সারমেয়দের উৎসর্গ করেই অভিনব পুজোর থিম!

 সারমেয়দের উৎসর্গ করেই অভিনব পুজোর থিম!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

উত্তর কলকাতার বিধান সরণিতে এবার প্রতিমা দেখার জন্য এক অভিনব উদ্যোগ নিল উদ্যোক্তারা । প্রতিপদ থেকে তৃতীয়া পর্যন্ত সাধারণ দর্শনার্থীদের প্রবেশ নিষেধ । ঠাকুর দেখতে ঢুকতে পারবেন শুধুমাত্র পোষ্য এবং তাদের অভিভাবকেরা । চতুর্থী থেকে দশমী পর্যন্ত সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য মণ্ডপ খুললেও পৃথক ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে সে ক্ষেত্রেও । চালু হচ্ছে একটি হেল্পলাইন নম্বর । তাতে ফোন করে জানালেই হবে । সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নাম , ফোন নম্বর লিখে নিয়ে মণ্ডপের কাছে হেল্পডেস্কে দেখা করতে বলা হবে । সেখান থেকে আলাদা পথে নিয়ে গিয়ে পোষ্য ও তার অভিভাবককে মণ্ডপ ঘুরিয়ে দেখাবেন পুজো কমিটিরই সদস্য । জানালেন ঋতম ভট্টাচার্য । এ বছর এমনই ‘ পেট ফ্রেন্ডলি ’ বা পোষ্যবান্ধব দুর্গাপুজো করছে বিধান সরণি অ্যাটলাস ক্লাব । আন্তর্জাতিক সারমেয় দিবসে এই উদ্যোগের কথা ঘোষণা করলেন পুজোর কর্তারা । তাদের দাবি , এমন উদ্যোগ এই প্রথম এবং সমাজের প্রতি বার্তা দেওয়াই এর উদ্দেশ্য । যদিও বাস্তবে পোষ্য নিয়ে ঠাকুর দেখা কতটা সফল হবে , সেই প্রশ্নও উঠছে । অনেকেরই প্রশ্ন , পোষ্যবান্ধব পুজো প্রচারের চমক নয়তো ? বিধান সরণির এই পুজো হয় শ্যামবাজার ট্রাম ডিপোর উল্টো দিকের রাস্তায় । ৪০ ফুট চওড়া ও ৪০ ফুট লম্বা জায়গায় তৈরি হচ্ছে মণ্ডপ । পোষ্য নিয়ে প্রবেশের জন্য থাকছে আলাদা পথ । ভিড় দেখে অথবা এক জায়গায় অনেকগুলি পোষ্য এসে পড়লে তারা উত্তেজিত হয়ে একে অপরকে আক্রমণ করতে পারে । সে কথা ভেবে কুকুরদের সামলাতে কয়েক জন হ্যান্ডলারের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে । উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন , মণ্ডপে রাখা হবে পশু চিকিৎসক এবং অক্সিজেনের ব্যবস্থাও । ইতিমধ্যেই কলকাতার মেয়র ও পুলিশ কমিশনারকে এ বিষয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে । পুলিশের ‘ ডগ স্কোয়াড ‘ এবং কলকাতা পুরসভার ‘ ডগ পাউন্ড ‘ থেকেও যাতে সাহায্য মেলে , সেই আর্জি জানানো হবে । পোষ্যেরা মণ্ডপে এসে মল – মূত্র ত্যাগ করতে পারে । তাই পুরসভার কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কাছেও সাহায্য চাওয়া হচ্ছে । মণ্ডপ শিল্পী সায়ক রাজ জানিয়েছেন , ‘ থাকছে একেবারে শান্ত মূর্তির দুর্গা প্রতিমা । সামনে বসানো হচ্ছে একটি মা কুকুরের অবয়ব । ‘ সঙ্গে ‘ ব্যাকগ্রাউন্ড ভয়েস – ওভার ‘ । আসলে একটি প্রার্থনা । মা কুকুর দেবীকে বলছে , ‘ তুমি তো তোমার সন্তানদের ছাড়া কোথাও যাও না । আমিই বা আমার সন্তানদের ছাড়া থাকি কী করে ! ‘ পথকুকুর অথবা বেড়ালের বাচ্চাদের বিষ দিয়ে বা গাড়ি চাপা দিয়ে মেরে ফেলার ঘটনা ঘটে প্রায়ই । তাই অনন্ত আশ্রয়ের লক্ষ্যে এই প্রার্থনা । মন্ডপে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ভারতীয় ধর্ম এবং সমাজে কুকুরের সুপ্রাচীন উপস্থিতি প্রচারের জন্যই । ‘ ফোরাম ফর দুর্গোৎসব ‘ – এর সাধারণ সম্পাদক শাশ্বত বসু বললেন , “ ওরা দারুণ ভেবেছে । এমন কাজ আগে হয়নি । সমাজের প্রতি বার্তা থাকলে তাকে অবশ্যই ভাল বলব । ‘ এই পুজো ঘিরে ইতিমধ্যেই জোর চর্চা চলছে সমাজমাধ্যমে ।

———-সন্দীপ বসু

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.