হিমাচলে সুখবিন্দর মুখ্যমন্ত্রী
পরিবারতন্ত্র ইস্যুতে বিজেপিকে সম্পূর্ণ ইস্যুহীন করে দিতে এবার হিমাচল প্রদেশেও বড়সড় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করল কংগ্রেস। সব জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে হিমাচল প্রদেশে বিজেপি ভবিষ্যতে যাতে পরিবারতন্ত্র নিয়ে কোনও রাজনৈতিক আক্রমণ করতে না পারে, সেই লক্ষ্য নিয়ে, সুখবিন্দর সুখকে করা হলো হিমাচলের মুখ্যমন্ত্রী। কংগ্রেস পরিষদীয় দলের বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রয়াত মহারাজা বীরভদ্র সিং ছিলেন কংগ্রেসের দীর্ঘকালের একচ্ছত্র নেতা এবং মুখ্যমন্ত্রীও। তার স্ত্রী প্রতিভা সিং হিমাচল প্রদেশের কংগ্রেস সরকারের মুখ্যমন্ত্রী হবেন বলে জানা যাচ্ছিল। তিনি নিজেই হিমাচলে কংগ্রেসের জয়ের পর পরোক্ষে বারবার উল্লেখ করেন। তিনি স্পষ্টই হাইকমাণ্ডের উপর চাপ সৃষ্টি করে বিবৃতি দিয়ে বলেন যে, আমাকে স্বয়ং সোনিয়া গান্ধী ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বলেছিলেন যে, আমার মতো করেই যেন আমরা নির্বাচনে লড়াই করি। আর সমস্ত শক্তি নিয়ে যেন ঝাঁপিয়ে পড়ি সকলে। সেটাই করেছি আমরা। সেই কারণেই এই জয় এসেছে। এখন স্বাভাবিকভাবেই আমাদের কর্মী সমর্থক ও বিধায়করা চাইবেন যে, কংগ্রেস হাইকমাণ্ডও তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করুক। প্রতিভা সিং-এর প্রকাশ্য দাবি নিয়ে যথেষ্ট অস্বস্তিতে পড়ে কংগ্রেস।কিন্তু এরপরই কংগ্রেস যখন সিমলায় পাঠায় দলের তিনজনের প্রতিনিধিকে, তার বিধায়কদের সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হন যে, প্রতিভা সিং এর পরিবর্তে দলের প্রচার কমিটির চেয়ারম্যানকেই বরং মুখ্যমন্ত্রী পদে বসানো উচিত। প্রথমত, তার পিছনে বিধায়কদের সমর্থন রয়েছে। আর দ্বিতীয়ত, পরিবারতন্ত্রের অভিযোগ থেকে হিমাচলকে মুক্ত করা যাবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি হিমাচল ও গুজরাটের ফলপ্রকাশের পর দিল্লীতে দলের সদর দপ্তরে কটাক্ষ করেছিলেন পরিবারতন্ত্র নিয়ে। কংগ্রেসের অন্দরে পরিবারতন্ত্র যে ধীরে ধীরে গান্ধী পরিবার অবলুপ্ত করার চেষ্ট করছে সেই বার্তা দিতে মরিয়া এখন কংগ্রেস। বিশেষ করে হিমাচলে সই যেখানে অন্যতম প্রধান বিজেপি নেতা ও কেন্দ্রীয়
মন্ত্রী আনুরাগ ঠাকুর বিজেপির প্রবীণ নেতা ও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রেমকুমার ধুমলের পুত্র, তখন বিজেপি কীভাবে পরিবারতন্ত্রের অভিযোগ তোলে?এই অভিযোগ এবার করবে কংগ্রেস।সেই রিপোর্ট পেয়েই কংগ্রেস হাইকমাণ্ড সবুজ সংকেত দেয় এবং আজ সিমলায় বিধায়ক দলের বৈঠকের পর ঘোষণা করা হয় যে সুখবিন্দর সুখকেই করা হবে মুখ্যমন্ত্রী। অন্যদিকে, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রতিভা সিংয়ের অনুগামীরা এদিন সেই বেঠক চলাকালীন এবং পরেও প্রবল বিক্ষোভ দেখায় হাইকমাণ্ডের বিরুদ্ধে। কারণ জানাজানি হয়ে যায় আগে থেকে যে, প্রতিভা সিং হচ্ছেন না। তবে সুখবিন্দর সুখকে মুখ্যমন্ত্রী করার পাশাপাশি মণীশ অগ্নিহোত্রীকে করা হয়েছে উপমুখ্যমন্ত্রী। কারণ কাংড়া জেলার এই প্রভাবশালী নেতা ও বিধায়ক খুবই প্রভাবশালী আর কাংড়া জেলা রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই রাজনৈতিক কুশলী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।