রাজ্য মধ্যশিক্ষা পর্ষদের পরীক্ষা ফেব্রুয়ারী মাসে করার উদ্যোগ!!
স্ট্রং রুমে বসে ফুটেজ দেখতে পাবেন প্রার্থীরা!!
ভোট আর গণনার মাঝখানে ১৪ দিনের বিরতি। এই দীর্ঘ সময়ে স্ট্রং রুমে কি অবস্থায় থাকবে ইভিএম বন্দি জনমত— এ নিয়ে মাঝেমাঝেই প্রশ্ন আসে জনমনে। এ নিয়ে এ দিন খোলসা করলেন মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক কিরণ গিত্যে। জানালেন, স্ট্রং রুমের দরজায় দরজায় সিসিটিভি লাগানো রয়েছে। সেই ছবিগুলি মনিটর হয় একটি অন্যকক্ষে। যে কোনও প্রার্থী বা প্রতিনিধি ওই কক্ষে গিয়ে যেকোনও দিনের যে কোনও সময়ের দৃশ্য রিভিউ করে দেখতে পারবেন। ঘরটিতে বসার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। প্রশাসনের তরফে একজন করে টিসিএস অফিসার তিন শিফটে ২৪ ঘন্টা স্ট্রং রুম নিরাপত্তার জন্য কাজ করছেন। স্ট্রং রুম পাহারায় ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা বলয়ে প্রথমে সিআরপিএফ এরপরে টিএসআর আর এরবাইরে ত্রিপুরা পুলিশ নিযুক্ত রয়েছে। বস্তুত নির্বাচনোত্তর সন্ত্রাস নিয়েই সাংবাদিক সম্মেলন ডেকেছিলেন গিত্যে। তিনি বলেন, কমিশনের গৃহীত জিরো পোল ভায়োলেন্স শুধু ভোটগ্রহণ পর্যন্তই নয়। গণনার পরেও থাকবে মিশন। রাজ্যে পর্যাপ্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী রাখা হবে গণনার পরও। তিনি আহ্বান জানান এত বিশাল সংখ্যক ভোটদান দেশের মানুষের কাছে ত্রিপুরার স্বতন্ত্র পরিচয় তুলে ধরে। কিন্তু এরপর নির্বাচনোত্তর সন্ত্রাস ত্রিপুরার ভাবমূর্তি বাইরের মানুষের সামনে খারাপ করবে। তিনি অনুরোধ জানান, কোথাও হিংসার ঘটনা ঘটলে পাল্টা হিংসার ঘটনায় না গিয়ে থানাকে বলুন, প্রতিকার হবেই। মহকুমাশাসকের অফিসেও বলা যেতে পারে। প্রসঙ্গত গিত্যে জানান, রাজ্যে ভোট পড়েছে ৮৭.৭৬ শতাংশ। এর সঙ্গে পোস্টাল ব্যালট ২.১৯ শতাংশ যোগ হয়ে এখন তা ৮৯.৯৫ শতাংশ হয়েছে। গণনার দিন আরও কিছু নতুন পোস্টাল ব্যালট এসে জুড়বে। এখনও কিছু পোস্টাল ব্যালট আসা বাকি। গিত্যে বলেন, ভোট ৯০ শতাংশ পার হতে পারে। সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার জেলাশাসক দেবপ্রিয় বর্ধন ও পুলিশ আধিকারিক শংকর দেবনাথ সহ সিএপিএফের বিভিন্ন বাহিনীর কমান্ডেন্টরা। কিরণ গিত্যে জানান, শনিবার রাজ্যের প্রত্যেকটি মহকুমায় মহকুমাশাসকদের সভাপতিত্বে সকল রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে শান্তি বৈঠক করা হয়েছে। সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্য নির্বাচনি আধিকারিক জানান, রাজ্যে শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে সুরক্ষা বাহিনী রয়েছে। ভোটের দিন অর্থাৎ ১৬ ফেব্রুয়ারী ৬টি বিক্ষিপ্ত ঘটনা সংঘটিত হয়েছিল। কিন্তু ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের ২০০ মিটারের মধ্যে কোনও ধরনের ঘটনাই হয়নি। ভোট পরবর্তী সময়ে এখন পর্যন্ত মোট ১৬টি ঘটনা হয়েছে। এর মধ্যে গোমতী, ঊনকোটি ও পশ্চিম ত্রিপুরা জেলায় ২টি করে, সিপাহিজলা জেলায় ৯টি ঘটনা। প্রতিটি ঘটনার ক্ষেত্রেই এফআইআর হয়েছে। মুখ্য নির্বাচনি আধিকারিক সাংবাদিক সম্মেলনে আরও জানান, ভোটের দিন ৪টার পর রাজ্যে ১,৬৮২টি পোলিং স্টেশনে ভোটগ্রহণ করা হয়েছিল। প্রায় ২ লক্ষ ভোটার সে সময় ভোটদান করেন। ধনপুর বিধানসভা কেন্দ্রের তৈবান্দালে সবচেয়ে বেশি রাত পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলেছিল। ভোটপর্ব মিটে যাওয়ার পর ইভিএমগুলিকে প্রার্থী এবং অবজারভারদের উপস্থিতিতে স্ট্রং রুমে সীল করে রাখা হয়েছে। স্ট্রং রুমের সুরক্ষার জন্য সিএপিএফের জওয়ান, টিএসআর, রাজ্য পুলিশকে নিয়ে তিনটি স্তরে সুরক্ষা প্রদান করা হচ্ছে। তিনি আরও জানান, শুক্রবার ৬০টি বিধানসভা কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার ডায়েরি, ফর্ম-এ, ফর্ম-সির স্ক্রুটিনির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কোথাও পুন:নির্বাচনের প্রয়োজন নেই বলে জানিয়েছেন পর্যবেক্ষকরা। সাংবাদিক সম্মেলনে পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার জেলাশাসক ও পুলিশ আধিকারিক জনগণকে শান্তি, সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য আহ্বান জানান। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে গিত্যে বলেন, ভোট পরবর্তী ১৬টি ঘটনার সবগুলিতেই এফআইআর হয়েছে। গ্রেপ্তার হয়েছে ২১ জন। নোটিশ দেওয়া হয়েছে ১৫০ থেকে ২০০ জনকে। প্রসঙ্গত, ২ মার্চ ভোট গণনার পর চার মার্চে নির্বাচন প্রক্রিয়া শেষ হচ্ছে বলে জানান সিইও গিত্যে।কৈলাসহর মহকুমাশাসক সাংবাদিক সম্মেলন করে জানিয়েছেন, ১৬ ফেব্রুয়ারী বিধানসভা ভোট কোনও ধরনের অশান্তি ছাড়াই সম্পন্ন হবার পর রাজ্যের অন্য জায়গায় বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটলেও আজ অবধি কৈলাসহর মহকুমায় কোনও ধরনের অশান্তির ঘটনা ঘটেনি। শনিবার বিকালে কৈলাসহরে সাংবাদিক সম্মেলন করেন মহকুমাশাসক প্রদীপ সরকার। মহকুমাশাসক বলেন, গত ১৬ ফেব্রুয়ারী বিধানসভা ভোটের দিন কিংবা ভোট চলাকালীন কৈলাসহর মহকুমায় কোনও ধরনের বিক্ষিপ্ত কিংবা হিংসাত্মক ঘটনা ঘটেনি। ভোটের পরেও আজ অবধি কোনও দলের পক্ষ থেকে কোনও ধরনের অভিযোগ নেই। দুপুরে মহকুমাশাসকের চেম্বারে কংগ্রেস, সিপিএম এবং বিজেপির নেতাদের নিয়ে বৈঠক করা হয়েছে। বৈঠকে প্রতিটি রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে জানানো হয় কোনও ধরনের হিংসাত্মক ঘটনা হবে না কৈলাসহরে। মহকুমার চণ্ডীপুর ও কৈলাসহর দুইটি বিধানসভার ইভিএম আরকেআই স্কুলে স্ট্রং রুমে রয়েছে এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর পাশাপাশি প্রতিটি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরাও পাহারা দিচ্ছেন। কমলপুরেও মহকুমাশাসক সর্বদলীয় বৈঠক করেন। নির্বাচনোত্তর পরিবেশ স্বাভাবিক রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। পরে সাংবাদিকদের নিয়ে বৈঠকে কথা হয়। সন্ধ্যায় আহূত সাংবাদিক বৈঠকে মহকুমাশাসক লালরিং নেতা ডারলং ও এসডিপিও শংকর দাস বৈঠক রাখেন। মহকুমাশাসক শ্রীডারলং জানান, রাজনৈতিক দলগুলির প্রতিনিধিরা পরিবেশ স্বাভাবিক রাখা ও প্রশাসনের সাথে সর্বদা যোগাযোগ রাখার ব্যাপারে সহমত পোষণ করেছেন। এবার মহকুমার দুইটি বিধানসভা কেন্দ্রে কোনও গোলযোগ হয়নি। নয়টি বিধানসভা কেন্দ্রে নব্বই শতাংশের উপর মতদান হয়েছে। দুই কেন্দ্রে প্রায় সাতাশি শতাংশ মানুষ ভোট দিয়েছে। বিভিন্ন পথে রাতের টহল অব্যাহত থাকবে। সাংবাদিকদের এসডিপিও শ্রীদাস জানান, যে কোনও ধরনের অভিযোগ সাথে সাথে গ্রহণ করা হচ্ছে। বৈঠকে জানানো হয়, ভোট গণনা হবে দুই কেন্দ্রের একসাথে। মোট আটাশটি টেবিলে গণনা হবে। মহকুমার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য সবার সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।