Categories: দেশ

সুপ্রিম কোর্টের সবুজসঙ্কেত!

এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

আর্থিকভাবে দরিদ্র সম্প্রদায়ের জন্য উচ্চশিক্ষা ও সরকারী চাকরিতে দশ শতাংশ সংরক্ষণের কেন্দ্ৰীয় সরকারী সিদ্ধান্তকেই বহাল রাখলো সুপ্রিম কোর্ট। আগামীকাল অর্থাৎ মঙ্গলবারই সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি উদয় উমেশ ললিতের অবসরের দিন। অর্থাৎ তিনি প্রধান বিচারপতি পদে কর্মরত অবস্থার সর্বশেষ দিনের সর্বশেষ মামলায় যে ঐতিহাসিক রায় দিয়ে গেলেন, সেটি বস্তুত হাসি ফোটালো আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া জেনারেল ক্যাটাগরির মানুষের সন্তানদের মধ্যে। এবং তার থেকেও বেশি খুশি হয়েছে মোদি সরকার।
কারণ এই রায় ঘোষণার পরই আজ থেকে বিজেপি উচ্চগ্রামে প্রচার শুরু করেছে যে, সুপ্রিম কোর্ট প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নকেই সিলমোহর দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এরপর সেটি যে ভারতীয় সংবিধানের সংবিধান ব্যবস্থার মূলগত ভিত্তিকেই লঙ্ঘন করছে, এই অভিযোগ তুলে মামলা দায়ের করা হয়। সেই মামলাটি চলছিল পাঁচ সদস্যের বেঞ্চে। যে বেঞ্চের অন্যতম প্রধান বিচারপতি। তবে আজ রায়ে সর্বসম্মতি হয়নি। বস্তুত তিন বনাম দুই বিভাজনের ভিত্তিতে এই রায় হয়েছে। অর্থাৎ দুজন বিচারপতি এই রায়ের বিপক্ষে মতপ্রকাশ করেছেন। তিনজনপক্ষে রায় দিয়েছেন। তাই সংখ্যাগুরুত্বের হিসাবেই এই রায় ঘোষণা করা হয়। সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, সংবিধানের সাম্য বিধির মূলগত তাই ভিত্তিকে এই আর্থিকভাবে অনগ্রসর শ্রেণীর জন্য দশ শতাংশ সংরক্ষণ লঙ্ঘন করছে না। একইভাবে পঞ্চাশ শতাংশ সংরক্ষণের যে সীমা রয়েছে সেই প্রক্রিয়ারও পরিপন্থী নয়। বিশেষত ওই সীমা যেখানে পরিবর্তনশীল। প্রসঙ্গত ভারতে এই দশ শতাংশ সংরক্ষণ এবার আনুষ্ঠানিকভাবে সরকারী চাকরি ও উচ্চশিক্ষায় বলবৎ হওয়ার ফলে সংরক্ষণের যে মানচিত্রটি দাঁড়াবে সেটি হল, সাতাশ শতাংশ ওবিসি সংরক্ষণ, ৭.৫ শতাংশ তপশিলি উপজাতি সংরক্ষণ, ১৫ শতাংশ তপশিলি জাতি সংরক্ষণ এবং ১০ শতাংশ এবার আর্থিকভাবে অনগ্রসর শ্রেণীর সংরক্ষণ। অর্থাৎ মোট সাড়ে ৪৯ শতাংশ সংরক্ষণ। এই ১০ শতাংশ নতুন সংরক্ষণ যাদের জন্য তাদের কোনও জাতিগত বৈশিষ্ট্য রাখা হয়নি । অর্থাৎ এই ১০ শতাংশ সংরক্ষণ জেনারেল ক্যাটাগরির যারা আর্থিকভাবে অনগ্রসর এই সুবিধা তারাই পাবে। কীভাবে প্রমাণ করা যাবে যে, কারা আর্থিকভাবে অনগ্রসর ? সরকার স্থির করে দিয়েছে বছরে ৮ লক্ষ টাকা পর্যন্ত পারিবারিক আয়কে বলা হবে আর্থিকভাবে অনগ্রসর। প্রধান বিচারপতি ছাড়াও জাস্টিস দীনেশ মাহেশ্বরী, জাস্টিস এস রবীন্দ্র ভাট, জাস্টিস বেলা এম ত্রিবেদী, জাস্টিস জে বি পার্দিওয়ালা এই বেঞ্চের সদস্য ছিলেন। ১০৩ তম সংবিধান সংশোধনী বিলের মাধ্যমে এই ১০ শতাংশ সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। এদিকে এই রায় ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে বিজেপি নরেন্দ্র মোদির জয়গান শুরু করেছে। আসন্ন গুজরাট এবং হিমাচলের ভোটের প্রাক্কালে এই রায়কে বিজেপি মোদি সরকারের জয় হিসাবেই দেখাতে চাইছে।

Dainik Digital

Share
Published by
Dainik Digital

Recent Posts

গয়নার ল্যাবে তৈরি হলো বিশ্বের প্রথম কৃত্রিম রুবি!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-বাংলায় চুনি, ইংরেজিতে রুবি।চুনির রং কতটা টকটকে লাল, তার উপর এই মানিকের দাম…

2 hours ago

মুখ্যমন্ত্রীর মুখ বাঁচাতে পুলিশ প্রশাসনের নির্লজ্জ দ্বিচারিতা!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-চাঁদারজুলুম নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রে তথাকথিত সুশাসনের রাজ্যে প্রশাসনের নির্লজ্জ দ্বিচারিতা প্রকাশ্যে এলো।…

3 hours ago

কাজের বাজারে মন্দা!!

কেন্দ্রে ১০০ দিন পূর্ণ করল তৃতীয় মোদি সরকার।যদিও বর্তমান ক্ষমতাসীন কেন্দ্রীয় সরকারকে মোদি সরকার আখ্যা…

3 hours ago

নিগো – অন্ধ প্রশাসন!!

নিগো বাণিজ্যের রমরমা চালানোর জন্যই কি ১৮ সালে রাজ্যের মানুষ বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় বসিয়েছিলো?রাজ্যের আকাশ…

1 day ago

বিমানযাত্রীর মর্মান্তিক মৃত্যু নিয়ে পুলিশের তদন্ত শুরু!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-এয়ারইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের কর্মীর চরম গাফিলতি ও উদাসীনতার কারণে রীতা বণিক (৫৯) বিমান যাত্রীর…

1 day ago

হরিয়ানাঃ পাল্লা কার পক্ষে?

হরিয়ানা কি বিজেপির হাত থেকে ফসকে যাচ্ছে?শাসক বিজেপির হাবভাব দেখে তেমনটাই অনুমান করছে রাজনৈতিক মহল।প্রধানমন্ত্রী…

2 days ago