হাসপাতালের কাউন্টারে সস্তা জনঔষধির ওষুধ সংকট!!

 হাসপাতালের কাউন্টারে সস্তা জনঔষধির ওষুধ সংকট!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-বাজারে শুধু নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্যই আকাশছোঁয়া নয়,বাজারে ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রীর মূল্যও ক্রমেই লাফিয়ে লাফিয়ে কেবল বাড়ছেই। রোগীর ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রীর মূল্য এতোটাই বৃদ্ধি পেয়েছে যে গরিব,সাধারণ ও নিম্ন মধ্যবিত্তের পক্ষে চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন হাতে নিয়ে ওষুধের দোকানে গিয়ে ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী কিনে আনতে ক্রয় ক্ষমতা হারিয়ে ফেলছেন।এই অবস্থায় হাসপাতালে গিয়ে রোগী নিয়ে রোগীকে সুস্থ করে তুলতে ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী ওষুধের দোকান থেকে কিনে আনা রোগীর আত্মীয়ের কাছে দুষ্কর হয়ে দাঁড়িয়েছে। ওষুধের দুর্মূল্যের কারণে হাসপাতালে রোগী নিয়ে চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশনের ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী কিনতে অসহায় গরিব ও সাধারণ রোজগারের পরিবারকে কোনওভাবে ধারদেনা করে অতি কষ্টে কিনতে হচ্ছে।ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রীর মূল্য লাগামছাড়া বৃদ্ধি পাওয়ায় মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে কেন্দ্রীয় সরকারের নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ উঠেছে।ওষুধের মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে কেন্দ্রীয় সরকার ঠুটো জগন্নাথের ভূমিকা পালন করলেও সরকারী হাসপাতালগুলিতে রোগীরা যাতে কম মূল্যে ভর্তুকী মূল্যে ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী নেওয়ার সুবিধা পান সেই ব্যবস্থা রাজ্য সরকার না করায় রোগী ও রোগীর আত্মীয়স্বজনের দুর্ভোগ ও অসন্তোষ চরমে উঠেছে।
কেন্দ্রীয় সরকার মানুষের করের কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে সস্তায় ও কমমূল্যে ভালো গুণগত মানের জেনেরিক তথা জনঔষধির ওষুধ ব্যবহার করার হ জন্য সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়ে ও নানাভাবে প্রচারে ঢেউ তুললেও ত্রিপুরা ন রাজ্যের রোগীরা সেই সুবিধা থেকেও চরম বঞ্চিত।এমনই সবসময় অভিযোগ করছেন হাসপাতালে গিয়ে রোগী ও রোগীর আত্মীয়স্বজন। রাজ্যের প্রধান রেফারেল হাসপাতাল জিবিতে নামকা ওয়াস্তে রোগীর চোখের আড়ালে জনঔষধি তথা জেনেরিক মেডিসিনের একটি কাউন্টার রয়েছে। জিবি হাসপাতালে অত্যন্ত – ছোট পরিসরে কাউন্টারটি এমন জায়গায় রয়েছে যে রোগীর পক্ষে সেই কাউন্টারের দেখা পাওয়া দুষ্কর হয়ে উঠেছে।চিকিৎসক যদি প্রেসক্রিপশনে জেনেরিক মেডিসিন লিখে দেন তাহলে কাউন্টার খোঁজতে গিয়ে রোগীকে প্রচণ্ড বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে।কাউন্টার খুঁজে পাওয়া গেলেও চিকিৎসকেরা প্রেসক্রিপশনে যদি ওষুধের ৫টি আইটেমের নাম লেখা থাকে তাহলে কাউন্টারে গিয়ে হয় কোনও ওষুধ মিলছে না নতুবা মিললেও রোগীর কপাল ভালো থাকলে ৫টি আইটেমের মধ্যে ১টি আইটেম মিলতে পারে।ফলে কেন্দ্রীয় সরকারের সস্তায় জেনেরিক ওষুধের সুবিধা থেকে জিবি তথা রাজ্যের রোগীরা বিস্ময়করভাবে দিনের পর দিন বঞ্চিত হচ্ছেন।জিবি হাসপাতালে রোগী কল্যাণ সমিতির তরফে ভর্তুকীমূল্যে ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রীর সুবিধা যাতে রোগীরা পান সে জন্য একটি ওষুধের দোকান চালু করা হয়।কিন্তু এই ক্ষেত্রেও রোগীদের নিত্যদিনের অভিযোগ প্রেসক্রিপশনের অর্ধেক ওষুধও মিলছে না। এমনকী প্রেসক্রিপশনের সত্তর ভাগ ওষুধ আবার কোনও প্রেসক্রিপশনের কোনও ওষুধই মিলছে না বলে রোগীর আত্মীয় ও রোগীরাও সেই অভিযোগ করছেন সবসময়ই।কেন হাসপাতালের জেনেরিক মেডিসিন কাউন্টারে ও রোগী কল্যাণ সমিতির পরিচালিত ওষুধ কাউন্টারে রোগীরা প্রেসক্রিপশন হাতে নিয়ে গিয়ে ওষুধ কাউন্টারে ওষুধ সংকটে সস্তায় ওষুধ নিতে পারছেন সেই বিষয়টি দেখার বা সুরাহা করার স্বাস্থ্য দপ্তর ও হাসপাতালের যেন কেউ নেই।জেনেরিক মেডিসিন সরবরাহ করার দায়িত্ব হলো রাজ্য সরকারের অধিনস্ত বা আন্ডারটেকিং কোঅপারেটিভ- যাকে মার্কফেড বলা হয় সেই সংস্থার।এই সংস্থার চেয়ারম্যান অভিজিৎ দেব-কে সোমবার রাতে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে জানান দিল্লীতে কেন্দ্রীয় সরকারের সংশ্লিষ্ট এজেন্সিকে টাকা পাঠিয়ে বারবার চাহিদা মতো ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী পাঠানোর জন্য বলা হলেও সেই সংস্থা কোনও কর্ণপাত করছে না।সেই কারণে হাসপাতালগুলির জেনেরিক মেডিসিন কাউন্টারে রোগীর চাহিদামতো ওষুধ মজুত রাখা যাচ্ছে না বলেও শ্রীদেব জানান।তিনি বলে, চেষ্টা চলছে দিল্লী থেকে চাহিদামতো যাতে ওষুধ আনা যায়।এমন ৮০টি ওষুধের আইটেম কাউন্টারে আছে বলেও তিনি দাবি করেন।
এদিকে অভিযোগ উঠেছে, মার্কফেডের এসব পরিকাঠামো আছে কিনা তা নিয়েও।এদিকে,রাজ্য সরকারও গুরুত্ব দিয়ে দিল্লী থেকে জেনেরিক মেডিসিন রোগীর চাহিদামতো কীভাবে আনা যায় সে বিষয়ে কোনও গ্রহণযোগ্য উদ্যোগ নিচ্ছে না বলেও অভিযোগ।এদিকে, আরও অভিযোগ হাসপাতালের অধিকাংশ চিকিৎসকও জেনেরিক মেডিসিন প্রেসক্রিপশনে লিখছে না। দামি ব্র্যান্ডের ওষুধ রোগীর প্রেসক্রিপশনে লিখে দিচ্ছেন।শুধু জিবি হাসপাতালই নয়, আইজিএম, টিএমসি সহ রাজ্যের হাসপাতালগুলির ওষুধ কাউন্টারে জেনেরিক মেডিসিনের চরম সংকট চলছে।এদিকে, আগরতলা রিজিওন্যাল ক্যান্সার হাসপাতালে বিস্ময়করভাবেই এখন পর্যন্ত জেনেরিক মেডিসিনের কোনও কাউন্টার চালু করা হয়নি। রাজ্য সরকার স্বাস্থ্য দপ্তর ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় রোগীরা ক্ষোভে ফুঁসছেন।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.