ত্রিপুরার সাহিত্য চর্চায় নয়া ইতিহাস রচনা করেছে উড়ান: জয় গোস্বামী।।
স্বাগত রাষ্ট্রপতি

নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী বুধবার দু’দিনের ত্রিপুরা সফরে এলেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত হওয়ার পরএটাই শ্রীমতী মুর্মুর প্রথম ত্রিপুরা সফর। সংবাদে প্রকাশ, দেশের সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু উত্তর পূর্বের রাজ্যগুলো সফর শুরু করেছেন। সেই সফর তিনি প্রথম ত্রিপুরা দিয়ে শুরু করেছেন। কাল তিনি আগরতলা থেকে গুয়াহাটির উদ্দেশে রওনা হবেন।
বুধবার নির্ধারিত সূচি মোতাবেক সকাল ১১টা ২ মিনিটে ভারতীয় বায়ুসেনার বিশেষ (বোয়িং) বিমান আগরতলা এমবিবি বিমানবন্দরে রাষ্ট্রপতিকে নিয়ে অবতরণ করে।

বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান রাজ্যপাল সত্যদেব নারায়ণ আর্য, মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক, মুখ্যসচিব, রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশক সহ অন্যরা। এরপর বিমানবন্দরেই রাষ্ট্রপতি শ্রীমতী মুমুকে গার্ড অব অনার প্রদান করে ত্রিপুরা পুলিশ ও টিএসআরের নারী শক্তি। যা রাজ্যের ইতিহাসে প্রথম। এই প্রথম রাজ্যে কোনও রাষ্ট্রপতিকে গার্ড অব অনার প্রদান করেছে নারী শক্তি। যা গোটা রাজ্যবাসীর মন কেড়ে নিয়েছে। গার্ড অব অনার টিমের নেতৃত্ব দিয়েছেন (প্যারেড কমাণ্ডার) আইপিএস কান্তা জাঙ্গির। তার নেতৃত্বে ত্রিপুরা পুলিশ ও নয়া নিযুক্ত টিএসআরের ১৮০ জন মহিলা সুরক্ষা কর্মী দেশের প্রথম আদিবাসী মহিলা রাষ্ট্রপতিকে গার্ড অব অনার দিয়েছেন।

যা রাজ্যের জন্য অত্যন্ত গর্বের। এই নিয়ে সন্দেহের কোনও অবকাশ নেই। দেশের যে কোনও রাজ্যে রাষ্ট্রপতির সফরকে বেশ সম্মানের ও গৌরবের বলে বিবেচিত হয়। রাষ্ট্রপতির পদই হচ্ছে দেশের মর্যাদার প্রতীক। তিনিই দেশের সাংবিধানিক প্রধান। তাই রাষ্ট্রপতি গোটা দেশের। একশ ত্রিশ কোটি জনতার প্রতিনিধি। তিনি কোনও রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি নন। রাষ্ট্রপতিকে নিয়ে রাজনীতিও বাঞ্ছনীয় নয়। এমনকি তার সফর ঘিরে কোনও বিতর্ক তৈরি করা বা তৈরি হওয়াও শোভনীয় নয়। তারপরেও রাষ্ট্রপতিকে রাজনীতির তুলাদণ্ডে তুলে মাপজোক করার প্রবণতা এড়ানো গেলো না।

রাজ্যের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিআইএম) রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুমুকে স্বাগত জানালেও, তার অনুষ্ঠান বয়কট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দলের এই সিদ্ধান্তের কথা মঙ্গলবারই বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছেন দলের রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী। ত্রিপুরার বামেদের এহেন সিদ্ধান্ত ঘিরে ইতিমধ্যে গুঞ্জন শুরু হয়েছে নানা মহলে।
তেমনি বিতর্ক এবং বিভ্রান্তি এড়ানো যায়নি রবীন্দ্রভবনে আয়োজিত রাষ্ট্রপতির অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্র ও সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত সরকারের বিজ্ঞাপন নিয়ে। আমন্ত্রণপত্রে এবং সরকারী বিজ্ঞাপনে স্পষ্ট উল্লেখ আছে মঞ্চে কারা কারা উপস্থিত থাকবেন।

এই নিয়েও যখন জল্পনা শুরু হয়, তখন বুধবার অনুষ্ঠান মঞ্চে দেখা গেল কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক, অধ্যক্ষ রতন চক্রবর্তী, শিক্ষামন্ত্রী রতনলাল নাথ, পরিবহণ মন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহ রায়কে। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, মঞ্চে যখন তারা থাকবেনই তাহলে আমন্ত্রণপত্রে এবং সরকারী বিজ্ঞাপনে তাদের নাম বাদ দেওয়া হলো কেন? এর পিছনে কি রহস্য লুকিয়ে রয়েছে?
যাইহোক, রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত হওয়ার পর দ্রৌপদী মুর্মু প্রথমবার ত্রিপুরা সফরে এসেছেন। চল্লিশ লক্ষ ত্রিপুরাবাসীর পক্ষ থেকে তাকে অনেক অনেক স্বাগত। তার এই সফরকে কেন্দ্র করে এবং রাষ্ট্রপতির হাতে যে সব জনকল্যাণকর এবং রাজ্যের একাধিক উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করানো হলো ওই সব প্রকল্প যেন প্রকৃত অর্থেই বাস্তবায়িত হয়, রাজ্যবাসীর এটাই কাম্য।
