সুশান্ত-প্রদ্যোতের বাকযুদ্ধে বিতর্কের পারদ ঊর্ধ্বমুখী!!

 সুশান্ত-প্রদ্যোতের বাকযুদ্ধে বিতর্কের পারদ ঊর্ধ্বমুখী!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-পুরনো
রাজভবন তথা পুষ্পবন্ত প্যালেসে তাজ সংস্থার পাঁচতারা হোটেল করা নিয়ে বিতর্কের পারদ ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী।দাবি পাল্টা দাবি, অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ ঘিরে রাজ্য রাজনীতিও সরগরম হয়ে উঠেছে। পুষ্পবন্ত প্যালেসকে পাঁচতারা হোটেলে রূপান্তর করার রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তের তীব্র আপত্তি জানিয়ে ইতিমধ্যে সরব হয়েছেন তিপ্রা মথা সুপ্রিমো প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ।সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে ইতিমধ্যে ময়দানে নেমেছে তিপ্রা মথার ছাত্র সংগঠন টিআইএসএফ। গত তিনদিন ধরে মথার ছাত্র সংগঠন বিক্ষোভ, ধরনা, ডেপুটেশন সংগঠিত করেছে। শুক্রবার সংগঠনের পক্ষ থেকে রাজধানীতে প্রতিবাদ মিছিল সংগঠিত করে। প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণের বক্তব্য, পুষ্পবন্ত প্যালেস রাজন্য স্মৃতি বিজড়িত একটি ঐতিহাসিক নিদর্শন। একটি ঐতিহাসিক স্থান ও নিদর্শনকে এইভাবে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করা যাবে না।এই বিষয়ে তিনি রাজ্য সরকারকে রীতিমতো হুঁশিয়ারি দেন। গত তিনদিন ধরে এই নিয়ে ব্যাপক জল ঘোলা হতে থাকে।
শুক্রবার মহাকরণে সাংবাদিক সম্মেলনে এই বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী স্পষ্টভাবে বলেন, পুষ্পবন্ত প্যালেস রাজ্য সরকারের সম্পত্তি। ফলে পুষ্পবন্ত প্যালেসে রাজ্য সরকার কি করবে, না করবে এটা সম্পূর্ণ রাজ্য সরকারের ইচ্ছা অনিচ্ছার উপর নির্ভর করবে। আমরা চাই রাজ্যের সার্বিক উন্নয়ন।মার্জারের পর এমন বেশ কিছু রাজন্য স্মৃতি বিজড়িত স্থান ও নিদর্শন সরকারের সম্পত্তি হিসেবে স্বীকৃত।চুক্তিতে এমন কিছু উল্লেখ নেই যে সরকার চাইলে হোটেল বা অন্য কিছু করতে পারবে না।যারা রাজন্য স্মৃতি বিজড়িত বলে আপত্তি জানাচ্ছে, সেই মতো দেখতে গেলে বর্তমানে একাধিক রাজন্য স্মৃতি বিজড়িত স্থান ও নিদর্শনে বিয়ে বাড়ি বানিয়ে ব্যবসা চালানো হচ্ছে।মন্ত্রী বলেন, উজ্জয়ন্ত প্যালেসকে মিউজিয়াম করার প্রস্তাব ছিল।রাজ্য সরকার সেটা করেছে।মিউজিয়ামকে আরও উন্নত করার প্রয়াস চলছে।পুষ্পবন্ত প্যালেসে হোটেল করার সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি।বিষয়টি একেবারেই আলোচনার পর্যায়ে রয়েছে।আমরা চাইবো,সরকার যদি এমন কোনও সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে রাজ্যের উন্নয়নে এবং পর্যটনকে বিকশিত করতে সকলে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিক।
মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরীর এই বক্তব্য প্রকাশ্যে আসতেই প্রদ্যোত কিশোরও পাল্টা প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন,১৯৪৯ সালে মার্জারের মাধ্যমে রাজবাড়ি, পুষ্পবন্ত প্যালেস বিনামূল্যে ভারত সরকারকে প্রদান করা হয়েছিল।একইভাবে জগন্নাথবাড়ি, শিববাড়ি, চতুর্দশ দেবতা বাড়ি, লক্ষ্মীনারায়ণ বাড়ি, ত্রিপুরেশ্বরী মন্দিরও প্রদান করা হয়েছে।এগুলি শুধুমাত্র মানুষের ব্যবহারের জন্য। প্রদ্যোত বলেন, মাণিক্য কোর্ট, মালঞ্চ নিবাস, মাণিক্য এনক্লেভ এগুলি প্রাসাদ নয়। এসব বলে রাজ্যবাসীকে বিভ্রান্ত করা যাবে না। সরকার কি বলতে চায়?এই সম্পত্তিগুলি প্রয়োজনে বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান খুলে বসবে সরকার?তাহলে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালকে হোটেল বানিয়ে ফেলা হোক। প্রদ্যোত বলেন, পুষ্পবন্ত প্যালেসে মহারাজার নামে গ্রন্থশালা হবে বলা হয়েছিল। রাষ্ট্রপতি দ্রোপদী মুর্মুকে দিয়ে উদ্বোধন করা হয়েছে লাইব্রেরি।এই লাইব্রেরির জন্য ভারত সরকার রাজ্যকে ৪০ কোটি টাকা প্রদান করেছে।সেই টাকা তাহলে কোথায়?প্রশ্ন তুলেন প্রদ্যোত কিশোর।সব মিলিয়ে পুষ্পবন্ত প্যালেস নিয়ে বিতর্ক এবং বাকযুদ্ধ জমে উঠেছে।শেষ পর্যন্ত কি হয়,এখন সেটাই দেখার।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.