স্মার্টসিটি প্রকল্পের কাজে বন্ধ উড়াল সেতু!!

 স্মার্টসিটি প্রকল্পের কাজে বন্ধ উড়াল সেতু!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যের
রাজধানী শহর আগরতলার যোগাযোগ ব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে উড়াল সেতু। শহরের পশ্চিম ও দক্ষিণাংশে যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে উড়াল সেতু প্রধান বিকল্প হিসাবে উঠে এসেছে চালকদের কাছে।গত কয়েক বছর ধরে এমন চলছে।ফলে শহরের যোগাযোগ ব্যবস্থার অনিবার্য উপকরণ একমাত্র উড়াল সেতু কোনও কারণে বন্ধ হলে দুর্ভোগের অন্ত থাকে না। বিশেষত যানবাহন নিয়ে শহরের দক্ষিণ দিক থেকে শহরমুখী এবং শহরের পশ্চিম দিক থেকে দক্ষিণ দিকে যাতায়াতকারী মানুষকে পড়তে হয় চরম বিপাকে।এমনিতেই যানজটে নাকাল হতে হয় শহরবাসীকে।শহরের দক্ষিণ ও পশ্চিমাংশে যেন এই সমস্যা আরও প্রকট হয়ে দাঁড়ায়।সকাল ও সন্ধ্যায় মানুষের কাজে বের হওয়ার এবং কাজ শেষে ঘরে ফেরার সময় এই সংকট মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। তার মধ্যে উড়াল সেতু বন্ধ পরিস্থিতি অবর্ণনীয় অবস্থায় এসে ঠেকেছে এমতাবস্থায় টানা দুইদিন ধরে সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত উড়াল সেতু বন্ধ করে রাখা হয়েছে। আগাম ঘোষণা না দিয়ে শহরের দক্ষিণ দিক, মানে ড্রপ গেটের দিকে উড়াল সেতু বন্ধ করে রাখায় দুর্ভোগ বেড়েছে মানুষের। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত বড়দোয়ালী থেকে ফায়ার ব্রিগেড চৌমুহনী আসতে সময় লেগে গেছে প্রায় আধ ঘন্টা। সাধারণত উড়াল সেতু দিয়ে বড়দোয়ালী থেকে ফায়ার ব্রিগেড চৌমুহনী পর্যন্ত আসতে সময় লাগে পাঁচ মিনিটের কম। উড়াল সেতু বন্ধ থাকায় নিয়মিত এর নিচে দিয়ে সড়ক ধরে চলাচল করা যানবাহনের ক্ষেত্রেও বড়দোয়ালী থেকে নাগেরজলা,বটতলা অথবা ফায়ার ব্রিগেড চৌমুহনী আসতে সময় গত দুদিন সময় লেগেছে অন্য দিনের তুলনায় দ্বিগুণ বেশি, কুড়ি মিনিট থেকে আধ ঘন্টার মতো।
আসলে এতোদিন উড়াল সেতু স্মার্টসিটির আওতায় আনা হয়নি।ফলে একাংশ চালক বেপরোয়াভাবে যানবাহন চালিয়ে একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটিয়েছে।অথচ তারা অনেক ক্ষেত্রে ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে। ট্রাফিক অথবা সাধারণ পুলিশের পক্ষে তাদের নাগাল পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে তারা আরও আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। হয়ে দাঁড়িয়েছে অন্য অনেক বিপদের কারণ।
এ কথা মাথায় রেখে সাত জানুয়ারী মঙ্গলবার সকাল থেকে রাজ্য এবং আগরতলা শহরের একমাত্র উড়াল সেতুটিতে স্মার্টসিটির আওতায় আনার কাজ শুরু করা হয়েছে। প্রথমে অনুমান করা হয় যে যানবাহন চলাচলের ব্যাঘাত না ঘটিয়ে সিসি টিভি ক্যামেরা বসানো সহ স্মার্ট সিটির আওতায় থাকা বিভিন্ন কাজ করা সম্ভব হবে। তারপর দেখা যায় যে, এভাবে স্মার্টসিটির কাজ করলে বিপদ আরও বাড়বে। আশঙ্কা দেখা দেবে দুর্ঘটনার। এই কারণে শেষ পর্যন্ত অনেকটা তাৎক্ষণিকভাবে উড়াল সেতুর দক্ষিণ অংশ থেকে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে রাখা হয়। উল্টো দিক থেকে যানবাহন চলাচলে অবশ্য কোনও ব্যাঘাত সৃষ্টি করা হয়নি। সেতুটির এক দিক সচল থাকায় মানুষের দুর্ভোগ পুরোপুরি মাত্র ছাড়িয়ে যায়নি।
জানা গেছে, উল্লিখিত কাজ শেষের দিকে এসে ঠেকেছে। বুধবার বিকালের মধ্যে সেতুর দক্ষিণ থেকে মাঝামাঝি অংশ অতিক্রম করে আরও উত্তর দিকে সিসি টিভি ক্যামেরা বসানো সহ আনুষঙ্গিক কাজ শেষ হয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরের আগে বাকি কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার আশা রয়েছে। এমনই দাবি স্মার্টসিটি প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত সূত্রের। সূত্রের খবর অনুসারে ইতোমধ্যে সেতুর সিংহভাগ স্মার্টসিটি প্রকল্পের আওতায় এসে গেছে। সেতুর বেশির ভাগ অংশে বেপরোয়াভাবে যানবাহন চালানোর বিষয়টি ধরা পড়ে যাবে ক্যামেরায়। আচমকা এবং যখন তখন ডান দিকে বাঁক নিলে পড়তে হবে বিপাকে। স্বয়ংক্রিয়ভাবে জরিমানা হবে যানবাহনের মালিকের বিরুদ্ধে।
এ নিয়ে জানতে চেয়ে যোগাযোগ করা হয়েছে রাজ্যের পূর্ত দপ্তরের সড়ক ও বিভাগের মুখ্য বাস্তুকার রাজীব দেববর্মার সঙ্গে।তিনি বলেন,এ বিষয়টি তাদের আওতায় নয়। শুধুমাত্র সংস্কারের প্রয়োজন পড়লেই পূর্ত দপ্তরের তরফে কাজ করা হয়।এই ক্ষেত্রে উড়াল সেতু সংস্কার কাজ করা হয়নি।পরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে যোগসূত্র রক্ষা করে এই কাজ করা হয়েছে স্মার্ট সিটি প্রকল্পের আওতায়।এ নিয়ে জানতে চেয়ে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি রাজ্যের ট্রাফিক পুলিশ সুপার মানিক দাসের সঙ্গে। স্মার্টসিটি প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত এক আধিকারিকের বক্তব্য উড়াল সেতুকে এই প্রকল্পের আওতায় আনা বেশ কিছুদিন ধরেই প্রায় অনিবার্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।ফলে সাধারণ মানুষের কিছুটা হওয়ার কথা মাথায় রেখেও এই কাজে হাত দিতে হয়েছে। এর ফলে আখেরে সবার সুবিধা হবে বলে তার বক্তব্য। তিনি আরও জানান, রাতে এই কাজ করা মুশকিল।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.