সাংহাই সম্মেলন

 সাংহাই সম্মেলন
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

বিশ্বের কূটনৈতিক মহলের নজর এখন আরব সাগরের তীরে। অপারেশন অর্গানাইজেশন’ (এসসিও) ভুক্ত দেশগুলির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক।বৈঠক শুরু হয়েছে বৃহস্পতিবার থেকে।চলবে শুক্রবার পর্যন্ত।এই বৈঠকে ভারত, পাকিস্তান, চিন,রাশিয়া, কাজাখস্তান,কিরঘিজস্তান, তাজিকিস্তান এবং উজবেকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা যোগ দিয়েছেন।এই এসসিও জোটের বর্তমান সভাপতি হচ্ছে ভারত।

সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন শীর্ষ সম্মেলন, ২০২০ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর  বক্তব্য | ভারতের প্রধানমন্ত্রী


ফলে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করই এই বৈঠকের হোস্ট।বৈঠকে যোগ দিতে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো বৃহস্পতিবার বিকাল পাঁচটায় গোয়া পৌঁছেছেন। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বুধবারই গোয়া পৌঁছে গেছেন। বৃহস্পতিবার বিকালেই একে একে গোয়া পৌঁছেছেন, চিনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী চিন গাং, রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ সহ অন্যান্য দেশগুলির পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। অতিথি পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মানে বৃহস্পতিবার রাতে আরব সাগরের তীরে গোয়ায় একটি সমুদ্র সৈকতে রাজসিক নৈশভোজের আয়োজন করেছে ভারত।গোয়াতে অনুষ্ঠিত এসসিও ভুক্ত দেশগুলির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক ঘিরে কূটনৈতিক মহলে সব থেকে বেশি আলোচনা হচ্ছে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ভারত আসা নিয়ে। কেননা, ২০১১ সালে পাকিস্তানের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিনা রাব্বানি খার ভারত সফরে এসেছিলেন। এরপর থেকে প্রায় একদশক সময় অতিক্রান্ত হয়েছে। পাকিস্তানের আর কোনও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারত সফরে আসেননি।একদশক পর ভারত সফরে এলেন বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি।ঘটনাচক্রে সেই হিনা রাব্বানি খারই এখন পাকিস্তানের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। সেই সুবাদে গোয়ায় অনুষ্ঠিত এসসিও বৈঠকের প্রতিনিধি দলে তিনিও আছেন বলে খবর।উল্লেখ্য, গত ডিসেম্বর মাসেই পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ‘গুজরাটের কসাই’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন।

সন্ত্রাসবাদ প্রসঙ্গে আপস নয়', নাম না করে সাইপ্রাস থেকে পাকিস্তানকে কড়া  বার্তা ভারতের বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্করের | Puber Kalom


ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করও কড়া ভাষায় তাকে পাল্টা আক্রমণ করেছিলেন। তাছাড়া ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে গোটা বিশ্ব ওয়াকিবহাল।দুই দেশের এই চরম তিক্ততার পরিবেশের মধ্যেও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী যে শেষ পর্যন্ত ভারতে এসেছেন, এটাকে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ ও বড় পদক্ষেপ বলে মনে করছেন দু’দেশের কূটনৈতিক মহল।বর্তমানে পাকিস্তানের অবস্থা খুবই শোচনীয়।অর্থনৈতিকভাবে ধরনের সংকটের মুখে।চরম বিক্ষোভ চলছে।যে কোনও সময় আবার সেনার হাতে চলে যেতে পারে পাকিস্তান।এই পরিস্থিতিতে ভারতের সাথে তিক্ততা কমিয়ে আনার পথে হাঁটতে চাইছে ইসলামাবাদ।এমনটাই মনে করছে কূটনৈতিক মহল।জঙ্গি অনুপ্রবেশ ও সন্ত্রাসবাদী ইস্যুতে ভারত বরাবরই কঠোর এবং দৃঢ় অবস্থান পোষণ করে আছে।দীর্ঘ সময় ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কোনও দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়নি।যদিও পাকিস্তান সরকার ইতিমধ্যে স্পষ্ট করে দিয়েছে,বিলাওয়াল ভুট্টোর এই সফর হবে পুরোপুরি এসসিও ফ্রেমওয়ার্কের মধ্যে।এর সঙ্গে ভারত-পাকিস্তান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক কোনওভাবে জড়িত নয় ।

We do not have final decisions,' Pakistan on joining SCO meeting in India |  Mint


খবরে প্রকাশ, এসসিও জোটের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের মূল বৈঠকটি হবে শুক্রবার। যেখানে আফগানিস্তান আলোচনার একটা বড় অংশ জুড়ে থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।আয়োজক দেশ ভারতের পক্ষ থেকে এমনই ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। কেন না,ভারত কোনও অবস্থাতেই চায়না, তালেবান শাসনে আফগানিস্তান যেন পুনরায় সন্ত্রাসবাদের আঁতুরঘরে পরিণত না হয়। এর জন্য এসসিও জোটের দেশগুলির যৌথভাবে কাজ করা উচিত বলে মনে করে ভারত। তবে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা যেহেতু বহু বছর ধরে বন্ধ, সেই পটভূমিতে গোয়ার সম্মেলন দিল্লী ও ইসলামাবাদের সম্পর্কে কী প্রভাব ফেলে? বা আদৌ কোনও প্রভাব ফেলবে কি না? সেদিকে তীক্ষ্ণ নজর থাকবে।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.