স্ত্রী অপারগ, গর্ভে ধারণ করে সন্তান জন্ম দিলেন ‘পুরুষ’।
চিকিৎসকেরা তার স্ত্রীকে পরীক্ষা করে জানিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি কোনওদিন গর্ভে সন্তান ধারণ করতে পারবেন না। শেষ পর্যন্ত নিজের গর্ভে সন্তান ধারণ করে, সেই শিশুকে পৃথিবীর আলো দেখালেন তার ‘পুরুষ’ স্বামী। তিনি অবশ্য জন্মসূত্রে পুরুষ নন, রূপান্তরকামী পুরুষ। সাতাশ বছর বয়সি ওই রূপান্তরকামী পুরুষের নাম সেলেব বলড়েন। স্ত্রী নিমাকে তিনি বিয়ে করেছিলেন কয়েক বছর আগে। বার বার সন্তানধারণের চেষ্টা করেও ব্যর্থ’ হচ্ছিলেন নিমা। তিন বার তার গর্ভপাত হয়ে যায়। এর পরেই চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন, নিমা আর কখনও অন্তঃসত্ত্বা হতে পারবেন না। তার ‘স্বামী’ সেলেব মেয়ে হিসাবে জন্ম নিয়েছিলেন। কিন্তু তার অস্তিত্ব জুড়ে ছিল পুরুষ সত্তা। লিঙ্গবদল করে পুরুষ হতে গত ২৭ মাস ধরে হরমোনের ওষুধ খাচ্ছিলেন তিনি। ভালবাসার সঙ্গিনী কোনওদিন গর্ভবতী হতে পারবেন না শোনার পর তিনি লিঙ্গ রূপান্তরের ওষুধ খাওয়া বন্ধ করে সিদ্ধান্ত নেন,জৈবিক নারী হিসাবে তিনিই গর্ভে সন্তান ধারণ করবেন। অনলাইনে শুক্রাণুদাতার খোঁজ শুরু করেন দম্পতি। ছোট থেকেই সেলেবের সাজগোজ, আদব-কায়দা ছিল একেবারে ছেলেদের মতো। সন্তানধারণের পর যখন সেলেবের স্ফীতোদর দেখা দিতে শুরু করল,তখনই চারদিকে শুরু হল নিন্দা ও কটাক্ষ। কটাক্ষ শুনেও সেই সব কথায় কান দেননি সেলেব। সমাজমাধ্যমের ট্রোল বাহিনীকে সেলেব সোজাসাপটা জানিয়ে দেন, ‘আমি বাবা ও মা, দুই-ই হতে চাই!’ সেলের-নিমার এই সিদ্ধান্তে পাশে ছিলেন তাদের পরিবার।মে মাসেই ফুটফুটে কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছেন তিনি। নরওয়ের একটি দৈনিককে সেলেব বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই আমার শরীর মেয়েদের মতো হলেও মনে মনে আমি নিজেকে পুরুষ মনে করতাম।আর সে কারণেই আমি লিঙ্গ পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নিই। হরমোনের একাধিক ওষুধ খেয়ে শরীরের মধ্যে বদল আনার গোটা পর্বটি মোটেই সহজ ছিল না। হরমোনের ওষুধ দেওয়ার সময়ে আমাকে বলা হয়েছিল, এই ওষুধ খেলে আমার ঋতুচক্র বন্ধ হয়ে যাবে, আর আমি সেই ওষুধ চলাকালীন কখনও মা হতে পারব না। সন্তানধারণের জন্য আমি এক মাস হরমোনের ওষুধ খাওয়া বন্ধ করে দিই, তার পরেই আমার আবার ঋতুচক্র শুরু হয়। ছয় মাসের মধ্যেই আমি সন্তানধারণ করে ফেলি।’ সন্তান জন্মে সহযোগিতার জন্য নরওয়ে সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন এই দম্পতি।