স্তন ক্যান্সার চিহ্নিতকরণের মেশিন পড়ে থাকলেও চালু হয়নি
আগরতলা অটল বিহারী আঞ্চলিক ক্যান্সার হাসপাতালে ম্যান পাওয়ারের সংকটে অত্যাধুনিক মেশিনে রোগীর রোগ চিহ্নিত করণে রোগীর অপেক্ষমাণ তালিকা দীর্ঘ হওয়ায় রোগীরা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। তবে স্বাস্থ্য সচিব ডক্টর দেবাশিস বসু জানান, রোগীর দুর্ভোগ অবসানে দ্রুত সব ব্যবস্থা করা হচ্ছে।এদিকে ক্যান্সার হাসপাতালে বহু দামি ও আধুনিক মেমোগ্রাফি মেশিন মহিলাদের স্তন ক্যান্সার চিহ্নিতকরণে এক বছর আগে আনা হলেও এখনও চালু হয়নি।এদিকে,এমআরআই, সিটি স্ক্যান ও সনোগ্রাফি মেশিনে ক্যান্সার রোগ পরীক্ষা করানোর জন্য চিকিৎসকরা ব্যবস্থাপত্রে লিখে দিচ্ছেন। কিন্তু ওইসব মেশিনে রোগ পরীক্ষা করানোর জন্য প্রয়োজনীয় রেডিওলজিস্ট ও রেডিওগ্রাফার হাসপাতালে না থাকায় রোগীরা নির্দিষ্ট দিন ও সময়মতো রোগ পরীক্ষা করাতে পারছেন না বলে রোগী ও রোগীর আত্মীয়স্বজনের অভিযোগ ইনডোর ও আউটডোর উভয় বিভাগের রোগীরাই রোগ পরীক্ষা করাতে গিয়ে বহুদিন ধরেই চরম বিড়ম্বনায় পড়ছেন। সনোগ্রাফি করানোর জন্য রোগীর অপেক্ষমাণ তালিকা সবচেয়ে বেশি। আউটডোরে চিকিৎসক দেখানোর পর চিকিৎসক সনোগ্রাফি পরীক্ষা করানোর জন্য প্রেসক্রিপশনে লিখে দেওয়ার পর সেই রোগীকে সনোগ্রাফি করানোর জন্য দেড়-দুই মাস অপেক্ষা করতে
হচ্ছে। ক্যান্সার একটি মারাত্মক রোগ।রোগ নির্ণয় ও রোগের পজিশন বুঝতে ও অন্যান্য বিষয় জানতে চিকিৎসক সনোগ্রাফি পরীক্ষা করানোর কথা লিখে দিলেও নির্দিষ্ট দিন ও সময়মতো হাসপাতালে পরীক্ষা না করানোয় দীর্ঘ অপেক্ষমাণ তালিকায় থেকে রোগীরা রোগযন্ত্রণায় খুব কষ্ট পাচ্ছেন।শুধু সনোগ্রাফিই নয়, সিটিস্ক্যান করাতে গিয়েও চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন
অনুযায়ী নির্দিষ্ট দিন ও সময়ে রোগ পরীক্ষায় সিটিস্ক্যান করাতে পারছেন না বলে রোগী ও রোগীর আত্মীয়স্বজনের অভিযোগ। সিটি স্ক্যানের ক্ষেত্রেও রোগীর নামের অপেক্ষমাণ তালিকা বড় হয়ে থাকছে। তাতে সিটিস্ক্যানের ক্ষেত্রেও রোগীরা রোগ নির্ণয়ে অপেক্ষমাণ তালিকায় থেকে রোগযন্ত্রণা নিয়ে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। বিস্ময়ের ব্যাপার হলো, আগরতলা ক্যান্সার হাসপাতাল উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মধ্যে একটি বড় হাসপাতাল হলেও প্রয়োজনীয় ম্যান পাওয়ারের সংকটে মেশিনে রোগ চিহ্নিতকরণে রোগীর দুর্ভোগের পাশাপাশি রোগীর চিকিৎসা পরিষেবা বিলম্বিত হচ্ছে বলে অভিযোগ। হাসপাতালে এমআরআই, সিটি স্ক্যান, সনোগ্রাফি, সিমোলেটর, রেডিওথেরাপি ইত্যাদি মেশিনে রোগ পরীক্ষা করানোর জন্য মাত্র একজন রেডিওলজিস্ট এবং দুজন রেডিওগ্রাফি কর্মী রয়েছেন।যেখানে ন্যূনতম দুই-তিনজন রেডিওলজিস্ট এবং চার-পাঁচজন রেডিওলজিস্ট কর্মী প্রয়োজন। ক্যান্সার হাসপাতালে প্রতিদিন প্রচুর রোগী আসছেন চিকিৎসা পরিষেবা নিতে। হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা হলো দুশো। ক্যান্সার রোগীও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। প্রতি বছরে গড়ে তিন হাজার মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন বলে স্বাস্থ্য দপ্তরের একটি সূত্রে জানা গেছে। এই অবস্থায় রাজ্যের একমাত্র ক্যান্সার হাসপাতালের গুরুত্ব দিন দিন বাড়ছেই। কিন্তু তারপরও পরিকাঠামোগত দুর্বলতায় রোগীর ভুগছেন। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির বিভিন্ন জায়গা থেকেও এখানে ক্যান্সার রোগের চিকিৎসা করাতে রোগীরা আসছেন। এদিকে, রবিবার রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের সচিব ডক্টর দেবাশিস বসুর হাসপাতালের এসব বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে জানান, মেশিনে রোগ পরীক্ষা করানোর জন্য ম্যান পাওয়ারের সংকটে রোগীর যে সমস্যায় পড়েছেন তা শীঘ্রই দূর হয়ে যাবে। রোগীরা যাতে চিকিৎসকে প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী নির্দিষ্ট দিনে ও সময়মতো এমআরআই, সিটি স্ক্যান সনোগ্রাফি ইত্যাদি সব ধরনের মেশিনে রোগ পরীক্ষা করাতে পারেন এরজন্য সব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, সনোগ্রাফি করাতে রোগীর নামে অপেক্ষমাণ তালিকাটা বেশি।সোমবারই জিবি হাসপাতাল থেকে সনোগ্রাফিে কাজ করার জন্য রূপেশ বণিক নামে এক সনোলজিস্ট ক্যান্সার হাসপাতালে যোগ দেবেন। স্বাস্থ্য দপ্তরের সচিব ডক্টর দেবাশিস বসু আরও জানান, রেডিওলজিস হিসাবে একজন অবসরপ্রাপ্তকেও চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ করা হবে খুব শীঘ্রই।এর প্রক্রিয়া চলছে। স্বাস্থ্য সচিব জানান, স্বাস্থ্য দপ্তর আগামী এক মাসের মধ্যে পাঁচজ রেডিওগ্রাফারকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ করবে ক্যান্সার হাসপাতালে। তিনি জানান রোগ পরীক্ষা করাতে এসে রোগীরা যাতে বিড়ম্বনায় না পড়েন তার সব ব্যবস্থা করা হচ্ছে। হাসপাতালে মহিলাদের স্তন ক্যান্সার রোগ চিহ্নিতকরণে বহু দামি আধুনিক ডিজিটাল মেমোগ্রাফি মেশিনটি এক বছর আগে আনা হলেও এখন ইনস্টল অর্থাৎ বসানো হয়নি বলে জানান স্বাস্থ্য সচিব ডক্টর বসু। তিনি জানান জিবি হাসপাতালে এই ধরনের একটি মেশিন দ্রুত চালু হচ্ছে। ক্যান্সার হাসপাতাে মেমোগ্রাফি মেশিনটি চালু করতে আরও তিন-চার মাস লেগে যাবে বলে ও জানান। জানা গেছে, মেশিনটি আশি লক্ষ টাকা নিয়ে এক বছর আগে আনা হয়।