সুশাসনে বেহাল স্বাস্থ্য একাধিক নিগমের, বাড়ছে ক্ষতির বহর!!

 সুশাসনে বেহাল স্বাস্থ্য একাধিক নিগমের, বাড়ছে ক্ষতির বহর!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যে বর্তমানে ডবল ইঞ্জিনের সরকার চলছে।তার সুবাদে রাজ্য সরকার নেতা-মন্ত্রীদের মুখে মুখে উন্নয়নের ঢালাও প্রচার চলছে।উন্নয়নের প্রচারে খরচ হচ্ছে কোটি কোটি টাকা।শুধু তাই নয়,রাজ্যে সুশাসনের দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রচারও এখন তুঙ্গে।কিন্তু বাস্তব বলছে অন্য কথা। গোটা রাজ্যজুড়ে উন্নয়নের ঢালাও প্রচার চললেও,রাজ্য সরকারে অধীনস্ত নিগমগুলির অবস্থা দিনকে দিন কাহিল হয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে বেশ কিছু নিগমে লালবাতি জ্বলে উঠেছে। কয়েকটিতে লালবাতি জ্বলে ওঠা শুধু সময়ের অপেক্ষা। এক-দুটি নিগম অবশ্য ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই এবং চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে-এটা অস্বীকার করার উপায় নেই।তবে অধিকাংশ নিগমই রুগ্ন হতে হতে এখন মৃত্যুপথযাত্রী। লোকসানের বহর শুধু বেড়েই চলেছে।অভিযোগ, পরিচালনগত এবং অনিয়মের কারণেই নিগমগুলিতে লোকসান বাড়ছে এর মধ্যে ত্রিপুরা শিল্প উন্নয়ন নিগম, ত্রিপুরা চা উন্নয়ন নিগম অন্যতম।ত্রিপুরা জুটমিলের ঝাঁপ বন্ধ হওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা।ত্রিপুরা ক্ষুদ্র শিল্প নিগম লোকসান কমিয়ে আনার চেষ্টা করছে।সম্প্রতি যে তথ্য পাওয়া গেছে,তাতে দেখা যাচ্ছে ত্রিপুরা শিল্প উন্নয়ন নিগমে গত ২০২০-২১ অর্থবছরে লোকসানের পরিমাণ ছিল ১ কোটি ৩১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা।পরের বছর ২০২১-২২ অর্থ বছরে সেই লোকসানের পরিমাণ বেড়ে হয় ১ কোটি ৬৭ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা।এর পরের বছর লোকসানের পরিমাণ একলাফে ১০ কোটিতে পৌঁছে যায়। ২০২২-২৩ অর্থ বছরে ত্রিপুরা শিল্প উন্নয়ন নিগমের লোকসানের পরিমাণ বেড়ে হয় ১০ কোটি ৩ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা।বাম আমলে ব্যাপক পরিমাণ লোকসানে থাকা ত্রিপুরা চা উন্নয়ন নিগমকে একেবারে গর্ত থেকে তুলে এনে একেবারে লাভজনক নিগমে পরিণত করা হয়েছিল।২০২০-২১ অর্থ বছরে ত্রিপুরা চা উন্নয়ন নিগমের লাভের পরিমাণ ছিল ১ কোটি ৪২ লক্ষ ৪৯ হাজার টাকা। বছর ঘুরতেই সেই নিগম লোকসানে চলে যায়। ২০২১-২২ অর্থ বছরে চা নিগমের লোকসান হয় ২ কোটি ২৫ লক্ষ ৫ হাজার টাকা।পরের বছর সেই লোকসান আরও বাড়ে। ২০২২-২৩ অর্থ বছরে লোকসান হয় ৪ কোটি ৯৬ লক্ষ ৬৯ হাজার টাকা।উল্টো দিকে,বহু চর্চিত ত্রিপুরা জুটমিলে গত তিন বছর ধরে উৎপাদন বন্ধ।প্রায় একশজনের মতো কর্মী গত তিন বছর ধরে শুধু হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে বাড়ি চলে যান।এটাই তাদের কাজ। রাজ্য সরকারও জুটমিল বন্ধ করে দেওয়ার পথে হাঁটছে। সেই অর্থে জুটমিলের লোকসান কমছে।২০২০-২১ অর্থ বছরে জুটমিলের লোকসানের পরিমাণ ছিলো ২৩ কোটি ২৪ লক্ষ ৫৯ হাজার টাকা।২০২১-২২ অর্থ বছরে লোকসান কমে দাঁড়ায় ১৬ কোটি ২৩ লক্ষ ১০ হাজার টাকা এবং ২০২২-২৩ অর্থ বছরে লোকসান আরও কমে দাঁড়ায় ১২ কোটি ৪ লক্ষ ৯০হাজার টাকা।ফলে জুটমিলের লাভ-লোকসান নিয়ে তেমন কোনও মাথাব্যথা নেই।বর্তমান কর্মীরা অবসরে চলে গেলেই জুটমিলে তালা পড়বে।সরকার সেই অপেক্ষাতেই আছে। অথচ সরকারের প্রতিশ্রুতি ছিল জুটমিলকে পুনরুজ্জীবিত করার।এর মধ্যে গত দুই বছরে আশার আলো দেখা যাচ্ছে ত্রিপুরা ক্ষুদ্র শিল্প নিগমে।২০২০-২১ অর্থ
বছরে ক্ষুদ্র শিল্প নিগমে লোকসানের পরিমাণ ছিল ৪১ কোটি ৫৬ লক্ষ টাকা।পরের বছর সেই লোকসান কাটিয়ে লাভের ঘরে পৌঁছায় নিগম। ২০২১-২২ অর্থ বছরে নিগম লাভ করে ১০ কোটি ৫৫ লক্ষ ৮১ হাজার টাকা।পরের বছর
অবশ্য লাভের পরিমাণ অনেকটা কমে যায়। ২০২২-২৩ অর্থ বছরে লাভ হয় ৩কোটি ৮৭ লক্ষ ৭৬ হাজার টাকা।কিন্তু সব থেকে অবাক করার বিষয় হচ্ছে,লাভজনক নিগমগুলি লোকসানে চলে যাওয়া।যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ত্রিপুরা
শিল্প উন্নয়ন নিগম।শুধু তাই নয়, সম্ভাবনাময় এই নিগমটির অনাদায়ী ঋণের পরিমাণও বাড়ছে।প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ত্রিপুরা শিল্প উন্নয়ন নিগমে গত ৩১ মার্চ ২০২৩ ইং সালের হিসাব অনুযায়ী অনাদায়ী লোনের পরিমাণ ৫৯ কোটি ৮৯লক্ষ ৯৬ হাজার টাকা। এর মধ্যে প্রিন্সিপাল ১১ কোটি ২৫ লক্ষ ৬৪ হাজার টাকা এবং ইন্টারেস্ট ৪৮ কোটি ৬৪ লক্ষ ৩১ হাজার টাকা।এই বকেয়া কবে আদায় হবে?আদৌ আদায় হবে কিনা অনিশ্চিত।ডবল ইঞ্জিন সরকারে জমানায় যেখানে নিগমগুলির আর্থিক অবস্থা ভালো হওয়ার কথা, সেখানে দিনকে দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে।এখানে শুধু কয়েকটি নিগমের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরা হলো।স্বাভাবিকভাবেই জনমনে প্রশ্ন, এটাই কি তাহলে ডবল ইঞ্জিন সরকারের সুশাসন?

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.