হাসপাতালে বিনামূল্যের ওষুধের টান, বিপাকে পড়ছেন রোগীরা!!
অনলাইন প্রতিনিধি :- রাজ্যের প্রধান দুই সরকারী রেফারেল হাসপাতাল জিবি এবং আইজিএমে রোগীরা এখনও বিনা মুল্যে প্রেসক্রিপশনের ওষুধ পাচ্ছেন না। রোগীর জন্য পকেটের টাকা খরচ করে রোগীর আত্মীয়রা রোগীকে সুস্থ করে তুলতে ওষুধের দোকান থেকে সিংহভাগ ওষুধ কিনে আনতে হচ্ছে। তাতে সরকারী হাসপাতালের রোগীর বহির্বিভাগ (আউট ডোর) ও অন্তর্বিভাগে (ইনডোের) রোগী নিয়ে চিকিৎসা করাতে এসে চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশনের ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী কিনতে গিয়ে পকেটে টান পড়ায় প্রচণ্ড বিপাকে পড়ছেন। জিবি হাসপাতালে রোগী কল্যাণ সমিতির ব্যবস্থাপনায় হাসপাতালে রোগীদের প্রেসক্রিপশনের ওষুধপত্র কম পয়সায় কিনার জন্য হাসপাতালে একটি বেসরকারী সংস্থাকে দিয়ে ওষুধের দোকান তথা ফার্মেসি চালু করা হলেও সেই ফার্মেসিতে প্রেসক্রিপশনের ৬০- ৬৫ শতাংশ ওষুধপত্রই মিলছে না। হাসপাতালে বেসরকারী সংস্থার ফার্মেসি থেকে ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী নিলে ৩৩ শতাংশ টাকা ভর্তুকি দেওয়ার শর্ত নিয়ে ফার্মেসি চালু করাহয়েছিল। গত এক বছর আগে এই ফার্মেসি চালু হয়। দরপত্রে শর্ত ছিল রোগীরা যাতে প্রেসক্রিপশনের সব ওষুধপত্র ফার্মেসি থেকে নিতে পারেন। কলকাতায় এই বেসরকারী ফার্মেসি চালুর সময় দরপত্র ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। কিন্তু ফার্মেসি চালু হলেও রোগীরা প্রেসক্রিপশনের সব ওষুধপত্র ও চিকিৎসা সামগ্রী না পেয়ে পকেটের টাকা খরচ করে হাসপাতালের বাইরে ওষুধের দোকান থেকে কিনে আনতে হচ্ছে। আয়ুষ্মান, বিপিএল, অন্ত্যেদ্বয়, অন্নপূর্ণা এনএফ এসএ তথা প্রায়োরিটি গ্রুপের কার্ড হোল্ডার বেনিফিসিয়ারিরা তাতে পড়েছেন সবচেয়ে বেশি বিপাকে। জিবির রোগী কল্যাণ সমিতির ফার্মেসিতে প্রেসক্রিপশনের ৬০-৬৫ শতাংশ ওষুধ ও চিকিৎসাসামগ্রী না পেয়ে হাসপাতালের বাইরে ওষুধের দোকান থেকে পকেটের টাকা খরচ করে কিনে আনলেও এই টাকা আর ফেরতও দেওয়া হচ্ছে না। ফলে গরিব রোগীরা ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী কিনতে গিয়ে পকেটে টান পড়ায় হাসপাতালে রোগীকে সুস্থ করে তুলতে গিয়ে প্রচণ্ড দুর্ভোগে পড়ছেন। আয়ুস্মান, বিপিএল, অন্ত্যেদ্বয়, অন্নপূর্ণা, প্রয়োরটি গ্রুপ ইত্যাদি ক্যাটাগরির রোগী ছাড়াও এপিএল তথা সাধারণ উপার্জনশীল পরিবারের রোগীরাও এই অবস্থায় রোগী নিয়ে সরকারী হাসপাতালে ওষুধপত্র ও চিকিৎসা সামগ্রী কিনতে গিয়েও পকেটে টান পড়ায় প্রচণ্ড বিপাকে পড়ছেন। যদিও স্বাস্থ্য দপ্তর হাসপাতাল থেকে রোগীরা যাতে বিনামূল্যে ওষুধপত্র ও চিকিৎসা সামগ্রী পেয়ে যায় তার জন্য প্রতি বছরই মোটা অঙ্কের বাজেট রেখেছে বলে রাজ্য সরকার ও স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে জানানো হয়। অথচ রোগীরা হাসপাতালে থেকে প্রেসক্রিপশনের সিংহভাগ ওষুধপত্র ও চিকিৎসা সামগ্রী সবসময়ই পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেন। জিবি হাসপাতালে জেনারিক মেডিসিনের সস্তা মূল্যে একটি কাউন্টার চাল থাকলেও তাতে রোগীরা প্রেসক্রিপশনের ৯০ শতাংশ ওষুধ পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ। জনওষুধি তথা জেনেরিক মেডিসিন কাউন্টারটি চালু রেখে কি লাভ তা নিয়ে রোগীরা প্রশ্ন তোলেছেন। হাসপাতালে কাউন্টারটি এমন জায়গায় রয়েছে রোগীরা সেই কাউন্টারটি খোঁজ পেতেও প্রচন্ড বেগ পেতে হচ্ছে। রোগীদের চোখের আড়ালে রয়েছে জিবির জেনারিক মেডিসিন কাউন্টার। রাজ্যের অন্যান্য হাসপাতালগুলিতেও একই দশা বলেও জানা গেছে। এদিকে আইজিএম হাসপাতালেও রোগীরা প্রেসক্রিপশনের সিংহভাগ ওষুধ বিনামূল্যে পাচ্ছে না বলে রোগীরও রোগীর আত্মীয় অভিযোগ। হাসপাতালের বাইরে ওষুধের দোকান থেকে প্রেসক্রিপশনের সিংহভাগ ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী কিনে আনছেন রোগীরা পকেটেরে টাকা খরচ করে। আইজিএমে আবার রোগী কল্যাণ সমিতির ব্যবস্থাপনায় বেসরকারী ওষুধ ফার্মেসি চালু নেই। তাতেও রোগীরা পড়েছেন আরও বিপাকে। হাসপাতালে সস্তায় ওষুধ পাওয়ায় জন্য একটি জেনেরিক মেডিসিন কাউন্টার থাকলেও তাতে প্রেসক্রিপশনের সিংহভাগ ওষুধপত্র মিলছে না বলে অভিযোগ। আইজিএম এবং জিবি হাসপাতালের জেনারিক মেডিসিন কাউন্টার আবার হাসপাতালের বহির্বিভাগ চালু থাকার সময় পর্যন্ত খোলা থাকে। সকাল ৯ থেকে বিকাল ৪ টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত। সরকারী ছুটির দিনে জেনারিক মেডিসিন কাউন্টার বন্ধ থাকছে। তাতেও রোগীরা পড়েছেন সমস্যায়। মার্কফেডের তরফে হাসপাতালে জেনারিক মেডিসিন কাউন্টার পরিচালনা করা হচ্ছে।