কেন্দ্রীয় সরকারের ত্রি-ভাষা নীতিকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক উত্তাপ আবারো জোরালো হচ্ছে। সম্প্রতি তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন প্রধানমন্ত্রীকে লেখা এক চিঠিতে শিক্ষাখাতে আটকে থাকা বরাদ্দ মুক্ত করার আবেদন জানিয়ে বলেছেন,কেন্দ্রের তিন ভাষা নীতির বিরোধিতা করে জাতীয় শিক্ষানীতি বলবৎ করেনি তামিলনাডু।আর সে কারণেই সমগ্র শিক্ষা অভিযানের খাতে কয়েক হাজার কোটি টাকা কেন্দ্র আটকে রেখেছে।
এতটুকু অবধি কেন্দ্র বনাম তামিলনাডু সরকারের অভিযোগ ঠিক ছিল।কিন্তু অবস্থা ভিন্ন খাতে মোড় নেয়, কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী যখন দাবি করেন তিন-ভাষা নীতি নিয়ে রাজনীতিতে নেমেছেন স্ট্যালিন।এরপরই পরিস্থিতি উত্তাল রূপ নেয়।স্ট্যালিন সরাসরি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন,মৌচাকে ঢিল ছুড়বেন না, তামিলদের লড়াকু মনকে জাগ্রত করতে যাবেন না।তাহলে পরিণাম বীভৎস হবে। স্ট্যালিনের এই হুমকির পরই আগুনে ঘৃতাহুতি পড়ে।তামিলনাড়ু প্রদেশ বিজেপি ‘গেট আউট স্ট্যালিন’কর্মসূচি নাম দিয়ে পথে নামে।অপরদিকে ডিএমকের পক্ষে উদয়নিধি হুশিয়ারি দিয়েছেন,তামিল জনতার অধিকারে যদি হাত পড়ে, তাহলে তামিলনাডুতে ‘গেট আউট মোদি’ কর্মসূচি শুরু হবে। তাৎপর্যপূর্ণ হলো, ভাষা ও রাজনীতির এই লড়াইয়ে স্ট্যালিনের পাশে দাঁড়িয়েছে তামিলনাড়ুর প্রধান বিরোধী দল এডিএমকে।যেটা বিজেপির জন্য সুখের খবর নয়।
আসলে ভারতের ভাষাগত বৈচিত্র সব সময়ই তার শিক্ষানীতি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে।ভারতের শিক্ষাক্ষেত্রে দীর্ঘস্থায়ী যতগুলি বিতর্ক রয়েছে তার মধ্যে ত্রি-ভাষা সূত্র একটি অন্যতম বিতর্ক।বিশেষ করে তামিলনাডুর মতো রাজ্য ঐতিহাসিক ভাবে প্রথম থেকেই এই নীতির বিরোধিতা করে আসছে। ১৯৬৮ সালের জাতীয় শিক্ষানীতিতে প্রথম এই তিন ভাষার সূত্র চালু করা হয়েছিল।এতে অ-হিন্দিভাষী রাজ্যগুলিতে শিক্ষার্থীদেরকে তাদের ভাষাগুলোর মধ্যে একটি ভাষাকে হিন্দি হিসাবে শেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, আর এতেই প্রতিবাদে ফেটে পরে তামিলনাড়ু। তারা কট্টর হিন্দি বিরোধিতার নীতি গ্রহণ করে নিজেরা দ্বি-ভাষা নীতি গ্রহণ করতে শুরু করে। যে কারণে তাদের সরকারী স্কুলগুলিতে কেবল তামিল এবং ইংরেজি ভাষাই পড়ানো হয়। তামিলনাড়ু ধারাবাহিকভাবেই যুক্তি দিয়ে এসেছে যে, শিক্ষার্থীদেরকে হিন্দি শিখতে বাধ্য করার অর্থই হোল তামিলকে, যা একটি সমৃদ্ধ সাহিত্যিক ঐতিহ্যের অধিকারী একটি ধ্রুপদী ভাষা। তামিলনাড়ু হিন্দি ভাষা চাপিয়ে দেওয়াকে তার নিজের সাংস্কৃতিক এবং ভাষাগত পরিচয়ের জন্য হুমকি হিসাবেই দেখে আসছে। রাজ্যের দলমত নির্বিশেষে প্রায় বেশির ভাগ সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ বিশ্বাস করেন যে, হিন্দী শেখার কোনও অতিরিক্ত সুবিধা নেই। কারণটা হলো ইংরেজি এরই মধ্যে ব্যবসা, প্রযুক্তি, চাকরি এবং বিশ্বব্যাপী যোগাযোগের ভাষা হিসাবে কাজ করছে। যদিও ২০২০ সালের নতুন জাতীয় শিক্ষানীতিতে হিন্দি চাপিয়ে না দেওয়ার দাবি করা হলেও তামিলনাড়ুর মানুষ বিশ্বাস করেন ত্রিভাষা সূত্রটি রাজ্যগুলোকে হিন্দি চালু করা জন্যই পরোক্ষ একটা চাপ। প্রসঙ্গত তামিলনাড়ু প্রথম হিন্দি বিরোধী বড় আন্দোলন ১৯৩৭ সালে সংঘটিত হয়েছিল যখন চক্রবর্তী রাজাগোপালাচারীর নেতৃত্বে প্রাদেশিক সরকার স্কুলে স্কুলে হিন্দি বাধ্যতামূলক করার চেষ্টা করে। এই প্রতিবাদে বিক্ষোভ, উত্তাল, রক্তক্ষয়, মৃত্যু কিছুই বাদ যায়নি তামিলনাডুতে। ৭ দশক বাদে নতুন করে আবার স্ট্যালিনের অভিযোগ এবং পাল্টা ‘গেট আউট স্ট্যালিন’ প্রচার নিশ্চিতভাবেই ভাষা বনাম রাজনীতির উত্তাপকে বড় দ্রুত ভিন্ন খাতে ঠেলে দিতে চলেছে। তামিলরা ভাষার জন্য যে প্রাণ দিয়েছেন, সেই আবেগ ও সংবেদনশীলতাকে যথাযোগ্য সম্মান প্রদর্শন করেই বলা যায়, হিন্দির প্রতিপালনের লক্ষ্যে জাতীয় শিক্ষানীতির তিন ভাষা মানা না হলে বরাদ্দ আটকে রাখার ব্ল্যাকমেল যা স্ট্যালিনের দৃষ্টিতে রাজনীতি ছাড়া কিছুই নয়, তাহলে অবশ্যই এই অভিযোগের যথার্থতা খুঁজে দেখার দায়িত্বে কেন্দ্র অস্বীকার করতে পারে না।
শুক্রবার গভীর রাতে অমৃতসরের খান্ডওয়ালার ঠাকুরদ্বারা মন্দিরের বাইরে বিস্ফোরণ ঘটে। জানা যায়, দু'জন বাইক আরোহী…
ধর্ষণ নারী নির্যাতন লইয়া এই উপমহাদেশে অধিকাংশ দেশে একই অবস্থানে চলিয়া যায় দেশের শাসক। একই…
অনলাইন প্রতিনিধি ;-রাজ্যের বর্তমানবিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট সরকার সংবাদমাধ্যম ও সাংবাদিক বান্ধব বলে মুখে মুখে প্রচার…
বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রশাসন চলিতেছে। একটি গণ অভ্যুত্থানের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় সেই দেশে…
অনলাইন প্রতিনিধি :-আবারও ক্ষতি হলো পাইপলাইন গ্যাসের পরিবহণ ও সরবরাহ ব্যবস্থার।আবারও বিপর্যয় ঘটলো আগরতলায়।বিপাকে পড়লো…
অনলাইন প্রতিনিধি :-মণিপুরে বিরাট প্রতারণা। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ছেলে সেজে বিধায়কদের সাথে প্রতারণার ফাঁদ।…