হারিয়ে যাওয়া সংস্কৃতি পুনরুদ্ধার চান মুখ্যমন্ত্রী!!

 হারিয়ে যাওয়া সংস্কৃতি পুনরুদ্ধার চান মুখ্যমন্ত্রী!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-বৃষ্টিস্নাত পড়ন্ত বিকালে বুধবার থেকে শুরু হলো ৪২তম আগরতলা বইমেলা।চলবে আগামী পাঁচ মার্চ পর্যন্ত।এ বছর বইমেলায় স্টল সংখ্যা রয়েছে ১৯১টি। এর মধ্যে রাজ্যের মোট ১১০টি সহ পশ্চিমবাংলার ৬৬টি, আসামের ৬টি, উত্তরপ্রদেশের ২টি এবং রাজধানী দিল্লীর ২টি সহ বাংলাদেশ থেকে আরও মোট ৫টি স্টল রয়েছে।এ বছর মেলার মূল ভাবনা ‘ভব্য ভারত’।হাপানিয়াস্থিত আন্তর্জাতিক মেলা প্রাঙ্গণে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর আয়োজিত এই মেলার সূচনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা।কবি, সাহিত্যিক, লেখক, প্রকাশক এবং বিশিষ্ট গুণীজনদের মাঝে এ দিন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা হারিয়ে যাওয়া এক সংস্কৃতিকে পুনরুদ্ধারের কথা বলেন। তিনি বলেন,প্রযুক্তির যুগে বই পড়ার আগ্রহ যে কমছে এটা ঠিকই তবে যতোই কম্পিউটার কিংবা মোবাইলের প্রচলন বাড়ুক না কেন, বই পড়ার যে রস তা একেবারেই আলাদা। মোবাইল কিংবা কম্পিউটারে এটা কখনোই হয় না।তিনি বলেন, আগে বইকে আমরা যেভাবে উপহারস্বরূপ তুলে দিয়েছি একে অপরকে,এখন তা একেবারেই হারিয়ে গিয়েছে।পুষ্প স্তবকের পাশাপাশি বই উপহারের সংস্কৃতি ফিরিয়ে আনতে হবে। তিনি সব অংশের জনগণকেই হারিয়ে যাওয়া এই সংস্কৃতিকে পুনরুদ্ধারের ব্যাপারে এগিয়ে আসতে আহ্বান রাখেন।তার প্রশ্ন, কেন আমরা চেষ্টা করি না একে ফিরিয়ে আনতে? যদি আনা যায় তবে সারা বছরই বই কেনাবেচা যেমন হতো,উৎসাহিত হতেন প্রকাশকরা।বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শুরুতে এ দিন মুখ্যমন্ত্রী সামান্য হলেও কড়া ভাষায় মেলা কমিটিকে মেলার দিনক্ষণ চূড়ান্ত করার আগে সবদিক বিবেচনা করে দেখার জন্য গুরুত্ব আরোপ।বলেন, একাধিকবার এই মেলা নিয়ে বৈঠকে বসলেও এই সময়ে মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার কথা মাথায় ছিলো না কমিটির।৪৩তম বইমেলা শুরুর আগে এ দিন তাই ৪২তম আগরতলা বইমেলার মঞ্চ থেকেই এ ব্যাপারে সতর্ক করে দিলেন মেলা কমিটিকে।
ভাষণ রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী এ দিন মূলত ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশে বলেন, বইয়ের প্রতি আকর্ষণ এখন আগেকার মতো আর দেখতে পাচ্ছে না। তিনি তার ছাত্র জীবনের কথা উদাহরণ প্রসঙ্গে এনে বললেন,আগে বীরচন্দ্র স্টেট সেন্ট্রাল লাইব্রেরির সামনে ইট নিয়ে বই পড়ার জন্য দীর্ঘ লাইন দিতে হত আমাদের। এসব সংস্কৃতি এখন আর চোখে পড়ছে না।কম্পিউটার কিংবা মোবাইলে বর্তমান প্রজন্ম অনেক বেশি এগিয়ে যাচ্ছে ঠিকই, তবে এর ভালো দিক যেমন রয়েছে তেমনি খারাপ দিক কিংবা অসুবিধাও রয়েছে অনেক ক্ষেত্রে।তবে সব মিলিয়ে বই পড়ার যে আনন্দ কিংবা স্বাদ তা আর অন্য কারও সাথে মেলানো যায় না।তার আরও উদাহরণ,এখন তো দেখছি মোবাইলেও চিকিৎসা হচ্ছে। এটা খুব মারাত্মক।তিনি বইকে জানার জন্য সব অংশের জনগণকেই আরও বেশি করে উৎসাহিত করে তুলতে বলেন।শুধুমাত্র পাঠ্যবই নয়,এর বাইরেও যে একটি জগৎ রয়েছে এটা বই না পড়লে কখনোই বোঝা যায় না।৪২তম আগরতলা বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ দিন এর আগে স্বাগত ভাষণ রাখেন তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের সচিব ড.পিকে চক্রবর্তী।এছাড়াও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ থেকে আগত বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক সুভাষ সিংহ রায়। তিনি তার ভাষণে রাজ্য সরকার এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে টানা প্রশংসায় ভরিয়ে দেন।তিনি ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রীর বন্ধন আরও সুদৃঢ় করতে সকলকেই এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। অন্যদের মধ্যে রাজ্য বিধানসভার উপাধ্যক্ষ রামপ্রসাদ পাল, রাজ্য বিধানসভার মুখ্য সচেতক কল্যাণী রায়, আগরতলা পুর নিগমের মেয়র দীপক মজুমদার, বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশন, আগরতলার সহকারী হাইকমিশনার আরিফ মোহম্মদ,বিধায়িকা মিনারাণী সরকার এবং আরও অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।উদ্বোধন শেষে মুখ্যমন্ত্রী সহ অতিথিরা মেলা প্রাঙ্গণের কয়েকটি স্টল পরিদর্শন করেন।এ দিন মুখ্যমন্ত্রী ডা. সাহা সাংবাদিকদের দ্বারা পরিচালিত এগজিবিশন অ্যান্ড ফটো গ্যালারি স্টলেরও ফিতা কেটে উন্মোচন করেন।এই ফটো গ্যালারি স্টলে সাংবাদিকদের তোলা বেশ কিছু ব্যতিক্রমী ও চিত্তাকর্ষক আলোকচিত্র স্থান পেয়েছে।মুখ্যমন্ত্রী সহ অতিথিরা স্টলটি ঘুরে দেখেন।মুখ্যমন্ত্রী এই গ্যালারি থেকে স্থানীয় তিন সাংবাদিকের তোলা দুটি আলোকচিত্র ব্যক্তিগত
সংগ্রহের জন্য ক্রয় করে নেন।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.