স্টেট ডমিসাইল বিতর্ক।

 স্টেট ডমিসাইল বিতর্ক।
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

সরকারী চাকরিতে বহি:রাজ্যের চাকরি প্রার্থীদের সুযোগ নিয়ে “স্টেট ডমিসাইল” বিতর্ক সম্প্রতি রাজ্যে মাথাচাড়া দিয়েছে। এতে বেকারদের মধ্যে অনেকটাই অসন্তোষ, ক্ষোভ ইত্যাদি পরিলক্ষিত হচ্ছে। বিশেষ করে টিপিএসসির বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় রাজ্যের বেকারদের পাশাপাশি বহি:রাজ্যের বেকারদের জন্য ওপেন পরীক্ষায় বসার সুযোগ করে দেওয়ায় রাজ্যের বেকারদের মধ্যে অনেকটাই হতাশা দেখা দিয়েছে। তারা প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে যেতে পারে এরকম একটা ভাবনা তাদের মনে ঘোরাফেরা করছে। এর আগে জেআরবিটির মাধ্যমে রাজ্যে গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডির যে পরীক্ষা হয়েছে তাতেও বহি:রাজ্যের বহু প্রতিযোগী অংশ নিয়েছে এবং তারা পরীক্ষায় সফল হয়েছে বলে খবর।তবে জেআরবিটির চাকরি সংক্রান্ত বিষয়টি এখনও ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে।এ রাজ্যে শিল্প প্রায় নেই। সরকারী চাকরির সুযোগ প্রায় সীমিত। টেট দিয়ে শিক্ষা দপ্তরে কিছু চাকরি হচ্ছে।আর টিপিএসসির মাধ্যমে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা দিয়ে কিছু চাকরি,এই যা। এর মধ্যে রাজ্যের বেকারদের পাশ কাটিয়ে বহি:রাজ্যের বেকাররা যদি বেশিরভাগ চাকরি আদায় করে নেয় তাহলে রাজ্যের বেকারদের কী হবে। বহুদিন ধরে টিপিএসসিতে এই প্রথা চালু রয়েছে। রাজ্য প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় ডমিসাইল লাগে না। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা সবার জন্য ওপেন। যেমন গত মে ত্রিপুরা জুডিশিয়াল সার্ভিসের পরীক্ষা হয়েছে তাতে বেশিরভাগ চাকরিই গেছে বহি:রাজ্যের ছেলেমেয়েদের দখলে। রাজ্যের ছেলেমেয়েরা পিছিয়ে গেছে এক্ষেত্রে। একমাত্র স্টেট ডমিসাইল না থাকার কারণেই সেটা হয়েছে।এ রাজ্যের নিজস্ব আয় প্রায় নেই। থাকলেও খুবই সীমিত। প্রতিটি ক্ষেত্রে কেন্দ্রের দিকে চেয়ে থাকতে হয়। অর্থাৎ রাজ্য এখনও কেন্দ্রনির্ভর। সুতরাং চাকরির পরীক্ষায় সর্বভারতীয় ক্ষেত্রের জন্য দরজা খোলা রেখে আমাদের কী লাভ ?
সরকার যারা পরিচালনা করছেন তাদের ভাবনায় কবে আসবে বিষয়টি। আমাদের রাজ্যের ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যতের কথা না চিন্তা করে আমরা সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে দরজা খোলা রেখে চলেছি। ফলে চাকরি চলে যাচ্ছে বাইরের ছেলেমেয়েদের কাছে।এ রাজ্যে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার যে কোচিং নেবে ছাত্রছাত্রীরা এর ব্যবস্থাও সীমিত। কিছু বেসরকারী সংস্থা রয়েছে। সরকারী পরিকাঠামো নেই বললেই চলে। ফলে রাজ্যের ছাত্রছাত্রীরা এমনিতেই পিছিয়ে। এর উপর টিপিএসসির কিছু পদে ছাত্রছাত্রীরা তথা গ্র্যাজুয়েশনের পর বেকাররা কিছু পড়াশোনা করে পরীক্ষা দিয়ে থাকে। তাদেরও চাকরির দরজা দিনদিন হারিয়ে যাচ্ছে।সম্প্রতি টিপিএসসি পরিচালিত কৃষি আধিকারিকের পদ, ত্রিপুরা ইঞ্জিনীয়ারিং সার্ভিসের পদে স্টেট ডমিসাইল নিয়ে বিতর্ক দানা বঁধেছে। বিতর্ক আর কিছুই নয়, বহি:রাজ্যের ছাত্রছাত্রীদের জন্য কিরির দরজা খোলা এ রাজ্যে। এ রাজ্যের বেকাররা এতে করে হতাশ। সামনের মাসেই ত্রিপুরা ইঞ্জিনীয়ারিং সার্ভিসের পরীক্ষা। ২০১৬ চালের পর প্রায় সাত বছর পর এই পরীক্ষা হচ্ছে। এই পরীক্ষার জন্য রাজ্যের ইঞ্জিনীয়ারদের পাশাপাশি বহি:রাজ্যের বহু নামকরা প্রতিষ্ঠান যমন আইআইটি, এনআইটি সহ বহি:রাজ্যের নাম করা সরকারী, বসরকারী প্রতিষ্ঠান থেকে পাস করা প্রচুর ইঞ্জিনীয়ার আবেদন করেছেন। এতে করে রাজ্যের বেকারদের মধ্যে হতাশা এবং ক্ষোভ তৈরি হওয়া স্বাভাবিক। রাজ্য সরকার স্টেট ডমিসাইলের কোনও প্রভিশন রাখেনি। তেমনি বাংলা, ককবরক ভাষার ক্ষেত্রে ডিজারেবল এটাও বলেনি। ফলে বহি:রাজ্যের বেকাররা আবেদন করছে। কেন এমন হবে। রাজ্যের সীমিত চাকরির মধ্যে বহি:রাজ্যের বেকাররা এসে থাবা বসাবে কেন ?এতে রাজ্যের বেকাররা কি পিছিয়ে পড়বে না? একটি রাজ্য রকারের কাছে বেকারদের প্রত্যাশা থাকে যেখানে চাকরির সুযোগ সীমিত সেখানে স্টেট ডমিসাইল ব্যবস্থা লাগু করা। রাজ্য সরকারের উচিত অবিলম্বে রাজ্যের বেকারদের স্বার্থে স্টেট ডমিসাইল ব্যবস্থা চাকরির প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় এ রাজ্যে লাগু করা। রাজ্যে বেকাররা তা চাইছেন। ইতিমধ্যেই ক্যাম্পেন চলছে জোরকদমে বকারদের তরফে। রাজ্য সরকারের কর্ণগোচর হয় কি না এদিকেই তাকিয়ে রাজ্যের বেকারমহল ।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.