হীরার চাদরে মোড়া রহস্যে ঘেরা বুধ, দাবি চিনা বিজ্ঞানীর!!
অনলাইন প্রতিনিধি :-সূর্যের নবগ্রহের ক্ষুদ্রতম গ্রহ বুধ। আয়তনে পৃথিবীর প্রস্থের এক-তৃতীয়াংশের চেয়ে সামান্য বড়।বুধের নিরক্ষীয় ব্যাস প্রায় ৪,৮৮০ কিলোমিটার।আবার বুধের অবস্থান সূর্যের খুব কাছে। সৌরজগতের অন্যতম রহস্যজনক এই গ্রহটি সূর্যের এত কাছে কীভাবে রয়েছে, কীভাবেই বা তার নিজস্ব চৌম্বকীয় ক্ষেত্র রয়েছে, এই সব নিয়ে নিরন্তর গবেষণা চালাচ্ছে নাসা।তার মধ্যেই সামনে এল আশ্চর্য তথ্য, হীরার চাদরে নাকি মুড়ে রয়েছে বুধের মাটি! ঘটনা হলো, বুধ গ্রহটি সম্পর্কে জ্যোতির্বিজ্ঞানের কাছে এখনও খুব বেশি তথ্য নেই। বুধে আজ পর্যন্ত কোনও মহাকাশযান ‘পা’ রাখেনি। ভবিষ্যতেও তেমন সম্ভাবনা নেই। বুধে পৌঁছনো নাকি এমনই দুঃসাধ্য একটি কাজ।
সেই বুধ সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর খোঁজ দিয়েছেন বেজিংয়ের সেন্টার ফর হাই প্রেসার সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি অ্যাডভান্সড রিসার্চের বিজ্ঞানী ইয়াংহো লিন।তার গবেষণাপত্রটি নেচার সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে চিনা বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, বুধের ভূপৃষ্ঠের নিচের স্তরে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে হীরার পুরু আস্তরণ রয়েছে।চিনা বিজ্ঞানীরা বলছেন, বুধ গ্রহ সম্পর্কে ভাল করে বুঝতে বা জরুরি তথ্য পেতে গিয়ে মুখ্য বিষয় হয়ে উঠেছে এই হীরার আস্তরণ। এ সম্পর্কে তথ্য পেলেই গ্রহটি সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানা যাবে, জানা যাবে তার চৌম্বকীয় ক্ষেত্র সম্পর্কে।বুধ গ্রহে প্রচুর পরিমাণে গ্রাফাইট রয়েছে, যা কার্বনেরই অন্য এক রূপ। নাসাও এ কথা নিশ্চিত করেছে। এই নিয়ে একাধিক গবেষণাও চলছে। তেমনই গবেষণা চালাচ্ছিলেন ইয়াংহো লিন।
তাতেই তিনি এমন কিছু তথ্য প্রমাণ পেয়েছেন, যা বুধের হীরক সম্ভারের সম্ভাবনা খুলে দিয়েছে।
বিজ্ঞানী ইয়াংহো জানিয়েছেন, বুধে যে অত্যধিক পরিমাণ কার্বন রয়েছে, তা নিয়ে বরাবরই তার কৌতূহল ছিল। আর পাঁচটা গ্রহের মতোই লাভায় পূর্ণ মহাসাগর ঠান্ডা হয়ে জন্ম হয়েছে বুধের। কিন্তু বুধের ওই মহাসাগর কার্বন এবং সিলিকেট সমৃদ্ধ ছিল বলে জানা যায়। সেই ধাতব উপাদানগুলি জমাট বাঁধে প্রথমে, তার পরে তাকে ঘিরে স্ফটিকের আকারে জমা হয় কার্বনের লাভা। এই কার্বনের লাভা আসলে হীরা ছাড়া কিছুই নয় বলে মনে করছেন বিজ্ঞানী ইয়াংহো।কারণ বুধের মাটির স্তর অনেকটাই বেশি গভীর।
ফলে গ্রহের ভিতরের ও বাইরের তাপমাত্রা এবং বায়ুচাপের মধ্যে বড় ফারাক রয়েছে।এই ফারাকের কারণেই সেখানে স্ফটিকাকারে জমা হওয়া কার্বন আসলে হীরে হওয়ারই কথা। এই তত্ত্বের উপর ভিত্তি করেই শুরু হয় রিসার্চ।
লৌহ, সিলিকা এবং কার্বনের সঙ্গে যোগ করা হয় সালফারও।এর পরে কত্রিম ভাবে ১৯৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা এবং ৭ গিগাপ্যাসক্যাল চাপ সৃষ্টি করা হয়। তাতেই বোঝা যায়, বুধের মাটির তলায় এই অবস্থায় হীরার স্তর হয়ে রয়েছে ১৫ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে।