হিন্দি ও দেবনাগরী, অমিত শাহের বক্তব্যে ককবরকভাষীদের অস্বস্তি।
দৈনিক সংবাদ অনলাইনঃ ৫৬ টি সংগঠনের ঐক্য সংগঠনের তরফে শুক্রবার ককবরকের জন্য রোমান লিপির দাবি সামনে রেখে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বক্তব্যে তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছে । আগরতলা প্রেস ক্লাবে আহুত সাংবাদিক সম্মেলনে ঐক্য সংগঠন আরএসকেসির তরফে বলা হয়েছে , উত্তরপূর্বের সব রাজ্যে হিন্দি ভাষা অবশ্য পাঠ্য করার ঘোষণার পাশাপাশি লিপিহীন ভাষার লোকদের দেবনাগরী লিপি নেওয়ার কথা বলেছেন , যা গভীর উদ্বেগের ।
আরসিকেএস হিন্দি বা দেবনাগরীর বিরুদ্ধে নয় । বরং ছেলেমেয়েরা সিবিএসই , আইসিএসসিতে এই ভাষা পড়ছে । ত্রিপুরায় দুটি সরকারী ভাষা ককবরক এবং বাংলা । ককবরকভাষী ছাত্রছাত্রীরা এই দুটি ভাষায় পঠনপাঠনের পাশাপাশি ইংরেজিও পড়ে থাকে । ইংরেজি মাধ্যমে তো পড়তেই হয় । এবার যদি হিন্দিও বাধ্যতামূলক হয় তাহলে হয়তো তাদের নিজ মাতৃভাষাকেই ত্যাগ করতে হতে পারে । কেন্দ্র রাজ্য সম্পর্কে ভাষা রাজ্যের বিষয় । আরএসকেসি মনে করে উত্তরপূর্বে হিন্দি বাধ্যতামূলক করার অর্থ হবে শিশুর সাংবিধানিক অধিকার অর্থাৎ মাতৃভাষার শিক্ষা গ্রহণকে অস্বীকার করা । ত্রিপুরার সরকারীভাষা ককবরক ইউনেস্কো ঘোষিত বিলুপ্তপ্রায় ভাষাগুলির একটি । এই ভাষার মানুষ আসাম , মিজোরামেও বসবাস করেন । দেশের বাইরে বাংলাদেশেও তাদের বসবাস ।
বাংলাদেশে রোমান হরফেই ককবরক পড়ানো হয় । ত্রিপুরা , আসাম , মিজোরাম সর্বত্র এই ভাষার জন্য রোমান লিপির দাবি রয়েছে । আশ্চর্যের বিষয় হলো , এই লিপিহীন মানুষগুলির ভাষা সুরক্ষায় কেন্দ্রীয় সরকার কোনও আগ্রহ দেখাচ্ছে না , তাদের আগ্রহ দেবনাগরী চাপানোয় । ত্রিপুরায় ককবরকের জন্য রোমান লিপির কথা বলেছে শ্যামাচরণ ত্রিপুরা কমিটি এবং পবিত্র সরকার ভাষা কমিশন । সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তারা জানিয়েছেন , আরএসকেসি কোনওভাবেই দেবনাগরী লিপি চাপিয়ে দেওয়া মেনে নেবে না । ককবরকে লিপি চাপানো হলে বিষয়টি অতি স্পর্শকাতর হয়ে উঠবে । শচীন দেববর্মণ , আর ডি বর্মণদের পরম্পরার কথা স্মরণ করিয়ে বক্তারা বলেন , মূল নিবাসীদের নিজ ভাষার লিপি পছন্দের অধিকার রয়েছে । তাদের উপর লিপি চাপানোর কোনও অধিকার কেন্দ্রীয় সরকারের নেই । হিন্দি ভাষাকে অবশ্য পাঠ্য করা কিংবা দেবনাগরী লিপি চাপানো কোনওভাবে মেনে নেবে না আরএসকেসি ।
সাংবাদিক সম্মেলনে আরএসকেসি ( রোমান স্ক্রিপ্ট ফর ককবরক চবা ) এর চেয়ারম্যান , ভাইস চেয়ারম্যান যথাক্রমে বিকাশরাই দেববর্মা , চন্দ্রকান্ত মুড়াসিং , টিএসএফের বিশু কুমার দেববর্মা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন ।