ছয় বছরে সড়কে কি ধরনের কাজ হয়েছে তা ধরা পড়েছে রাজ্যের প্রায় প্রতিটি প্রান্তেই।কুমারঘাট ফটিকরায় সড়ক, খোয়াই কমলপুর সড়ক,বিলোনীয়া চিত্তামারা সড়কসহ জাতীয় সড়কের বিভিন্ন অংশেই ক্ষতচিহ্ন তৈরি
হয়েছে।বহু স্থানে জলের তোড়ে সড়কের উপর আস্তরণ উধাও।এতে
দায়সারা রাস্তা নির্মাণ এবং মেরামতিকেই দায়ী করা হচ্ছে।
অনেকেই বলছেন, কোনওক্রমে রাস্তায় দায়সারা আস্তরণ দেওয়া হয়েছিল। বন্যা এই দিকটাই প্রকাশ্যে আনল।বহু স্থানে রাস্তার অস্তিত্ব বিলুপ্ত হয়ে গেছে। চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে বহু রাস্তা।
সরকারীভাবে যে হিসাব দেওয়া হয়েছে তাতে প্রাথমিকভাবে বলা হয়েছে ১ হাজার ১৫২টি স্থানে রাস্তা ভেঙে পড়েছে, যার মধ্যে এখন পর্যন্ত ৫৭৯টি স্থানে পুনরুদ্ধারের কাজ সম্পন্ন হয়েছে।ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার করার জন্য রাজ্যজুড়ে মোট ১৫৩টি ডজার কাজে লাগানো হয়েছে।পরিস্থিতি মোকাবিলায় পূর্ত দপ্তরের ২০০ জন ইঞ্জিনীয়ার কাজ করে চলেছেন।
এবারের ভয়াবহ বন্যা কৃষি ক্ষেত্রের বিরাট আঘাত করেছে।দক্ষিণ জেলা, সিপাহিজলা,খোয়াই জেলার সর্বত্রই জলের তোরে ভেসে গেছে কৃষি ক্ষেত।পলি কাদার ভারী আস্তরণ জমেছে উর্বর কৃষি জমিগুলোতে।গরিব কৃষকের দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টার ফসল ধুয়ে মুছে সাফ। সাতচাঁদ, মোহনভোগ,দুর্গা চৌমুহনী কৃষি মহকুমা এলাকার শত শত চাষি সর্বস্ব হারিয়ে আজ রীতিমতো প্রলাপ বকছেন।অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়ে বলছেন বন্যার জল সর্বস্ব কেড়ে নিয়েছে। বন্যায় জমির যে দশা হয়েছে তা আবার কবে স্বাভাবিক দশায় ফেরানো যাবে তা ভেবে কূল কিনারা পাচ্ছেন না তারা। সিপাহিজলা, খোয়াই, পোয়াংয়বাড়ি, মোহনভোগ, তুলামুড়া, সালেমা, দুর্গা চৌমুহনী, কাঞ্চনপুর, কাকড়াবন কৃষি মহকুমাগুলিতে চাষের জমি বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। রাজ্যের আটটি জেলাতেই বন্যার কারণে খারিফ ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।প্রাথমিক মূল্যায়নে প্রশাসনের অনুমান, প্রায় পাঁচ হাজার হেক্টর সবজি ক্ষেত এবং ১ লক্ষ ২০ হাজার হেক্টর ধানের জমি এখনও জলের তলায় রয়েছে। কৃষির সাথে মৎস্য চাষ ক্ষেত্রেও বিপুল অংশের কৃষককে পথে বসিয়ে দিয়েছে এবারের ভয়াবহ বন্যা।জলের তোরে হাজার হাজার পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। লক্ষ লক্ষ টাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন হাজারো কৃষক।ক্ষতির এই বহর সামলে কীভাবে তারা আবার ঘুরে দাঁড়াবেন এই ভেবে অনেকেই কূলকিনারা পাচ্ছেন না। বহু কৃষক পুকুর খনন করে লাভজনক মৎস্য চাষের পথে পা বাড়িয়েছেন গত কয়েক বছরে।এই বন্যা তাদের হতাশার সাগরে ডুবিয়ে দিয়েছে।প্রকৃতির রোষানলের সামনে সবাই অসহায়।চোখের সামনে জলের তোরে সব স্বপ্ন ভেসে যেতে দেখলেও কিছুই করার নেই।হতাশার এমন অজস্র দৃশ্য গত কয়েক দিনে সামাজিক মাধ্যমগুলিতেও মানুষের মন ভারাক্রান্ত করে চলেছে।
বিশাল অংশের মানুষের বাড়িঘর ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি গবাদিপশুরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।মাঠ মূল্যায়ন শেষ হলেই ক্ষতির প্রকৃত পরিসংখ্যান জানা যেতে পারে।আপাতত ক্ষতির চিন্তা পাশ কাটিয়ে হাজার হাজার অসহায় মানুষকে প্রাণ বাঁচানোর লক্ষ্যেই কসরত করতে হচ্ছে।

Dainik Digital

Recent Posts

প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্রমোদীর অফিসে রাহুল গান্ধি, সঙ্গে মজুত ছিলেন দেশের প্রধান বিচারপতিও!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-নতুন সিবিআই কর্তা নিয়োগ করতে হবে আর সেই উদ্দ্যেশ্যেই লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল…

4 hours ago

ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে ইন্ডিয়ান আইডল জয়ী পবনদীপ,অবস্থা আশঙ্কাজনক!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে ইন্ডিয়ান আইডল জয়ী সিজন ১২ এর পবনদীপ রাজন ৷ উত্তর…

11 hours ago

শবরীমালা মন্দির পরিদর্শনে দ্রৌপদী মুর্মু!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-আগামী ১৮ মে দু'দিনের জন্য কেরল সফরে যাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু ৷ সেই…

13 hours ago

মহাকালেশ্বর মন্দিরে বীভৎস আগুন!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-উজ্জ্বয়ন মহাকালেশ্বর মন্দিরে বিভীষিকাময় আগুন। মন্দিরের উপর থেকে গলগল করে নির্গত হচ্ছে কালো…

13 hours ago

হত্যা মামলায় ‘গ্রেপ্তার’ বাংলাদেশে জেলবন্দি চিন্ময় প্রভু!

অনলাইন প্রতিনিধি :-জেলবন্দি সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী ওরফে চিন্ময় প্রভুকে নতুন করে আবার হত্যা…

13 hours ago

নিখোঁজ হয়ে ছিলেন কুড়ি বছরে বাড়ি ফিরে এলেন ৬৩ বছর পর!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিন অঙ্গরাজ্য থেকে প্রায় ৬৩ বছর আগে নিখোঁজ হয়েছিলেন অড্রে ব্যাকেবার্গ নামে…

14 hours ago