চিকিৎসা কেন্দ্রগুলিতে প্রায়শই রোগীর আত্মীয় পরিজনদের সাথে চিকিৎসকদের ঝামেলা হচ্ছে।এ নিয়ে চিকিৎসক নিগৃহীত পর্যন্ত হচ্ছেন। কিছুদিন পরপরই এই ধরনের ঘটনা ঘটেই চলছে।আমাদের রাজ্যে হোক কিংবা বাইরের রাজ্যে- এ ধরনের ঘটনার কিন্তু বিরতি নেই।এরজেরে হাসপাতাল ভাঙচুর, নার্সিং হোম ভাঙচুর, থানা পুলিশ, মামলা মোকদ্দমা সবই হচ্ছে।তদন্ত কমিটি গঠিত হচ্ছে। কিন্তু আদতে নিট ফল শূন্য। আজ পর্যন্ত কোনও তদন্ত কমিটির তদন্তের ফলাফল কেউ জানতে পারেনি।ফলে চিকিৎসা সংক্রান্ত ক্ষেত্রে গাফিলতির অভিযোগে চিকিৎসক মারধর।নিগৃহীত হবার ঘটনাগুলি কি হয় তা সবার অজানা। এমনকী এর পরবর্তীতে অ্যাকশন টেকেন কি নেওয়া হয় তাও জানা সম্ভব হয় না। ফলতঃ এই ধরনের ঘটনার কোন খামতি নেই।চিকিৎসক নিগ্রহ, মারধরের ঘটনা আমাদের সমাজে ঘটেই চলেছে। কেন এই ধরনের ঘটনা ঘটছে। চিকিৎসকদের সাথে রোগীর এবং রোগীর আত্মীয় পরিজনদের মধ্যে যখন দূরত্ব বাড়ে এবং কোনও জায়গায় ‘গ্যাপ’ থেকে যায় তখনই এ ধরনের ঘটনা ঘটে।
হাসপাতাল বা নার্সিং হোম কিংবা চিকিৎসা কেন্দ্র-স্বাভাবিকভাবে এই স্থানে রোগীর মৃত্যু ঘটবে, এটাই স্বাভাবিক। দেখতে হবে কোণ ধরনের মানুষের মৃত্যু হচ্ছে, কীভাবে হচ্ছে, স্বাভাবিকভাবে হচ্ছে, নাকি চিকিৎসাকেন্দ্রের কোনও গাফিলতি রয়েছে। চিকিৎসকদের গাফিলতি রয়েছে কিনা-যার ফলে রোগীর মৃত্যু হয়েছে কিনা।
সরকারী হাসপাতালে আমাদের রাজ্যের কথা ধরলে বলা যেতে পারে দীর্ঘদিন ধরেই রাজ্যের প্রধান রেফারেল হাসপাতাল জিবি, আইজিএমে রাতের বেলায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের ঘাটতি থেকে যাচ্ছে। এটা একদিনের কোনও অভিযোগ নয়। দীর্ঘদিন ধরে এই সমস্যা। চিকিৎসকদের রুটিন করে দিয়েও এই সমস্যার সমাধান করা যায়নি। জিবি হাসপাতালে বুধবার একটি অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটেছে। এতে ডাক্তার নিগৃহীত হয়েছেন। রোগীর পরিবার দুজন গ্রেপ্তার হয়েছেন। তদন্ত কমিটি, গঠিত হয়েছে। অথচ এটা হবার কথা ছিল না। রাতের বেলা প্রায়শই রোগীর মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে হাসপাতালগুলিতে উত্তেজনা ছড়ায়। এই ঘটনা আজকের নয়, দীর্ঘদিনের। অথচ এটা সমাধানের কোনও উদ্যোগ নেই কোনও আমলেই।
মেডিকেল কলেজ চালুর পর জিবি হাসপাতাল যেন পুরো ছেড়ে রাখা হয়েছে পিজি, জুনিয়র ডাক্তারদের হাতে। ফলে মাঝেমধ্যেই রোগীর পরিবারের সাথে চিকিৎসকদের প্রায়ই ঝামেলা লেগে থাকে। সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে, চিকিৎসক এবং রোগীর পরিবারের মধ্যে একটা গ্যাপ থেকে যাচ্ছে। এই গ্যাপ থেকেই যত ধরনের সমস্যার সৃষ্টি। চিকিৎসকরা রোগীর পরিবারকে ঠিকমত চিকিৎসা সংক্রান্ত তথ্য সরবরাহ করছে না।রোগীর পরিবার স্বাভাবিকভাবেই রোগী নিয়ে হাসপাতালে উদ্বিগ্ন থাকেন।এরপর চিকিৎসা সংক্রান্ত কোনও তথ্য সময় মতো না পেয়ে রোগীর ‘পার্টি’ অনেকসময় উত্তেজিত হয়ে পরেন। নার্সিং হোমেও মাঝেমধ্যে এই সমস্যা হয়। চিকিৎসকদের উচিত, রোগীর পার্টিকে প্রতিদিন ডেকে রোগীর উন্নতি / অবনতির বিষয়ে আপডেট দেওয়া। তা কি দেওয়া হয় হাসপাতালগুলিতে? না দিলে কেন দেওয়া হবে না? রোগীর পরিবারের অধিকার রয়েছে জানার, রোগীর কি ধরনের চিকিৎসা হচ্ছে হাসপাতালে। এই অবস্থা চলছে দীর্ঘদিন ধরে। এই অবস্থার পরিবর্তন জরুরি।
কর্পোরেট বেসরকারী হাসপাতালগুলিতে পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর, একবার রোগীকে ঢুকিয়ে দিতে পারলেই আর কে পায় চিকিৎসককে।চিকিৎসকের টিকির নাগাল না পোওয়া গেলেও ‘বিল’ কিন্তু চক্রবৃদ্ধি হারে বাড়তেই থাকে।কিন্তু রোগীর কথা কে শুনবে।কিছুদিন আগে আগরতলায় একটি কর্পোরেট হাসপাতালে এক রোগিণীকে একটি স্ত্রীরোগ সংক্রান্ত কারণে ভর্তি করানো হয়েছিলো। একটি মাইনর অপারেশনের পর তাকে এক দুদিনের মধ্যে ছুটি দেবার কথা ছিল। কিন্তু রোগিণীকে যখন ছাড়া হল তখন তা পেরিয়ে গেল দেড় মাস। পরবর্তীতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীর মৃতদেহ তার পরিবারের হাতে তুলে দিয়েছে। রোগীর পরিবারকে সে সময় ধরিয়ে দেওয়া হল ১৮ লক্ষ টাকার বিল। সম্প্রতি মানবাধিকার কমিশনের দাবড়ানি খেয়েছে ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। রোগীর পার্টি এক কোটি টাকার উপর ক্ষতিপূরণের দাবি করেছে। এটি একটি বিছিন্ন ঘটনা মাত্র। চিকিৎসকরা রোগীর সেবা করবেন এটাই ধর্ম। চিকিৎসকদের এটাই কাজ। কিন্তু সমস্যা হল রোগী কেবলমাত্র ‘পণ্য’ হিসাবে ‘ট্রিট’ হচ্ছে বর্তমান সময়ে। চিকিৎসকরা ভীষণ ব্যস্ত। কিসের পেছনে ছুটছেন তারা? অথচ রোগী এবং রোগীর পরিবার চিকিৎসকদের এখনও ‘ভগবান’ মনে করেন। ভগবান যেমন পৃথিবীর আলো দেখান, আর চিকিৎসক সেই জীবনকে বাঁচিয়ে রেখে নয়া জীবনদান করেন-সেজন্যই চিকিৎসকদের ‘ভগবানে’র সাথে তুলনা করা হয়।
সুতরাং রোগীর জীবন বাঁচাতে, রোগীর সেবার জন্য চিকিৎসক-রোগী সম্পর্ক মধুর হওয়া প্রয়োজন। চিকিৎসক-রোগী সম্পর্ক মধুর না হলে তাতে ‘গ্যাপ’ থাকলেই সমস্যা। এই ধরনের চিকিৎসক নিগ্রহ, মারধর, হাসপাতাল, নার্সিং হোম ভাঙচুর হতেই থাকবে। এটা কোনও মতেই কাম্য নয়। সবার সহযোগিতা কাম্য এক্ষেত্রে। সরকারী নীতিও বদলানো প্রয়োজন।
অনলাইন প্রতিনিধি :-বিনা টেন্ডারে প্রায়পঁয়ত্রিশ লক্ষ টাকার কাজের বরাত পাইয়ে দেওয়া এবং কাজ সমাপ্তের আগেই…
অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যের প্রধানসরকারী রেফারেল হাসপাতাল জিবির চিকিৎসা পরিষেবার হাল যে ক্রমেই আরও বেহাল দশার…
অনলাইন প্রতিনিধি :-দুর্নীতি ও কেলেঙ্কারিতে মুখ থুবড়ে পড়েছে কাঞ্চনপুর আইসিডিএস প্রজেক্টের দশদা সিডিপিও অফিসের কাজকর্ম।…
অনলাইন প্রতিনিধি :-পুলিশের সাথে কৃষকদের সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠলো শম্ভু ও খানৌরি সীমান্ত। দুই সীমান্ত…
অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যের প্রধান সরকারী হাসপাতাল জিবিতে আবারও চিকিৎসার অবহেলা ও গাফিলতিতে রোগীর মৃত্যু ঘিরে…
অনলাইন প্রতিনিধি :-কলকাতা স্পোর্টস ক্লাবের উদ্যোগে ক্যালকাটা স্পোর্টস জার্নালিস্ট ক্লাবের বিটিএ অনূর্ধ্ব ১৩ মহিলা ফুটবল…