জম্মু-কাশ্মীররে উরি সেক্টরে সেনার সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে নিহত ২ জঙ্গি!!
হরিয়ানায় দঙ্গল!!

আগামী পাঁচ অক্টোবর হরিয়ানায় বিধানসভা ভোট। বর্তমানে হরিয়ানায় শাসনে বিজেপি।লোকসভা ভোটে সে রাজ্যে শাসক বিজেপিকে টেক্কা দিয়ে রেখেছে কংগ্রেস। দশটি আসনের মধ্যে পাঁচটি জয় পেয়েছে কংগ্রেস।এবার সেই নিরিখে বিধানসভা ভোটকে ফাইনাল হিসাবে ধরে নিয়ে খেলতে নেমেছে কংগ্রেস।ইতোমধ্যেই কংগ্রেস বার্তা দিয়ে রেখেছে রাজস্থানের মতো অবস্থা যেন হরিয়ানায় কোনও অবস্থায় কংগ্রেসের না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।রাজস্থানে গত বছর বিধানসভা নির্বাচন জিততে জিততে হেরে যায় কংগ্রেস।দুই নেতার কাজিয়ার মাশুল দিতে হয়েছে কংগ্রেসকে।এবার তাই হরিয়ানায় যাতে এর পুনরাবৃত্তি না হয় সেজন্য আগে থেকেই সতর্ক রয়েছে কংগ্রেস।কংগ্রেস হাইকমান্ড রাজ্য নেতৃত্বকে এই বার্তাই দিয়ে রেখেছে।সুতরাং এবার হরিয়ানায় আগে থেকেই ঝাঁপিয়েছে কংগ্রেস।সেই নিরিখে শাসক বিজেপি কিছুটা পিছিয়ে থেকে ভোট প্রচারে নেমেছে।রাজনৈতিক মহল মনে করছে,এবার হরিয়ানায় পরিবর্তনের সম্ভাবনা প্রবল।শাসক বিজেপির ঘরে আগেই অশান্তি দেখা দিয়েছিলো। এর জন্য দুস্মন্ত চৌতালার জেজেপি পার্টি আগেভাগেই সরকারের উপর থেকে সমর্থন তুলে নিয়েছিলো। এরপর কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্ব মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টরকেও তুলে নেয়।নয়া মুখ্যমন্ত্রী বানানো হয় নায়েব সিং ব্যা সাইনিকে।কিন্তু এত কিছুর পরও লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি ৫০% আসন বাঁচাতে পারেনি। অর্থাৎ দশটির মধ্যে পাঁচটি আসন জিতেছে বিজেপি। আর পাঁচটি গেছে কংগ্রেসের দখলে।
নবুই আসন বিশিষ্ট হরিয়ানায় গত দশ বছর ধরে শাসন করছে বিজেপি।হরিয়ানা কৃষক আন্দোলনের আঁতুড়ঘর।হরিয়ানার কৃষকরা রাস্তায় নেমে গত কয়েক বছর ধরে কৃষক স্বার্থে আন্দোলন করছে। হরিয়ানার ঘরে ঘরে রয়েছে যুবকদের উচ্চাশা,যারা কিনা সেনাবাহিনীতে কাজ করতে চায়।সেই যুবকদের কাছে অগ্নিবীর একটা ইস্যু। এবারের হরিয়ানার ভোটে অন্যতম একটা সংযোজন হচ্ছে অলিম্পিয়ান ভীনেশ ফোগাটের রাজনীতিতে আগমন।কংগ্রেস রাজনীতিতে যোগদান করেছেন সম্প্রতি ভীনেশ এবং প্রার্থীও হয়েছেন ভীনেশ।কুস্তিগীরদের নিয়ে দেশের রাজনীতি গত দুবছর ধরে সরগরম।উপরন্তু এবার অলিম্পিকের ময়দানে নজিরবিহীনভাবে ভীনেশ ফোগাটকে খালি হাতে ফিরতে হয়েছে।এ নিয়ে এদেশে কম জলঘোলা হয়নি।এর উপর তার দেশে ফিরে কংগ্রেসী রাজনীতিতে যোগদান এক অন্যমাত্রা নিয়ে এসেছে-বিশেষ করে হরিয়ানার রাজনীতিতে। নির্বাচনে এর কী প্রভাব পড়ে তা অবশ্যই দেখার রয়েছে। এরই মধ্যে হরিয়ানায় গিয়ে প্রচারের শুরুয়াত করেছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী।আর মাত্র দুই সপ্তাহের কিছুটা বেশি সময় রয়েছে ভোট প্রচারের। হরিয়ানায় গিয়ে ভোট প্রচারে প্রধানমন্ত্রী বেশি সময় ব্যয় করেছেন সংরক্ষণ ইস্যুতে। অথচ রাজ্যে সংরক্ষণ ইস্যু অন্যতম কোনও ইস্যু নয়। রাজনৈতিক মহল বুঝতে পারছে না প্রধানমন্ত্রী হরিয়ানায় গিয়ে সংরক্ষণ নিয়ে কী রাজনৈতিক তাস খেলতে চাইছেন।
অন্যদিকে কংগ্রেসের ঘরেও অশান্তি রয়েছে।তবে হুডা বনাম শৈলজার একটা লড়াই রয়েছে।আগে থেকেই কংগ্রেস এবার হাইকমান্ডের গুঁতো খেয়ে বেশ সতর্ক। রাজ্যে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি এবং কংগ্রেস ছাড়াও আপ,দুস্মন্ত চৌতালার জেজেপি, আইএনএসডির মতো দলও ময়দানে রয়েছে।তবে অন্তত ৭৫-৮০টি আসনে কংগ্রেস, বিজেপির সরাসরি টক্করই যে হতে যাচ্ছে তা পরিষ্কার।
মাঝে কংগ্রেস এবং আপের মধ্যে একটা আসন সমঝোতার উদ্যোগ দেখা গিয়েছিলো।কিন্তু তা আর হয়েওঠেনি।প্রশ্ন হল, কংগ্রেসের বাড়া ভাতে আপ কি শেষমেষ ছাই ফেলতে যাচ্ছে।এটা অবশ্য এখনও পরিষ্কার নয়।এর মধ্যেই দিল্লীর মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালও জেল থেকে ছাড়া পেয়েছেন।তিনিও হরিয়ানায় ভোট প্রচার করতে আসবেন। আপ শেষপর্যন্ত ভোটে কোনও প্রভাব ফেলতে পারবে কিনা তা সময়ই বলবে।তবে আপাতদৃষ্টিতে রাজনৈতিক ভোট বিশ্লেষকরা অবশ্য কংগ্রেসকে এখন পর্যন্ত হরিয়ানায় এগিয়ে রেখেছেন।এবার দেখার, সত্যি সত্যিই হরিয়ানায় বিজেপিকে বেগ দিতে কংগ্রেস পারে কিনা।নাকি রাজস্থানের মতোই কংগ্রেসের অবস্থা দাঁড়ায়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ইতিমধ্যেই জানিয়ে রেখেছেন যে হরিয়ানায় হ্যাট্রিক করছে বিজেপি।