সুস্মিতা দেবকে রাজ্যসভায় পাঠাচ্ছে না তৃণমূল।

 সুস্মিতা দেবকে রাজ্যসভায় পাঠাচ্ছে না তৃণমূল।
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :- ত্রিপুরা বিধানসভার ভোটে তৃণমূলের অন্যতম মুখ ছিলেন তিনি।সেই সুস্মিতা দেবকে আর রাজ্যসভায় পাঠাচ্ছেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যসভায় ছয়টি আসনের জন্য সোমবার সকাল দশটায় তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে দলের টুইটার হ্যান্ডল থেকে টুইট করে রাজ্যসভার ছয় প্রার্থীর যে তালিকা প্রকাশ করা হয়, তাতে সুস্মিতা দেবের সঙ্গে নাম নেই দার্জিলিঙের তৃণমূল নেত্রী শান্তা ছেত্রীরও। পুরনোদের মধ্যে যাদের এবারও রাজ্যসভায় তৃণমূল পাঠাচ্ছে তারা হলেন রাজ্যসভায় তৃণমূলের দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন, উপদলনেতা সুখেন্দুশেখর রায়, দলের সর্বভারতীয় শ্রমিক সংগঠনের সভানেত্রী দোলা সেন। প্রয়াত কেন্দ্ৰীয় মন্ত্রী নেতা তথা ত্রিপুরার প্রাক্তন সাংসদ সন্তোষমোহন দেবের কন্যা সুস্মিতা ও শান্তার জায়গায় রাজ্যসভায় যাচ্ছেন দুই নতুন মুখ। ‘বঙ্গ সংস্কৃতি মঞ্চে’র সভাপতি, সমাজকর্মী সামিরুল ইসলাম এবং আলিপুরদুয়ার জেলার তৃর্ণমূল সভাপতি নেতা প্রকাশ সিং বড়াইক।একুশের বিধানসভা নির্বাচনে আলিপুরদুয়ার লোকসভার পাঁচটি আসনেই জিতেছিল বিজেপি৷ সেখানকার বিজেপি সাংসদ জন বার্লা বর্তমানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী উত্তরবঙ্গেরই কোচবিহার থেকে লোকসভায় নির্বাচিত নিশীথ অধিকারী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী। ফলে চব্বিশে উত্তরবঙ্গের ভোটারদের বার্তা দিতেই প্রকাশ বড়াইককে তৃণমূল রাজ্যসভায় পাঠাচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। তৃণমূলের ছয় প্রার্থীর তালিকায় দুটি চমক রয়েছে। একটি, ৩৫ বছর বয়সি দিল্লী আইআইটি থেকে স্নাতকোত্তর, পেশায় কলকাতার একটি কলেজে রসায়নের অধ্যাপক সামিরুল ইসলাম এবং দলের জাতীয় মুখপাত্ৰতথা আরটিআই আন্দোলনের পরিচিত মুখ সাকেত গোখলে। বীরভূমের কৃষক পরিবারের সন্তান সামিরুল। গত বিধানসভার ভোটে ‘নো ভোট টু বিজেপি’ বলে রাজ্যে যে জোরলো নাগরিক আন্দোলন শুরু হয়েছিল, তার নেতৃত্বে ছিলেন সামিরুল। তৃণমূলের মিছিলে তাকে কখনও হাঁটতে দেখা যায়নি। কিন্তু ওই সময় থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ন্যাকনজরে চলে আসেন তিনি। এদিন সামিরুল সংবাদমাধ্যমকে বলেন, রাজনীতি আমার কাজ ছিল না কখনও। আমার কাজ ছিল অনগ্রসর শ্রেণীকে সংগঠিত করা। ছয় প্রার্থীর মধ্যে পুরানো তিন মুখ মনোনয়ন পাবেন রাজ্যসভায়, বাকি তিনজন নির্বাচনে লড়বেন। যদিও জয় তাদের নিশ্চিত।আগামী মাসে পশ্চিমবঙ্গ থেকে রাজ্যসভায় ছয়টি আসন শূন্য হচ্ছে।এই পর্বে মেয়াদ শেষ হচ্ছে ডেরেক, সুখেন্দুশেখর,দোলা সেন, সুস্মিতা এবং শাস্তা ছেত্রীর। এদের মধ্যে সুস্মিতা এবং শান্তাকে তৃণমূল যে আর রাজ্যসভায় পাঠাতে চাইছে না, তা নিয়ে আগেই গুঞ্জন শুরু হয়েছিল। বাস্তবে দেখাও গেল তাই। উল্লেখ্য, গোয়ার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লুইনজো ফেলেইরো তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ায় ওই আসনে উপনির্বাচন হতে চলেছে। ফেলেইরোর শূন্য আসনে সরাসরি ভোট হবে না, হবে উপনির্বাচন, সেখানে জয়ী হতেই লড়বেন সাকেত গোখলে। তথ্য জানার আইনেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মুখে ব্যবহৃত টুকড়ে টুকড়ে গ্যাং’ শব্দবন্ধের ব্যবহার নিয়ে মোদি সরকারকে প্রশ্ন করেছিলেন তিনি।সাকেত দাবি করেন, তার ওই প্রশ্নের কোনও জবাব দেয়নি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। উল্টে আর্থিক নয়ছয়ের অভিযোগে তাকে একাধিকবার গ্রেপ্তার করে ইডি। ২০২১ সালের আগষ্টে সৌগত রায় ও যশবন্ত সিন্হার হাত ধরে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার আগে সাকেতের করা ‘আরটিআই’ প্রশ্নের ভিত্তিতে এমন বহু তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে, যা পরবর্তী কালে জাতীয় রাজনীতিতে চর্চার কেন্দ্রে উঠে এসেছে। এছাড়া প্রবীণ কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্যের মেয়াদও শেষ হচ্ছে আগামী আগষ্টে। ছয় বছর আগে তৃণমূলের সমর্থন পেয়েই রাজ্যসভায় গেছিলেন প্রদীপবাবু। এবার যেহেতু কংগ্রেসের বিধায়ক সংখ্যা খাতায় কলমে মাত্র এক (তিনিও যোগ দিয়েছেন তৃণমূলে), তাই কোনও কংগ্রেস প্রার্থীর রাজ্যসভায় যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। বদলে এ রাজ্য থেকে বিজেপি এই প্রথম কোনও রাজ্যসভার সাংসদ পেতে চলেছে। বিজেপি অবশ্য এখনও সেই প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেনি।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.