সুরমায় খুন তিপ্রামথার নেতা, গ্রেপ্তার ৪! উত্তেজনা

 সুরমায় খুন তিপ্রামথার নেতা, গ্রেপ্তার ৪! উত্তেজনা
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

মহকুমার সুরমা বিধানসভা কেন্দ্রে তিপ্রা মথার একজন নেতা খুন হয়েছে। গ্রেপ্তার হয়েছে চার জন। এই খুনের ঘটনায় পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। ১৮ জানুয়ারী রাতের ঘটনা, সুরমা বিধানসভা কেন্দ্রের বামনছড়া পঞ্চায়েতের বাসিন্দা প্রণয়জিৎ নমঃশূদ্র (৪৫)। গতকাল দিনের বেলা সুরমার মহাবীর ও দেবীছড়া পঞ্চায়েতে দলের কাজ করেন বলে জানা গেছে। রাত আটটা নাগাদ গাড়িতে করে বাড়ি ফেরার পথে আক্রান্ত হন গৌরচরণ পাড়ায়। এই পাড়া থেকে নিহতের বাড়ি সল্পদূরে। বিভিন্ন সূত্রে, জানা গেছে শ্রীনমঃশূদ্রের গাড়ি আটকায় একদল যুবক। অভিযোগ, এরা সবাই পরিচিত বিজেপি কর্মী। প্রথমে গাড়ি ভাঙচুর করে। টেনে নামায় প্রণয়জিৎকে। দা দিয়ে কোপায়। ঘটনাস্থলেই সম্ভবত মৃত্যু হয়। যদিও এই নিয়ে দ্বিমত আছে। জানা গেছে, নিহতের সঙ্গে ছিলেন মথা কর্মী ইন্দ্ৰ নমঃশূদ্র। আক্রমণ হওয়ার সাথে সাথে তিনি পলাতক হন।এরপর ঘটনা কিছুটা রহস্যে ঢাকা। আটটার কিছুক্ষণ পরে কমলপুর থেকে পুলিশ আসে। আসে ফায়ার সার্ভিস। খবর পেয়ে রাত এগারোটা পর্যন্ত মহকুমা হাসপাতালের সামনে অপেক্ষা করেন সংবাদমাধ্যমের লোকেরা । প্রায় বারোটা নাগাদ প্রণয়জিৎকে আনা হয় হাসপাতালে। এরপর পাঠিয়ে দেওয়া হয় কুলাইতে জেলা হাসপাতালে। রাত বারোটার পর কুলাইতে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। প্রণয়জিতের মৃত্যু ঘটনাস্থলেই হয়েছে বলে মথার একাধিক নেতা জানান ৷ পুলিশ মৃতদেহ নিয়ে নাটক করেছে বলে অভিযোগ। আজ দুপুরে মৃতদেহ নিয়ে বিশাল গাড়ির মিছিল আসে। পুলিশ, সিআরপিএফ দক্ষিণ মানিক ভাণ্ডারে মিছিল আটকে দেয়। মথার পক্ষে তাপস দে জানান, মৃতদেহ মহকুমা সদর অবধি যাবে। পুলিশ অনুমতি দিতে অসম্মত হয়। দেখা দেয় উত্তেজনা। শেষ অবধি এনইসি রোড দিয়ে মিছিল যায় নিহতের বাড়ি। তাপস দে ছাড়া মথার নেতৃত্বে যারা ছিলেন তারা হলেন, নিশিকান্ত দেববর্মা, মেবার কুমার জমাতিয়া, দীনেশ দেববর্মা প্রমুখ। বলা দরকার নিহতের তিন কন্যা সন্তান ও স্ত্রী বর্তমান। স্ত্রী দশ হাজার তিনশ তেইশের চাকরিচ্যুতদের একজন।উল্লেখ্য, তিনি বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর নানাভাবে আক্রান্ত হন। ক্ষতিগ্রস্ত হন। শেষ অবধি রাজ্যের বাইরে চলে যান। কিছুদিন আগে ফিরে আসেন। কমলপুর প্রেস ক্লাবে এসে অভিযোগ জানিয়ে ছিলেন তিনি আক্রান্ত হতে পারেন, তিনি তিপ্রা মথায় যোগ দিয়েছেন। আজ তৃণমূল কংগ্রেসের সুরমা ব্লক সভাপতি অজর্ন নমঃশূদ্র শুরু থেকে শেষ অবধি ছিলেন মিছিলে ও শ্মশানে। তিনি জানান, আক্রান্ত হবার ভয়ে ছিলেন প্রণয়জিৎ। এদিকে, এই হত্যাকাণ্ডের সাথে এক উপপ্রধানের নাম যুক্ত হয়ে গেছে। এসডিপিও শংকর দাস আজ সংবাদমাধ্যমকে জানান মোট ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে আরও গ্রেপ্তার হতে পারে বলে তিনি জানান।জানা গেছে ধৃতরা হল নিশিকান্ত দেব, নিত্য শুক্লবৈদ্য, রামমোহন দাস ও হরেকৃষ্ণ। এরা রাতেই গ্রেপ্তার হয়। এদিকে, মথা সুপ্রিমো প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ বলেন, রাজনৈতিক হিংসার শিকার হয়ে প্রয়াত প্রণয়জিৎ নমঃশূদ্র’র পরিবারের পাশে থাকতে চায় তিপ্ৰা মথা। একই সাথে শোক ব্যক্ত করে বৃহস্পতিবার মথা সুপ্রিমো সামাজিক মাধ্যমে বলেন, হিংসা হচ্ছে রাজনীতির সবচেয়ে বড় খারাপ দিক। প্রণয়জিৎ নমঃশূদ্র’র মৃত্যুতে এর জবাব দিতে হবে নির্বাচন কমিশন এমনকী প্রশাসনকেও। তার কথায়, মানুষ এখন আগেকার মতো মুখ বুজে বসে থাকবে না।১৬ তারিখই এর জবাব মিলবে শাসক বিজেপিকে উদ্দেশ্য করে তিনি জানিয়ে দেন যে ক্ষমতা কখনই চিরস্থায়ী হয় না। এটি তাদের বোঝা উচিত।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.