মণিপুরে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে হামলা, বন্ধ ইন্টারনেট,, কার্ফু জারি!!
সাংবাদিকদের ক্ষোভ ও প্রবল চাপে অবশেষে গ্রেপ্তার দুষ্কৃতী!!
অনলাইন প্রতিনিধি :-অবশেষে সাংবাদিকদের প্রবল চাপের মুখে দৈনিক সংবাদের খোয়াই প্রতিনিধি আশিস চক্রবর্তীর উপর প্রাণঘাতী হামলায় জড়িত শাসক দল আশ্রিত দুষ্কৃতী জয়ন্ত গোপ (মিটন)- কে গ্রেপ্তার করতে বাধ্য হলো খোয়াই থানার পুলিশ।বৃহস্পতিবার রাত আটটা নাগাদ ওই দুষ্কৃতীকে পুলিশ তার বাড়ির কাছ থেকেই আটক করে থানায় নিয়ে আসে। উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার আগরতলা থেকে সাংবাদিকদের একটি প্রতিনিধি দল খোয়াই যায়। এই প্রতিনিধি দলে শামিল হন তেলিয়ামুড়া এবং খোয়াই মহকুমার সাংবাদিকরাও। এদিন বিকালে প্রায় পঁচিশ জনের সাংবাদিক টিম প্রথমে জেলার অ্যাডিশনাল এসপি প্রবীর পালের সাথে সাক্ষাৎ করে।সাংবাদিকরা ঘটনার বিস্তারিত জানিয়ে এবং তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে অভিযুক্ত দুষ্কৃতীকে চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের দাবি জানান।সাংবাদিকরা ঘটনার দিন দুই পুলিশ অফিসারের ভূমিকা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং তাদের বিরুদ্ধেও প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।কেননা,দুই পুলিশ অফিসার এবং প্রায় একডজন নিরাপত্তারক্ষীর সামনেই সাংবাদিক আশিস চক্রবর্তীর উপর প্রাণঘাতী হামলা চালায় ওই দুষ্কৃতী। এমনকী পুলিশের সামনেই সাংবাদিককে প্রাণনাশের হুমকি দেয়।পুলিশকে পর্যন্ত চূড়ান্তভাবে অপদস্থ করে এবং গালিগালাজ করে। দুষ্কৃতীকে গ্রেপ্তার করাতো দূরের কথা, উল্টো তাকে পালিয়ে যেতে সহায়তা করে।
এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই সাংবাদিক মহলে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হয়।বিভিন্ন মহল থেকে ঘটনার তীব্র নিন্দা জানানো হয় এবং অভিযুক্তকে আটক করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়।এদিন সাংবাদিকদের প্রতিনিধি দলটি ভারপ্রাপ্ত জেলা পুলিশ সুপারের সাথেও সাক্ষাৎ করে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের দাবি জানায়।সাংবাদিকরা স্পষ্টভাবে জানান, চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্ত দুষ্কৃতীকে গ্রেপ্তার না করলে এসপি অফিসের সামনে ধরনায় বসবেন।যদিও জেলার ভারপ্রাপ্ত এসপি এবং অ্যাডিশনাল এসপি সাংবাদিকদের আশ্বস্ত করেছেন যে, দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন।সাংবাদিকরা ফিরে
আসার পর তিন ঘণ্টার মধ্যেই পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে গারদে পুরেছে। জানা গেছে,আগামীকাল রিমান্ড চেয়ে পুলিশ অভিযুক্তকে আদালতে হাজির করবে।
ধৃত দুষ্কৃতী জয়ন্ত গোপ ওরফে মিটন আগে খোয়াই বিধানসভায় ২২নং বুথের
শাসক দলের বুথ সভাপতি ছিলেন।সভাপতি থাকাকালীন তার বিরুদ্ধে বিস্তর দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে।পরবর্তীকালে দল তাকে বুথ সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেয়। দৈনিক সংবাদের খোয়াই প্রতিনিধি আশিস চক্রবর্তীর ‘উপর প্রাণঘাতী হামলা ও রক্তাক্ত করার পিছনে মূল কারণ হচ্ছে, খোয়াই বিজেপি ‘মণ্ডল সভাপতি নাকি কোটি কোটি টাকা দুর্নীতি করছেন। দুর্নীতি করে কোটি কোটি টাকা কামাচ্ছেন। মণ্ডল সভাপতির দুর্নীতির বিরুদ্ধে কেন দৈনিক সংবাদে খবর প্রকাশ করছে না? দৈনিক সংবাদ প্রতিনিধি নাকি মণ্ডল সভাপতির হয়ে কাজ করছে। অভিযুক্ত দুষ্কৃতীর এখানেই ক্ষোভ। সামাজিক অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রণ খেতে গিয়ে দৈনিকের প্রতিনিধিকে সামনে পেয়েই প্রথমে বিশ্রী ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে। দৈনিকের প্রতিনিধি প্রতিবাদ করতেই তার উপর হামলে পড়ে। গলা টিপে ধরে। এলোপাতাড়ি কিল ঘুষি মারতে থাকে। শেষে ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করতে তেড়ে যায়। কিন্তু অন্যরা তার হাত থেকে ইট (আধলা) কেড়ে নেয়। আশিসের নাক ফেটে যায় এবং রক্ত ঝরতে থাকে। ঘটনার খবর পেয়ে সাথে সাথে পুলিশ আসে। পুলিশের সামনেই আরেকবার মারধর করে। এবং প্রাণনাশের হুমকি দেয়। কিন্তু পুলিশ কিছুই করেনি।
এদিকে দৈনিক সংবাদের সাংবাদিককে রক্তাক্ত করার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে তেলিয়ামুড়া ব্লক কংগ্রেস কমিটি। এক বিবৃতিতে প্রাক্তন বিধায়ক অশোক কুমার বৈদ্য বলেন, সাংবাদিকের উপর আক্রমণ মানে গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভের উপর আক্রমণ। এই ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।