স্পেশাল এগজিকিউটিভ পদে আগ্রহ নেই শিক্ষিত বেকারদের!!

 স্পেশাল এগজিকিউটিভ পদে আগ্রহ নেই শিক্ষিত বেকারদের!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি:-রাজ্যব্যাপী বেকার বিক্ষোভের মুখে শেষ পর্যন্ত আরক্ষা দপ্তরের অধীন ‘ভবিষ্যৎহীন’ অনিয়মিত ছয় হাজার স্পেশাল এজিকিউটিভ পদে চাকরি দেওয়ার উদ্যোগ নিলেও শিক্ষিত বেকাররা এতে কোন আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।যদিও ভবিষ্যৎহীন অনিয়মিত স্পেশাল এগজিকিউটিভ পদে চাকরি দেওয়ার উদ্যোগ দু’বছর আগে নেওয়া হলেও এখনো পর্যন্ত চাকরি দিতে পারছে না সরকার।বেকার মহলে অভিযোগ উঠেছে, স্পেশাল এজিকিউটিভ পদে চাকরির নামে তাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার ও অনিশ্চয়তায় ঠেলে দেওয়া হবে।
বেকারদের চাকরি ইস্যুতে ইতিমধ্যেই ব্যাকফুটে চলে যাওয়া বিজেপি সরকার চাকরির নামে বেকার জীবন এক অনিশ্চয়তার মুখে ঠেলে দিচ্ছে।বেকারদের এমনভাবে চাকরি দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে যেখানে চাকরির স্থায়িত্বের বা নিয়মিত হওয়ার কোন সুযোগ থাকবে না।এমনকী যে কোন মুহূর্তে বেকারদের চাকরি চলে যেতে পারে। আরক্ষা দপ্তরের শীর্ষ আধিকারিকরা জানিয়েছেন দপ্তরে স্পেশাল এজিকিউটিভ পদে ছয় হাজার চাকরি প্রদানের প্রক্রিয়া চলছে।শীর্ষ আধিকারিকরা জানান, এ ধরনের পদে চাকরির ভবিষ্যৎ নিশ্চয়তা বললে তেমন কিছু নেই।জেলা পুলিশ সুপার অনিয়মিত কর্মচারী হিসাবে স্পেশাল এগজিকিউটিভ পদে চাকরির অফার ও পোস্টিং দেবেন।নামে স্পেশাল এগজিকিউটিভ হলেও এই চাকরিগুলি কার্যত এসপিও’র মতোই।এ ধরনের চাকরিতে থাকবে না কোন গ্র্যাচুইটি,পেনশনের ব্যবস্থাও।বেতনও মিলবে নামমাত্রই। অনেকটা ঠিকা কর্মচারীর মতোই হচ্ছে স্পেশাল এগজিকিউটিভের চাকরি। স্পেশাল এগজিকিউটিভ পদের চাকরির অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা শিক্ষিত বেকাররা বুঝে যাওয়ায় এখন আর এই চাকরির প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।উল্টো চাকরির নামে বেকারদের সঙ্গে নানা কৌশলে রসিকতা করার ঘটনার বিষয়টি বেকারদের সামনে স্পষ্ট হয়ে যাওয়ায় বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ ব্যক্ত করতে শুরু করেছেন।চাকরির নামে শিক্ষিত বেকারদের সঙ্গে বিজেপি সরকারের একের পর এক এ ধরনের নেতিবাচক ও বিধ্বংসী ভূমিকায় বেকার মহলে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। শিক্ষিত বেকাররা বিজেপি সরকার থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিচ্ছেন।যার প্রভাব সরাসরি পড়ছে বিজেপি দলীয় কর্মসূচিতে।শিক্ষিত বেকাররা এখন কার্যত বিজেপির দলীয় কর্মসূচিতে আর আসছেন না।সরকারী কর্মসূচীতেও শিক্ষিত বেকাররা কার্যত আসছেন না।যার প্রমাণ সম্প্রতি রাজধানীতে বিজেপির যুব মোর্চার মিছিল থেকে পেয়ে গেছেন দলের নেতৃত্ব ও নেতা-মন্ত্রীরা।
জেআরবিটি পরিচালিত গ্রুপ ডি পদের চূড়ান্ত মেধা তালিকা প্রকাশের পর যুব মোর্চাকে ধন্যবাদ র‍্যালি বের করে লেজেগোবরে অবস্থায় পড়তে হয়েছে।হাতে গোনা এক থেকে দেড়শ যুবক-যুবতীতে নিয়ে কোন মতে র‍্যালি শেষ করে কোন ধন্যবাদ সভার আয়োজন না করেই রণেভঙ্গ দিতে বাধ্য হয়।কেননা শিক্ষিত বেকাররা বুঝে গেছে বিজেপির পেছনে হেঁটে কোন লাভ নেই।চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনাও নেই। বিষয়টি ইতিমধ্যেই শিক্ষিত বেকাররা বুঝে যাওয়ায় এখন আর নেতা মন্ত্রীদের বাড়ি, সরকারী আবাসমুখী হচ্ছে না।দলীয় অফিসেও যাচ্ছে না।বেকারদের অভিযোগ ২০১৮ সালে নির্বাচনের আগে বিজেপি ভিশন ডকুমেন্টে প্রতিশ্রুতি ও ঘোষণা দিয়েছিল বিজেপি ক্ষমতায় এলে পঞ্চাশ হাজার পদে নিয়মিত চাকরি দেবে। রাজ্যে কোন ধরনের স্থির বেতন, অনিয়মিত, চুক্তিবদ্ধ, ক্যাজুয়েল, ডিআরডব্লিউ, পার্টটাইম চাকরি থাকবে না। সকল শ্রেণীর অনিয়মিত কর্মচারীদের নিয়মিত করা হবে।সপ্তম বেতন কমিশন কার্যকরী করা হবে।আশায় বুক বেঁধে শিক্ষিত বেকার যুবক-যুবতী থেকে শিক্ষক কর্মচারীরা বিজেপিকে ক্ষমতায় আনতে জীবন বাজি রেখে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন।আশ্চর্যজনক বিষয় হল বিজেপি ক্ষমতায় এলেও আজ পর্যন্ত শিক্ষক কর্মচারীদের ভাগ্যে সপ্তম পে কমিশন জোটেনি। অনিয়মিত কর্মচারীদের ভাগ্যও ফেরেনি। উল্টো অনিয়মিত কর্মচারীদের জীবনে নেমে আসে দুর্ভাগ্য। বামফ্রন্ট সরকারের সময়ে চালু থাকা ১০ বছর চাকরির পর নিয়মিত হওয়ায় প্রক্রিয়া বাতিল করে দিয়ে হাজার হাজার অনিয়মিত কর্মচারীর জীবন ও ভবিষ্যৎ নষ্ট করে দেয় বিজেপি সরকার। পুরনো পেনশন প্রথা বাতিল করে সরকার নতুন পেনশন প্রথা চালু করায় আর্থিকভাবেও বঞ্চিত হবেন শিক্ষক- কর্মচারীরা। ডাই-ইন-হারনেস প্রথাতেও পরিবর্তন করে কমচারীদের পরিবারকে কার্যত ঠকানো হয়।
এদিকে ভিশন ডকুমেন্টের প্রতিশ্রুতি ও ঘোষণা অনুযায়ী পঞ্চাশ হাজার পদে চাকরিতো হয়ইনি।উল্টো সরকারী দপ্তরগুলিতে বেসরকারী ঠিকাদারি (আউটসোর্সিং) সংস্থার মাধ্যমে বিভিন্ন স্তরে ঠিকা কর্মচারী নিয়োগ করেও শিক্ষিত বেকারদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত ও অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছে বিজেপি সরকার। সম্প্রতি গোটা রাজ্যে সরকারের এ ধরনের ভূমিকার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ও সমালোচনার ঝড়বইতে শুরু করেছে।রাজ্যব্যাপী শিক্ষক-কমচারী থেকে শিক্ষিত বেকাররা নানা ইস্যুতে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামতে শুরু করেছেন।কেউ কেউ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে। এসপিও’র রাজ্য সরকারের বেতন বঞ্চনার ইস্যুতে আদালতের দ্বারস্থ হলে আদালত এসপিও’র বেতন বাড়ানোর নির্দেশ দেয়। আদালতের রায়ে শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে সরকার এসপিও’র বেতন বাড়ায়। আদালতের রায়ে বেতন বাড়ালোও এর কোন ক্রেডিট নিতে পারেনি বিজেপি সরকার।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.