সাংসদ ভাঙার খেলা!
মোদি-শাহর খেল কি ফের শুরু হয়ে গেল?চার রাজ্যের বিধানসভা ভোটের রেজাল্ট পর্যন্ত অপেক্ষা নয়,এবার এর আগেই অপারেশন লোটাস করতে চান মোদি-শাহ।এবার আর রাজ্যের গদি নয়। লোকসভার সাংসদ, রাজ্যসভার সাংসদ ভাঙার খেলা শুরু হয়ে গেল। রাজ্যসভা দিয়ে এই খেলা শুরু হলো দিল্লীতে। অন্ধ্রপ্রদেশের ২ ওয়াইএসআর কংগ্রেসের সাংসদ সম্প্রতি ইস্তফা দিয়েছেন।এর আগেও অতি সম্প্রতি ওড়িশার এক বিজেডি সাংসদও ইস্তাফা দিয়েছেন।মোদি-শাহ সম্প্রতিকালে কিছু বিল প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। কেননা মোদি-শাহ জুটির ভয় রাজ্যসভায় এই সমস্ত বিল পাস নাও হতে পারে। তাই কোন রিস্ক নিতে চাইছেন না মোদি-শাহ জুটি।যদিও রাজ্যসভার সাম্প্রতিক ভোটে বিজেপি গরিষ্ঠতা অর্জন করতে সমর্থ হয়ে যাবে।কিন্তু এরপরও শরিক দলের নির্ভরতায় আর থাকতে চাইছেন না মোদি-শাহ। এমনিতেই লোকসভায় ২৪০ আসন পেয়ে বিজেপি সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে। সেই থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মন ভালো নেই।শাহও অনেকটা মনমরা।তারা চাইছেন যেন তেন প্রকারেন শরিকনির্ভরতা কমানোর জন্য।সেজন্য এবার শরিক দের ঘরে হানা দেওয়ার প্ল্যান রয়েছে বিজেপির। বিশেষ করে জেডিইউ, চিরাগ পাশোয়ানের দল, টিডিপি সহ ছোট ছোট দলগুলি।
সেই নিরিখে সাংসদ ভাঙানোর কাজটি প্রথম শুরু হল ওয়াইএসআর কংগ্রেস দিয়ে। ওয়াইএসআর কংগ্রেস গত দশ বছরে বিজেপির দুঃসময়ে বিজেপিকে সহায়তা করে গেছে।রাজ্যসভায় বিজেপি যখনই কোন বিল পাশ করতে গিয়ে আটকে গেছে সে সময় বিজেপির পরিত্রাতা হয়ে দাঁড়িয়েছে জগনমোহনের পার্টি।সেই জগনমোহনের পার্টিকে এবার বিজেপি- টিডিপি জুটি আচ্ছা শিক্ষা দিয়েছে অন্ধ্রে বিধানসভা নির্বাচনে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করে।
ক্ষমতা যাওয়ার পর অন্ধ্রপ্রদেশে জগনমোহনের পার্টির নেতা কর্মী সমর্থকদের উপর বিজেপি-টিডিপি এরকম দমনপীড়ন, নির্যাতন, খুন করেছে যেন কান্নাকাটি করেও কূলকিনারা করে উঠতে পারেনি জগন্মোহন রেড্ডি।পরে দিল্লীতে এসেও জগনমোহনের পার্টি ধরনাও দেয়। কিন্তু তার পাশে কেউ দাঁড়ায়নি। প্রধানমন্ত্রীর কানে তো তা পৌঁছায়ওনি।
এহেন জগনমোহনের পার্টিকে এবার ভাঙা শুরু করল মোদির দল।বর্তমানে রাজ্যসভায় ওয়াইএসআর কংগ্রেস দলের সদস্য সংখ্যা ১১। দুজন ইতোমধ্যেই পদত্যাগ করেছেন এবং তারা বিজেপি দিকে পা বাড়িয়ে রেখেছেন।আরও ৬ জন পদত্যাগের অপেক্ষায়। বাদবাকি রইল তিনজন। এরা সবাই জগনের আত্মীয়স্বজন। তাই জগনকে ভেঙে শক্তি বাড়াতে চাইছে বিজেপি। ৮ জন যদি ফের রাজ্যসভায় অন্ধপ্রদেশ থেকে বিজেপি-টিডিপির সমর্থনে জিতে আসে তাহলে বিজেপির শক্তি নিঃসন্দেহে বাড়বে রাজ্যসভায়।তাই শরিকি নির্ভরতা কাটাতে মোদি-শাহ এই চাল শুরু করে দিয়েছেন।তেমনি এরপর মোদি-শাহ হাত দিয়েছে বিজেডির দিকে। নবীন পট্টনায়েকের দল বিজেডিও গত দশবছর রাজ্যসভায় এবং লোকসভায় আপদেবিপদে পাশে দাঁড়িয়েছে।ফল,২০২৪ সালের নির্বাচনে বিজেপি বিজেডির কাছ থেকে ওড়িশার ক্ষমতা ছিনিয়ে নিয়েছে।এবার নবীন পট্টনায়েক বুঝতে পারছে বিজেপি সঙ্গলাভে তার কী পরিণতি হয়েছে আজকের দিনে।এবার বিজেপি হাত বাড়িয়েছে ওড়িশার বিজেডি সাংসদদের দিকে।বিজেডি এবং ওয়াইএসআর কংগ্রেস এবার রাজ্যসভায় প্রকাশ্যেই ইন্ডিয়া জোটকে সমর্থনের ঘোষণা দিয়েছে।এরপর থেকেই বিজেপির মাথা গরম। বিজেপি এবার ওয়াইএসআর কংগ্রেস, বিজেডিকে দিয়েই তাদের যাত্রা শুরু করেছে। বিজেডির রাজ্যসভায় সদস্য সংখ্যা বর্তমানে ৯।একজন সাংসদ ইস্তফা দিয়েছেন। বাকিদেরও লাইন লাগার
অপেক্ষায়। লাইনে রয়েছে এআইএডিএমকের মতো দলও।
অন্যদিকে লোকসভায় ২৪০ আসন পেয়ে মোদি-শাহ মোটেও শান্তিতে নেই। তাই এবার মোদি-শাহের লক্ষ্য জেডিইউ, চিরাগ পাশোয়ানের মতো দল।জেডি (ইউ)র সাংসদরা শান্তিতে নেই।প্রতি মুহূর্তে বিজেপির হানাদারির ভয়ে তটস্থ।অন্যদিকে চিরাগ পাশোয়ানও অস্বস্তিতে রয়েছে।যে কোন মুহূর্তে চিরাগ পাশোয়ানের ঘরে হানা দিতে পারে বিজেপি।তাই শরিক নির্ভরতা কমাতে এবং শরিকদের ঘরে হানাদারির প্রস্তুতিতে মগ্ন বিজেপি নেতৃত্ব এবং তা নভেম্বরের আগেই করতে চায় বিজেপি।কেননা জম্মু কাশ্মীর ও হরিয়ানার ভোটগণনা ৪অক্টোবর। নভেম্বর ডিসেম্বরে ঝাড়খণ্ড ও মহারাষ্ট্রে, ভোট হবার কথা রয়েছে।এর আগেই যা করার করতে সচেষ্ট বিজেপি শিবির। কেননা রাজ্যের রাজ্যের গ্রাউন্ড রিয়েলিটি ভালো নয় বিজেপির জন্য।