স্বাধীনতা দিবসে উপেক্ষিত স্বাধীনতা সংগ্রামীরাঃ কংগ্রেস

 স্বাধীনতা দিবসে উপেক্ষিত স্বাধীনতা সংগ্রামীরাঃ কংগ্রেস
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

স্বাধীনতার ৭৫ তম বর্ষ উদযাপনের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হতেই সোমবার সন্ধ্যায় একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসে কংগ্রেস । মূলত ‘৭৫ বছরে আমরা কী পেলাম ‘ এ নিয়েই দীর্ঘ আলোচনা হয় প্রদেশ নেতৃত্বদের মধ্যে । পরে দলের বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মণ বিজেপি শাসিত জোট সরকারের উদ্দেশে বুধবার একগাদা প্রশ্ন ছুড়ে দেন । এদিন তার মূল প্রশ্ন ছিল , ‘ কোথায় গেলেন স্বাধীনতা সংগ্রামীরা ? প্রদেশ কংগ্রেস ভবনে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন , ‘ এমন একটা বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে যেন নরেন্দ্র মোদি স্বাধীনতা সংগ্রামী । এখানকার সমস্ত মন্ত্রীরা স্বাধীনতা সংগ্রামী । কোথাও একটিও তো ফ্ল্যাগ ফেস্টুন কিংবা ব্যানারে দেখা গেলো না স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ছবি । যারা এই স্বাধীন ভারতবর্ষকে উপহার দিতে গিয়ে বলিদান হয়েছেন ! বরং গোটা শহর এমনকী নানা অলিগলি পর্যন্ত নেতা – মন্ত্রীদের ছবি দিয়ে মুড়ে ফেলা হয় । তাঁর কথায় , এটি নিঃসন্দেহে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের উপেক্ষা করার শামিল । অসম্মান প্রদর্শন করা হয়েছে তাদের প্রতি । কংগ্রেস বিধায়ক বলেন , সেদিন লালকেল্লায় ৮২ মিনিটের যে বক্তব্য রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী তাতেও উপেক্ষিত ছিলেন । স্বাধীনতা সংগ্রামীরা । আজাদি কা অমৃত মহোৎসবের নামে ‘ মুখিয়া বাণিজ্যিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে মানুষের ভাবাবেগকে উসকে দিয়ে নির্বাচনি ফান্ড গড়েছেন’- মন্তব্য বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মণের । তাঁর কথায় , তিনদিনব্যাপী আয়োজিত কোনও অনুষ্ঠানেই ছিলো না কোনও নতুনত্ব । ‘ বরং যারা স্বাধীনতার ৫২ বছর পর্যন্ত তিরঙ্গাকে বিরোধিতা করে এসেছে , তারাই এখন দেশপ্রেমী হিসাবে নিজেদের তুলে ধরতে চাইছে । আসলে এসবই চমক ছাড়া আর কিছুই নয় ’ বলে মন্তব্য করেন সুদীপ । এ দিন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডা . মানিক সাহাকে উদ্দেশ্য করে তিনি জানান , স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে অন্তত নতুন কোনও করলেন প্রকল্প কিংবা অঙ্গীকার চাইছিলো মানুষ । কিন্তু তা না হয়ে শূন্যপদ পূরণ , স্বাস্থ্যবিমা , এসবের কথাই মানুষ আবারও শুনলেন মুখ্যমন্ত্রীর ভাষণে । যা এর আগেই মানুষ জানতে পেরেছেন । বিধায়ক শ্রীবর্মণ আরও বলেন , যে ১৭ লাখ টাকা ব্যয় করে মহাকরণে পতাকা উত্তোলন মুখ্যমন্ত্রী , তার থেকে কী ১৭ হাজার টাকাও বরাদ্দ করা যায়নি স্বাধীনতা সংগ্রামীদের জন্য ! না হয় কেনই বা এই রাজধানীতে বিশ্বকবিকে পুরানো মালা পরিহিত অবস্থায় দেখতে হলো স্বাধীনতা দিবসে ? এমনকী চিলড্রেন্স পার্কের সামনে স্বামী বিবেকানন্দ , আরও অন্যান্য স্থানে মাস্টার দা সূর্যসেন এবং এমন বহু মূর্তির গায়েই ঝুলতে দেখা গিয়েছে পুরানো মালা । শ্রী বর্মণের প্রশ্ন , স্বাধীনতা দিবসে খুব স্বাভাবিকভাবেই খুমুলুঙে একটি জমজমাট সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা যেতো । ১৩ থেকে ১৫ আগষ্টের মধ্যে কোনও একদিন সাংবাদিক অসাংবাদিক কর্মী , সম্পাদক কিংবা কর্ণধারদের নিয়েও অনুষ্ঠানের আয়োজন করা যেতো । কিন্তু এর একটিও না করে তিনদিনব্যাপী নানা অনুষ্ঠান মঞ্চে একই কথার চর্বিতচর্বণ করেন নেতা – মন্ত্রীরা । তিনি আরও বলেন , আজাদি কা অমৃত মহোৎসবের নামে আসলে নোংরা রাজনীতি করা হয়েছে । বহু জায়গায় জাতীয় পতাকার অবমাননা পর্যন্ত করা হয়েছে । এ দিন স্বাধীনতা সংগ্রামীদেরকে উপেক্ষা করায় সরকারের উঁচু থেকে নিচু স্তর পর্যন্ত সকলের হয়েই বীর শহিদদের প্রতি মুখ্যমন্ত্রীকে ক্ষমা চাইতে বলেন তিনি । এদিকে , পুলিশ মহা নির্দেশক অফিস থেকে গত পনেরো আগষ্ট ফাইল চুরি যাওয়া নিয়ে কংগ্রেস বিধায়কের দাবি , উচ্চ আদালতের একজন বিচারপতিকে দিয়েই গোটা ঘটনার তদন্ত করাতে হবে । তাঁর প্রশ্ন , কী করে এতো বিশাল সংখ্যক ফাইল চুরি গেলো পুলিশ মহানির্দেশকের মতো কার্যালয় থেকে ? একে গায়েব করানো হয়েছে বলেও সন্দেহ প্রকাশ করেন তিনি । কারণ তাঁর যুক্তি , ‘ অ্যাকশন নিলেই ঝোলা থেকে বেড়াল বেরিয়ে পড়বে । ‘

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.