সিএনজি সংকটে ক্ষুব্ধ চালকদের সড়ক অবরোধ, জনদুর্ভোগ শহরে!!

 সিএনজি সংকটে ক্ষুব্ধ চালকদের সড়ক অবরোধ, জনদুর্ভোগ শহরে!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-জ্বালানি তেল পেট্রোল, ডিজেলের সংকট কিছুটা নাগালে এসেছে।এর মধ্যে শুরু হয়ে গেছে পাইপলাইন গ্যাস নিয়ে ভোগান্তি।ব্যক্তিগত ও বাণিজ্যিক যানবাহনে গ্যাস সরবরাহে দেখা দিয়েছে জটিলতা।ঘটনা ঘিরে বেড়েছে ক্ষোভ।একসময় পরিস্থিতি নাগালের বাইরে চলে যাওয়ার উপক্রম হয়।ক্ষুব্ধ যানবাহনের চালকরা শুরু করেন সড়ক অবরোধ।ঘটনা ঘিরে রাজ্যের রাজধানী শহর আগরতলায় তীব্র জনদুর্ভোগ দেখা দেয়। বিশেষত শহরের দক্ষিণাংশ দীর্ঘসময় ধরে অবরুদ্ধ হয়ে থাকে।সমস্যার মূলে রয়েছে বিদ্যুতের ভোল্টেজজনিত সমস্যা।অভিযোগ, ত্রিপুরা রাজ্য বিদ্যুৎ নিগমের দায়সারা মনোভাবের কারণে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে গেছে।রবিবার সন্ধ্যারাত থেকে শুরু করে টানা প্রায় ২৪ ঘন্টা বন্ধ রাখতে হয়েছে সিএনজি স্টেশন।
গত বেশ কিছুদিন ধরে রাজ্যে বিদ্যুৎ সংকট চলছে মাত্রাছাড়াভাবে।
রাজ্যজুড়ে চলছে ভোল্টেজের
অস্বাভাবিক ওঠানামা।এর জেরে সাধারণ মানুষকে বিপাকে পড়তে হচ্ছে।নষ্ট হয়ে চলেছে বিভিন্ন বৈদ্যুতিক ও বৈদ্যুতিন সামগ্রী।একই সঙ্গে বিপাকে পড়তে হচ্ছে পাইপলাইনে গ্যাস সরবরাহকারী সংস্থা ত্রিপুরা প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি
লিমিটেড।টিএনজিসিএল নামে পরিচিত এই সংস্থার পক্ষে যানবাহনে গ্যাস সরবরাহের জন্য সিএনজি স্টেশন চালু রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে।বন্ধ করে রাখতে হচ্ছে গ্যাস সরবরাহকারী
কম্প্রেশার যন্ত্র।দিন কয়েক আগেও এই সমস্যা হয়েছে। আগরতলা শহরের মিলন চক্র ও কৃষ্ণনগরস্থিত সিএনজি
স্টেশন আংশিকভাবে বন্ধ রাখতে হয়েছে।দীর্ঘ সময় ধরে পুরোদমে চালু রাখা যায়নি সিএনজি স্টেশনগুলি।দুটি
স্টেশনের করতে হয়েছে সংস্কার।
এক পক্ষকালের কম সময়ের মধ্যে ফের একইরকম ঘটনা ঘটেছে।মিলন চক্রস্থিত সিএনজি স্টেশন রবিবার রাত থেকে পুরোপুরি বন্ধ করে রাখতে হয়েছে।সোমবার পাঁচটার আগে চালু করা যায়নি স্টেশনটি।আগেরবার
ভোল্টেজ অস্বাভাবিকভাবে কম থাকায় বন্ধ রাখতে হয় সিএনজি স্টেশন।এবার হয়েছে উল্টো।ভোল্টেজের পরিমাণ মাত্রাছাড়াভাবে বেড়ে গেছে।ফলে ঘটেছে বড়সড় বিপত্তি।রবিবার সন্ধ্যা রাতের দিকে বৃষ্টির সঙ্গে ঝড়ো বাতাস বওয়ার পরই আচমকা বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় মিলন চক্র সহ সন্নিহিত এলাকা।তারপর ফের বিদ্যুৎ সংযোগ চালু হতেই ভোল্টেজের পরিমাণ বেড়ে যায় মাত্রাছাড়াভাবে। তখন থেকেই মিলন চক্রস্থিত সিএনজি স্টেশনটি বন্ধ করে দিতে হয় বলে খবর।
এরপর সোমবার এ নিয়ে বিদ্যুৎ নিগমে অভিযোগ জানানো হয় সিএনজি স্টেশনের তরফে।তাতে কোনও কাজ হয়নি। অবশেষে বেলা ১১টার দিকে টিএনজিসিএলের তরফে সমস্যার তীব্রতার কথা উল্লেখ করে বিদ্যুৎ নিগমের বড়দোয়ালীস্থিত কার্যালয়ে লিখিতভাবে অভিযোেগ করা হয়।জানানো হয় দ্রুত সমস্যা না মিটলে পরিস্থিতি নাগালের বাইরে যেতে পারে।ঘটতে পারে অনাকাঙিক্ষত ঘটনা। টিএনজিসিএল সূত্রের বক্তব্য, তখন বিদ্যুৎ নিগমের তরফে মৌখিকভাবে জানানো হয় বিকাল চারটার আগে কিছু করা যাবে না।কারণ ঝড়ো বাতাসে বিপর্যয়কর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।সেই তুলনায় তাদের হাতে প্রয়োজনীয় লোকবল নেই।
এমতাবস্থায় সিএনজি স্টেশনের বাইরে অপেক্ষমাণ যানবাহনের চালক ও মালিকদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়তে থাকে।অবশেষে এই ক্ষোভের বহি:প্রকাশ ঘটে বেলা ১২টা নাগাদ।শুরু হয় সড়ক অবরোধ।মিলন চক্রস্থিত সিএনজি স্টেশনের সামনে সড়কে বসে পড়ে ক্ষুব্ধ লোকজন।তাদের বক্তব্য, এখনই গ্যাস সরবরাহ শুরু করতে হবে।এই ঘটনায় রেল ও সড়কপথের নিত্যযাত্রী সহ সাধারণ মানুষকে পড়তে হয় চূড়ান্ত রকমের দুর্ভোগে। ক্ষোভ দেখা দেয় তাদের মধ্যেও।পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অরুন্ধতীনগর থানার তরফে উদ্যোগ নেওয়া হয়।অনুরোধ করা হয় অবরোধ প্রত্যাহারের।তাতে কোনও লাভ হয়নি।অবশেষে গ্যাস সরবরাহের আশ্বাস পেয়ে বেলা ১টার পর অবরোধ প্রত্যাহার করা হয়।এই ফাঁকে সড়কের দুদিকে দাঁড়িয়ে পড়ে বহু যানবাহন। সৃষ্টি হয় হাঁসফাঁস অবস্থা।
এই পরিস্থিতিতে টিএনজিসিএলের তরফে আবারও ছুটে যাওয়া হয় বিদ্যুৎ নিগমের বড়দোয়ালীস্থিত কার্যালয়ে। তুলে ধরা হয় পুরো বিষয়। শেষ পর্যন্ত বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ বিদ্যুৎ নিগমের সারাইকারী দল আসে মিলন চক্রে।সিএনজি স্টেশনের ভোল্টেজ সমস্যা নিরসনে হাত লাগায়।ভোল্টেজ সমস্যা মিটে যাওয়ার পর টিএনজিসিএলের তরফে প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে চালু করা হয় সিএনজি স্টেশন।ততক্ষণে বিকাল প্রায় পাঁচটা বেজে গেছে।দিনভর ভোগান্তি সইতে হয়েছে যানবাহনের চালক সহ সর্বস্তরের মানুষকে।এ নিয়ে জানতে চেয়ে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি বিদ্যুৎ নিগমের এমডি দেবাশিস সরকারের সঙ্গে।পরে যোগাযোগ করা হয় নিগমের মুখপাত্র বিপুল ভৌমিকের সঙ্গে।তিনি দাবি করেন, সমস্যা নিরসনে জোর তৎপরতা জারি রয়েছে।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.