হৃদরোগ চিকিৎসায় ভরসা যোগাচ্ছে জিবি কার্ডিও বিভাগ!
হৃদরোগের জটিল চিকিৎসায় এজিএমসি এবং জিবি হাসপাতালের কার্ডিও থোরাসিক অ্যাণ্ড ভাসকুলার সার্জারি বিভাগ এখন রাজ্যবাসীর আস্থা ও ভরসার কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। বর্তমানে জিবি হাসপাতালে হৃদরোগীদের জটিল পরীক্ষা ও অস্ত্রোপচার হচ্ছে। ইতিমধ্যে এই বিভাগে এখন পর্যন্ত ২৪টি সফল ওপেন হার্ট সার্জারি সহ ৫৭টি জটিল অস্ত্রোপচার করেছে উক্ত বিভাগের ইনচার্জ বিশেষজ্ঞ কার্ডিও ভাসকুলার সার্জন ডা. কনক নারায়ণ ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে মেডিকেল টিম। সম্প্রতি এই বিভাগে একাধিক হৃদরোগীর জটিল অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়েছে।এর মধ্যে কমলপুর দুর্গা চৌমুহনীর দিলীপ চন্দ্র দাস নামে এক যুবক ছোটবেলায় রিউম্যাটিক ফিভারে ভুগছিলেন। ফলে ধীরে ধীরে তার হার্টের মাইট্রাল ভাল্ব খারাপ হয়ে যায় এবং বুকে ব্যথা ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। ঘন ঘন হার্ট ফেলিওর নিয়ে জিবি হাসপাতালে মেডিসিন বিভাগে ভর্তি থাকেন। এরপর সেখান থেকে তাকে সিটিভিএস বিভাগে পাঠানো হলে তার মাইট্রাল ভাল্ব প্রতিস্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। কার্ডিয়াক সার্জন ডা. কনক নারায়ণ ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে একটি সার্জিক্যাল টিম সম্প্রতি ওপেন হার্ট সার্জারির মাধ্যমে তার মাইট্রাল ভাল্ব প্রতিস্থাপন করেন। বর্তমানে তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনযাপন করছেন। রাণীরবাজারের দুখাই দাসের (৬৫) তিন বছর আগে ডান পায়ে গ্যংগ্রিন হয়ে পচে যাওয়ায় কলকাতায় রেফার হয়ে একটি নামি বেসরকারী হাসপাতালে যান। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। অবশেষে তার ডান পা কেটে বাদ দিতে হয়। ইদানীং তার বাঁ পায়েও ব্লকেজ দেখা দেয়।সিটিভিএস বিভাগে তার রোগ শনাক্তকরণের পর সম্প্রতি ডা. কনক ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে ক্যাথলাব টিম প্রথমে তার বাঁ পায়ের পেরিফেরাল এঞ্জিওপ্লাস্টি করে উপরের ব্লকেজ সারায়। চারদিন পর আবার একই কার্ডিয়াক সার্জারির টিম তার বাঁ পায়ের পেরিফেরাল বাইপাস সার্জারি সফলভাবে সম্পন্ন করে।তাছাড়াও উদয়পুরের দ্বিজেন্দ্র দে নামে (৫৫) ব্যক্তি বেশ কিছুদিন ধরে বুকে ব্যথা ও হার্ট অ্যাটাকে হাসপাতালে মেডিসিন বিভাগে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সিটিভিএস আইআর বিভাগে তার অ্যাঞ্জিওগ্রাম পরীক্ষায় হৃদযন্ত্রে তিনটি ব্লকেজ ধরা পড়ে এবং হার্ট বাইপাস সার্জারি করাতে বলা হয়। কার্ডিয়াক সার্জন ডা. কনক নারায়ণ ভট্টাচার্য ও১২ সদস্যের টিম গত ২ নভেম্বর তার হার্টের বাইপাস সার্জারি করে ব্লকেজ দূর করে।মেলাঘরের জ্যোৎস্না বেগম নামে (৩৫) বছর বয়স্ক এক মহিলা দীর্ঘদিন ধরে হার্টের সমস্যায় ভুগছিলেন। শ্বাসকষ্ট ও হার্ট ফেলিওর নিয়ে সঙ্কটজনক অবস্থায় জিবি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন হন। ইকোকার্ডিওগ্রাম পরীক্ষায় তার হৃদযন্ত্রে একটি বিশাল এট্রিয়াল সেপ্টাল ডিফেক্ট ধরা পড়ে। জরুরি ভিত্তিতে গত ৭ নভেম্বর ২০২২ তার ওপেন হার্ট সার্জারি করা হয় এবং ডিফেক্ট বন্ধ করা হয়। কার্ডিয়াক সার্জিক্যাল টিমে ডা. কনক নারায়ণ ভট্টাচার্য ছাড়াও ছিলেন কার্ডিও ভাসকুলার অ্যানেসথেসিওলজিস্ট ডা. মণিময় দেববর্মা, ডা. জয়দীপ দেবনাথ,পারফিউশনিস্ট সুজন সাহু, ফিজিশিয়ান অ্যাসিস্ট্যান্ট সুদীপ্ত মণ্ডল প্রমুখ।